বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

আওয়ামীলীগে হাইব্রিড খুঁজছে কেন্দ্র

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১  

# দ্বন্দ্বের বিষয়টি এসেছে প্রকাশ্যে


# তথ্য সংগ্রহ করেছে একাধিক সংস্থা


# কি কারণে তারা তথ্য নিচ্ছে তা আমাদের জানানো হয়নি : আবদুল হাই



নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে ‘হাইব্রিড-কাউয়া’ নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। খোদ জেলার শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে এই ‘হাইব্রিড-কাউয়া’ নিয়ে দ্বন্দ্ব এসেছে প্রকাশ্যে। ত্যাগী নেতারা অনুপ্রবেশকারী বা হাইব্রিডদের নিয়ে সর্বদা প্রশ্ন তুললেও একশ্রেণির নেতারা আবার সমালোচিতদের পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন প্রকাশ্যে সভামঞ্চের মাইকে। তা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে চারিদিক থেকেই।

 

তবে, বিতর্কিতরা সমালোচনার ভিরেই আলোচনায় এসেছেন বারংবার। এমনকি কতিপয় নেতাদের পকেট ম্যানেজ করে তারা জেলা, মহানগর ও থানা আওয়ামী লীগে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করতে চাইছেন। এমনকি, অনুপ্রবেশকারীরা এখন ত্যাগীদের চোখ রাঙানি দিয়ে থাকেন বলে প্রায় সময়ই শোনা যায়। এবার সেই ‘হাইব্রিড-কাউয়া’ সনাক্ত করতেই মাঠে কাজ করছে ক্ষমতাসীন দলের তথা সরকারের একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডে জমা দেয়ার কাজ চলমান। ইতিমধ্যেই জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক তথ্য ওই বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রদান করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

 


এদিকে, তথ্য সংগ্রহ করায় আওয়ামী লীগে ঘাপটি মেরে থাকা অনুপ্রবেশকারী তথা হাইব্রিডদের পিলে চমকেছে বলে খোদ আওয়ামী লীগ অঙ্গণে চাউর হচ্ছে। কারণ, জেলা থেকে শুরু করে থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগের গঠিত কমিটিতে হাইব্রিডদের অনুপ্রবেশ রয়েছে বলে সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। বিগত সময়ে বিএনপি-জামায়াত, হাইব্রিড, বা অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গে বেশ কয়েকজন আলোচনায় এসেছেন। তাদের মধ্যে কিছুদিন আগেও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সোনারগাঁ থানা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য আবু জাফর চৌধুরী বীরুকে নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা দেখা গিয়েছিলো নারায়ণগঞ্জে।

 

তিনি ‘স্বাচিপ’ এর কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সরাসরি জেলা  আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হলেও ছাত্রজীবনে শিবির করা ও পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াতের সাথে সখ্যতা রেখেছিলেন বলে একটি লিফলেট সর্বত্র প্রচারিত হয়। এমনকি জেলা পরিষদের সদস্য সোনারগাঁয়ের  মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমও আবু জাফর চৌধুরী বীরুকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। অন্যদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল সেই বীরুর পক্ষ নেন।

 


আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার অভিযোগ, ক্লিন ইমেজ বা আওয়ামী লীগের সিএস.আরএস নিয়ে যার বিরুদ্ধেই প্রশ্ন উঠে, ভিপি বাদল তার পক্ষেই অবস্থান নেন এবং সমালোচিতদের নিয়ে তার পাল্লা ভারি করার চেষ্টা করেন। সদর ও সোনারগাঁয়ের ক্ষেত্রে এমন নজির সবচেয়ে বেশি। যদিও সোনারগাঁয়ে পোড় খাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা, থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও দলটির সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত গতকাল সোনারগাঁ উপজেলায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, সোনারগাঁ আওয়ামী লীগে হাইব্রিড কারা, তাদের মুখোশ খোলা হবে। কারণ, তারাই দলে আসে সুবিধা ভোগের জন্য। আবার বিশৃঙ্খলা ও বিভক্তি তৈরীর নেপথ্যে কাজ করে তারাই। তাদের সনাক্ত করার মাধ্যমে বিতারিত করে ত্যাগী নেতাদের দ্বারা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন তিনি।

 


এদিকে, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য সংগ্রহ করার কারণ কেবল হাইব্রিড বা বিতর্কিতদের সনাক্ত করা নাকি আসন্ন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের উদ্দেশ্যে এই কার্যক্রম, তা হলফ করে বলতে পারেনি নেতৃবৃন্দরা।


এই বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেছেন, ‘আমাদেরকে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির নেতৃবৃন্দদের বিষয়ে তথ্য দিতে বলা হয়েছে। আমরা তথ্য প্রদান করেছি। কিন্তু কি কারণে তারা তথ্য নিচ্ছে তা আমাদের জানানো হয়নি। আমরাও জানতে চাইনি। আর জেলার পাশাপাশি থানা কমিটিগুলোর তালিকাও চাওয়া হয়েছিলো। আমরা তা প্রদান করেছি।’

এই বিভাগের আরো খবর