বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

আনোয়ার-দিপুর পর সেলিম ওসমানকে সুফিয়ানের পোষ্টার চ্যালেঞ্জ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৩  

 

# জয়গান প্রচার-প্রচারণা করে আমরা অব্যাহত রাখবো : সুফিয়ান
# কেউ মনক্ষুন্ন হলে তাতে আমাদের কিছু যায় আসেনা : এড. দিপু

 

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এবার নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনে নৌকার প্রার্থীর দাবিতে আটঘাট বেধে নেমেছে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। জেলা পরিষদে পুনরায় মূল্যায়িত না হলেও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে শহর-বন্দরে নিজের পোষ্টার সাটিয়েছেন।

 

আর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় কমিটির সদস্য এড. আনিসুর রহমান দিপুও সরকারের নানা উন্নয়ন প্রচারণা দিয়ে পোষ্টার সাটিয়ে একই আসনে নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন। যদিও এই দুইজনের পোষ্টার দেখে বক্তব্যে নিজের আপত্তির কথা জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান। তবে সেলিম ওসমানের কোন কথাকে আমলে না নিয়ে এবার আনোয়ার হোসেন-আনিসুর রহমান দিপুর পর নিজের অবস্থান খুব ভালো করে জানান দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একে এম আবু সুফিয়ান।

 

সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরে সদর-বন্দরের অলিগলিতে এখন সুফিানের পোষ্টারে সয়লাব। একেএম আবু সুফিয়ান ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির সেলিম ওসমানের বিরদ্ধে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ব্যাপক সাড়া তুলেছিলেন। এমনকি উপজেলা নির্বাচনেও তাকে সমীহ করতে হয়েছে অন্যান্য প্রার্থীদেরকে। জাতীয় নির্বাচনের আগে নিজের অবস্থান খুব ভালো করে আবারো জানান দিলেন আবু সুফিয়ান।

 

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমানের পোষ্টার আপত্তি প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান যুগের চিন্তাকে বলেন, আওয়ামীলীগের তৃণমূল কর্মীদের কাজ হলো সরকার ও দলের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মানুষের মাঝে পৌঁছে দেয়া। আওয়ামীলীগ অনেক বড় দল। এখানকার কর্মীরা নিজ দলের উন্নয়ন ফলাও করে প্রচার করবে। এতে কার, কি, কিসে আপত্তি সেগুলো আমাদের আমলে নেয়ার বিষয় নয়।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের চরম শিখড়ে পৌঁছে যাচ্ছে। এসব উন্নয়নের কথা প্রচার করাতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের কোন বাধা নেই। আর এতে অন্য কোন দলের লোকদের গা জ্বালা করলে আমরা তাতে কী করতে পারে। উন্নয়নের জয়গান প্রচার-প্রচারণা করে আমরা অব্যাহত রাখবো।

 

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সাংসদ সেলিম ওসমান ওইসব আওয়ামীলীগ নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়ে পোষ্টারিং না করে তার সাথে বসার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেলিম ওসমানের সেসব কথাকে আমলে না নিয়ে ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সদর-বন্দরে পোষ্টারে সয়লাব করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের অন্যতম সদস্য ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক  সভাপতি এড. আনিসুর রহমান দিপু।

 

বন্দরে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ নেতাদের পোষ্টারিংয়ের দিকে ইঙ্গিত করে সাংসদ সেলিম ওসমান বলেন, ‘আর কিছু দিন পরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই সময়টা যদি আমাকে জনপ্রতনিধিরা সহযোগীতা না করে, তাহলে বন্দরের প্রতিটি মা-বোন ভাইয়ের কাছে সহযোগীতা চেয়ে সময়টা কাটাতে চাই। তারপর আমি চিন্তা করবো, আগামীতে নির্বাচনে আসবো কি, আসবো না। কাউকে যদি আমার থেকেও ভালো মনে হয়, তাহলে আমি তার মনোনয়নে সমর্থনকারী হিসেবে স্বাক্ষর দিবো।

 

তবে, ভালো কিছু করতে হবে। বড় বড় পোস্টার দিয়ে ভোট নিতে পারবেন না। খামাখা পোষ্টার লাগিয়ে নিজের অর্জিত পয়সা নষ্ট করবেন না। অরাজকতা লাগাইয়েন না, পোস্টার লাগাইয়েন না। আসেন আমার সাথে কাজ করেন, আপনি যদি ভালো হন, আপনার নির্বাচনের জন্য আমিই মনোনয়নপত্র আবেদন করবো।’

 

নতুন করে পোষ্টারিং এবং সেলিম ওসমানের আহবানকে আমলে না নেয়ার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় কমিটির সদস্য এড. আনিসুর রহমান দিপু বলেন, পোষ্টারিং করাটা দোষনীয় কোন বিষয় কখনোই নয়। আমরা আমাদের দলীয় আদর্শ, উন্নয়ন প্রচার করবো ব্যানার, ফেস্টুন পোষ্টারিংয়ের মাধ্যমে এটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়। ১৯৭৮ সন থেকেই আমরা সামরিক শাসনের অবসান, খুনীদের বিচার পরবর্তীতে স্বৈরশাসকদের অবসান পোষ্টারিংয়ের মাধ্যমেই আওয়ামীলীগ চেয়েছে, এরপর রাজপথে নেমেছে।

 

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষকে আহবান জানানোর এটি একটি প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই আমরা লিফলেট, পোষ্টারিং, ব্যানার, ফ্যাস্টুনের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে তুলে ধরি। দলের অর্জন সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাই, তুলে ধরি। আর তাতে যদি কেউ মনক্ষুন্ন হয়, তাতে আমাদের কিছু যায় আসেনা। আমরা আমাদের দলীয় প্রধানের নির্দেশেই কর্মীর যে দায়িত্ব তা পালন করতে জনগণের কাছে যাই। আমাদের দলীয় আদর্শ, আমাদের সরকারের উন্নয়নের কর্মকাণ্ড মানুষকে জানান দেই, প্রচার করি। দলের অর্জনসমূহ তুলে ধরি।এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর