বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আগে খারাপ লাগলেও এখন হাসি পায়, দয়া হয় : লিপি ওসমান (ভিডিও)

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

 

নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সহধর্মিণী সালমা ওসমান লিপি বলেছেন, আমি অনেক বড় লেভেলে শুনতে পাই, ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আঘাত আবার আসছে। আগেও এসেছে, আবারও আসবে। ষড়যন্ত্র হচ্ছে, চক্রান্ত হচ্ছে। খুব খারাপভাবে হচ্ছে। জনগণ আগে টের পায়না, যখন কালো ঢেউর মতো আছড়ে পড়ে তখন টের পায়। আমিও শুনতে পাই, ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সৎ নিয়্যত থাকলে আল্লাহ রক্ষা করবেন, প্রধানমন্ত্রী  ও দেশকে রক্ষা করবেন।


মঙ্গলবার (ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কর্মহীন মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে লিপি ওসমান আরো বলেন, প্রায়ই আমাদের সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলা হয়। আমি নারায়ণগঞ্জের কথাই যদি বলি, বিভিন্ন লোক বিভিন্ন ধরণের গালিগালাজ করেন, আজেবাজে কথা বলেন, মিথ্যাচার করেন, ভ্রান্তাচার করেন। আগে এসবে খারাপ লাগতো। আগে ভাবতাম, এতো মিথ্যা সহ্য করবো কেন? যেসব মিথ্যা মানুষের মনে খারাপ ধারণা তৈরি করছে সেসব মানতে হবে কেন? আগে রাগ হতো, এখন হয়না, এখন বরংচো হাসি পায়, দয়া হয়। কোরানে উল্লেখ আছে, মিথ্যাচার, অপপ্রচার যার নামে করা হয় তবে যারা এসব করছে তারাই পাপের ভাগীদার হবে। আমরা সৎ নিয়তে মানুষের উপকারে এগিয়ে যাবো। যতই বাধা বিপত্তি আসুক সৎ কাজে থাকলে কেটে যাবে।


লিপি ওসমান আরো বলেন, আল্লাহ আমাদের প্রত্যেককে সৃষ্টি করে ছেড়ে দিয়েছেন, কিন্তু আমাদের কোন ছাড় দেন নাই। ছাড় দিবেনও না। প্রতিটা পদক্ষেপে তিনি প্রত্যেককে এক একরকম করে পরীক্ষা করছেন।


তিনি বলেন, সেলাই মেশিন খুব বড় কিছ না, কিন্তু আপনারা একটু চিন্তা করলেই দেখতে পাবেন, প্রত্যেকটা ক্ষুদ্র জিনিস থেকেই বড় কিছুর সৃষ্টি হয়েছে। একটা ছোট জিনিসকে কেন্দ্র করে তার তার সৎ নিয়ত, উদ্দেশ্য, তার কর্মের গুনকে সাথে নিয়ে আল্লাহ সাহায্য প্রার্থনা করে যারা এগিয়ে গেছে তারা কখনো বিফল হয়নি।
 
তিনি বলেন, যারা সৎ, সৎ নিয়তে থাকে আশেপাশের সবাই তকে ভয় করে, সেই ভয়টা হলো শ্রদ্ধার ভয়। কিন্তু যারা শক্তি দেখায় ক্ষমতা দেখায় তাদেরকেও মানুষ ভয় পায়। সেই ভয়টা হলো ঘৃনার ভয়।


 
তিনি বলেন, আপনারা নিজেরা প্রতিষ্ঠিত হয়ে সরকারকে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করুন। সরকার একা কখনো প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না, জনগণ যদি তাকে না সাহায্য করে। সরকার বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আপনাদের সাহয্য করার চেষ্টা করছে।


 
তিনি বলেন, আপনারা সাবলম্বী হলে আপনাদের টাকাটা আপনাদের স্বামীদের হাতে তুলে দিবেন না। তাদের বিপদে অবশ্যই সাহায্য করবেন, তবে তাদেরকেও স্বাবলম্বী হতে বলবেন। আপনার উপার্জনের টাকাটা আপনার হাতে থাকলে আপনার একটা শক্তি থাকবে। আপনারা দুইজনেই যদি স্বাবলম্বী হন তাহলে আপনাদের সন্তানেরা তা শিখবে। সন্তানেরা শিখে যদি স্বাবলম্বী হয় তাহলে দেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। কেউ বিপদে পড়বে না।


 
সালমা ওসমান লিপি বলেন, করোনা মহামারীর কঠিন সময় আমার মোবাইলে প্রচুর ম্যাসেজ এসেছে। শুধু আর্থিক সহযোগিতার জন্য নয়, মানসিক সহযোগিতার জন্য। আমার মোবাইলে যারা যারা ম্যাসেজ পাঠিয়েছে তাদের একজন লোককেও আমি ফেরত দেইনি। আমরা সাধ্যমতো যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করেছি।


 
তিনি বলেন, আমি যখন থেকেই মানুষের কাছে ভোট চেতে যাই তখন থেকেই মানুষের কাছে আমার একটা দায়বদ্ধতা তৈরী হয়েছে। আমি যখন তাদের কাছে ভোট চাইতে চাই মানুষের কাছে প্রতিজ্ঞা করি, তা রাখতে পারবো কি না, সেটাও আমাকে দেখতে হয়, কাজটা করাও আমার একটা দায়িত্ব। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে জনগণের একটা ছোট্ট অংশ হিসেবেই আমার দায়িত্ব।


 
তিনি বলেন, আমি শুনতে পাই, অনেক বড় বড় লেভেল থেকেই শুনতে পাই, আজকেও শুনেছি, গতকালও শুনেছি যে, ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আঘাত আবার আসছে। আগেও এসেছে আবারও আসবে। জনগণ তখন টের পায়, যখন আঘাতটা এসে আছড়ে পড়ে তার আগে টের পায় না। আমিও সে জনগণেরই একজন। শুনতে পাই, ষড়যন্ত্র হচ্ছে, চক্রান্ত হচ্ছে, কোথায় যে কী হচ্ছে।


 
তিনি বলেন, এখন মনে হয়, ভয় পেয়ে লাভ নাই। কারণ ষড়যন্ত্রই হোক চক্রান্তই হোক, যত বড় কালো ঢেউই হোক, আমি যদি সৎ নিয়তে সৎ বিশ্বাস রেখে আল্লাহর কাছে প্রার্থনাটা শক্তভাবে ধরে রাখি। আল্লাহ আমাকে সেভ করবেন, প্রধানমন্ত্রীকে সেভ করবেন,আমাদের দেশটাকে সেভ করবেন।

 


এ সময় তিনি সবার কাছে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের জন্য দোয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমি দেখতে পাই উনি নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে কি কি স্বপ্ন দেখেন। যেহেতু নিজে দেখতে পাই, ব্যক্তিগতভাবে জানি, আমার জানামতে ওনি নারায়ণগঞ্জকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। এক এক সময় ওনি এক এক স্বপ্ন নিয়ে দৌড়াচ্ছেন। কখনো মেডিকেল কলেজ নিয়ে, কখনো হার্ট ইনস্টিটিউট নিয়ে।


 
তিনি বলেন, ওনারা স্বপ্ন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ হার্ট ফাউন্ডেশনে যেতে যেতে কষ্ট পায়, নারায়ণগঞ্জের বাচ্চারা ঢাকায় গিয়ে মেডিকেলে পড়ে। ওনি নারায়ণগঞ্জে একটি অত্যাধুনিক মেডিকেল গড়তে চান। এটা ওনার স্বপ্ন আপনাদের দোয়া যদি থাকে আল্লাহর সাহায্য যদি থাকে, নিশ্চয়ই ওনি পারবেন।


 
তিনি বলেন, যিনি আমাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, ওনি পুরো নারায়ণগঞ্জেরই উন্নয়ন করতে চান। ওনার কাছে আমি নারায়ণগঞ্জকে ভাগ বাটোয়ারা করতে দেখিনি। এখন বিভিন্ন জেলা থেকেও ওনার কাছে ফোন আসে। ওনার নারায়ণগঞ্জের স্বপ্নটা যেন সফল হয়। ওনি যেন করতে পারেন।

 

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক'র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, ভাইস-চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন আহমেদ, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন প্রমুখ।

এই বিভাগের আরো খবর