শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

আপনারও ১২টা বাজিয়ে দিতে পারি : মেয়র আইভী

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০২৩  



# মানুষ ভয় পেলে হোন্ডাওয়ালাদের ধাওয়া দিতোনা


# বিচার শুরু হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে



নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, এই ১৭ মার্চে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই শিশু দিবসে আমি আমার সরকারের কাছে বলতে চাই দয়া করে নারায়ণগঞ্জে ত্বকী হত্যাসহ সকল হত্যাকান্ডের বিচার করেন। আমাদেরকে মুক্তি দেন। আমরা এই সাম্রাজ্যবাদের হাত থেকে মুক্তি চাই।

 

 

আপনি যে অর্জন করছেন, সারা বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে দাঁড় করাতে চাচ্ছেন এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাচ্ছেন তা শেষ করে দিচ্ছে এমন কতিপয় লোকজন। তাদেরকে আপনি ভালো করে চিনেন এবং জানেন। এই আস্কারা এই সাহস তারা কোত্থেকে পায়, নির্বিচারে মানুষ হত্যার লাইসেন্স তাদের কে দেয়? ভয় দেখিয়ে ভীত করে রাখতে চায়।

 

 

আমার মনে হয়না নারায়ণগঞ্জের মানুষ আর ভয় পায়। যদি ভয় পেত তাহলে এমন হোন্ডাওয়ালারা ধাওয়া দিতোনা। এক দে’ড়শ হোন্ডাওয়ালাকে গুটিকয়েক মানুষ ধাওয়া দিল। কত দূর্বল আপনারা দেখেছেন। যারা অসৎ কাজ করে, অন্যায় কাজ করে, হত্যা করে, জুজুর ভয় দেখাতে চায় তারা দুর্বল কারণ শাসক সবসময় দূর্বল থাকে।

 

 

জনগণের শক্তি সবচেয়ে বড় শক্তি। সকল হত্যার বিচার জনগণ করবে। শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলেই আজ আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। স্বাধীন দেশে আমাদের সন্তানদের হত্যা করা হবে এমন দেশ আমরা চাইনি। একটি দেশে অনেক কিছু হয়। অপরাধ কখনো বেড়ে যায় কখনো কমে। সরকারের দায়িত্ব সেটিকে দমন করা, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

 

 


শুক্রবার (১৭ মার্চ) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আলী আহমেদ চুনকা পৌর পাঠাগারের সামনে ত্বকী হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর উপলক্ষ্যে আয়োজিত চিত্রপটে ত্বকী অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

 


তিনি বলেন, ৭৫ এর হত্যাকাণ্ড করে এই দেশকে নিঃশেষ করে দিতে চেয়েছিল কিন্তু দাবিয়ে রাখতে পারেনি। বিভিন্নভাবে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বের কারণে অনেক পথ অতিক্রম করে পুনারায় ক্ষমতায় এসেছে। জাতির জনকের কন্যাকে জনগন প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছি।

 

 

যতদিন বেঁচে থাকবো আমি আওয়ামীলীগ করবো, জয় বাংলা বলবো জাতির জনকের আদর্শকে অনুসরণ করবো। তবে দলের ভেতর থেকেও অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করবো। সেটা দলের হোক কিংবা দলের বাইরেরই হোক কিংবা যেখানেই হোক।

 

 


মেয়র বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। সেই ভোটের সম্মানে মানুষের জন্য এই শহরে যা করার তাই করবো। ত্বকীকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিরুদ্ধে এই নারায়ণগঞ্জবাসীর সাথে আমি একা আছি, থাকবো। প্রশাসন কি করলো কি করলোনা সেটা এখন আর দেখার বিষয় হয়ে উঠেনা।

 

 

কারণ প্রশাসনের কিই বা ক্ষমতা আছে কিই বা করবে। জনগণের কাছেই সকল ক্ষমতা সকল শক্তি। নারায়ণগঞ্জের মানুষই আমাদের পথ দেখাবে। মানুষকে সাথে নিয়ে এই আন্দোলন আরো বেগবান করতে চাই, শহরবাসীকে জাগাতে চাই সাহস যোগাতে চাই।

 

 


আইভী বলেন, ইতোমধ্যে দেখতে পেয়েছেন বিভিন্ন যায়গায় হোন্ডা বাহিনীকে ধাওয়া দেয়া শুরু হয়েছে। পর পর তিনটা ঘটনা ঘটেছে নদীর ওই পাড়ে। গতকালকেও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সেই ভূমিদস্যুদের হোন্ডা পুড়িয়ে দিয়েছে। অনেকে আবার বড় বড় কথা বলে। কি বলে, শহরে নাকি এখনো বের হতে দেবেনা।

 

 

কত বড় দুঃসাহস হলে খুনিরা খুন করেছে একটি বাচ্চাকে মেরে ফেলেছে তারপরে ওই বাচ্চার পিতা যখন প্রতিবাদ করে তাকে আবার নানাভাবে উত্যক্ত করে। আমরা যারা তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছি তাদের পরিবারকে অত্যাচার করে, তাদেরকেও তারা হুমকি ধামকি দেয়।

 

 


তিনি আরো বলেন, এটা ১৯৮১ বা ৭১ নয়, ২০২৩। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের পরে এখন স্মার্ট বাংলাদেশের কাজ চলছে। সুতরাং ৪০/৫০ বছর যারা এ শহরকে শাসন করছেন এখনো আপনাদের কথা আপনাদের হুমকি-ধমকি মানুষ মেনে নেবে তা হবেনা, হতে পারেনা। কথা বলার আগে ১০ বার চিন্তা করে বলবেন কি বলতে চান।

 

 

আপনার বাচ্চাদের, চ্যালা চামচাদের বলে দেবেন, যখন যা কিছু মন চায় তখন যেন তা না বলে কারণ মানুষেরও ধৈর্য্য আছে। ধৈর্য্যের বাধ ভাঙতে চাইনা। শান্তিপূর্ণভাবে ১০ বছর যাবত এই হত্যাকান্ডের বিচার চাচ্ছি। নারায়ণগঞ্জ শহরের কাজ করছি ১০ বছর যাবত।

 

 

চারটা নির্বাচন করেছি ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়েই। তারপরেও এই শহরে মানুষ ভোট দিয়েছে। একটা বিজয় মিছিলও করিনি। কোন ধরনের অপকর্ম এই শহরে হয়নি এর মানে এই নয় যে আপনাদের কিছু করতে বা বলতে পারবোনা।

 


শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এই মুহুর্ত্বে এখন চাইলে এখন এই শহরের মধ্যে আপনি যেমন হুমকি দেন না এই করে ফেলবেন সেই করে ফেলবেন, আপনারও আমি ১২টা বাজিয়ে দিতে পারি।

 

 

কিন্তু বিশৃঙ্খলা এই শহরে আমি চাইনা। শহরবাসীকে নিয়ে আমি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। বিচার শুরু হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে। এসময় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, ভবানী সংকর রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এন.হুসেইন/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর