বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

আ’লীগের সহযোগিদের এ কেমন হাল ?

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২১  

# মেয়াদোত্তীর্ণ আ’লীগ ও সহযোগি সংগঠন, অদৃশ্য কারণে হচ্ছে না কমিটি


# বুড়োদের নামের পাশে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের টাইটেল, আসছে না নতুন নেতৃত্ব


# নেতায় নেতায় বিভাজন, খন্ডিত তৃণমূল, সাংগঠনিক ভীত হচ্ছে দূর্বল  


 
২০০৮ থেকে ২০২১। দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকলেও নারায়ণগঞ্জে ঘর গুছাতে পারেনি আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনগুলো। জেলা কমিটি থাকলেও ছয়টি পদ পুরনের আগেই মেয়াদ ফুরিয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্নাঙ্গ হলেও দ্বিবার্ষিক হিসেবে ওই কমিটিরও মেয়াদ নেই। তাছাড়া, দীর্ঘ বিলম্বের পর ফতুল্লা ও আড়াইহাজার থানা আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্নাঙ্গ হলেও এখনো ঝুলে আছে সদর, রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ ও বন্দর থানা আওয়ামী লীগের কমিটি।

 

এসব থানা বা উপজেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে আংশিক কমিটি হলেও অদৃশ্য কারণে তা পূর্নাঙ্গ হচ্ছে না। শুধু কী তাই? বিভিন্ন থানার কয়েকটি ওয়ার্ডে সম্মেলনের মাধ্যমে মূলদলের কমিটি হলেও সিংহভাগ ওয়ার্ড কমিটি এখনো হয়নি। তাছাড়া, জেলা, মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য সংগঠনগুলো ‘কিতাবে আছে গোয়ালে নেই’ অবস্থায় রূপ নিয়েছে। এসব কমিটির কোনোটার বয়স দুই দশক হতে চললো। এই দুই দশকেও কমিটি না হাওয়ায় ছাত্রলীগের নেতারা বয়স ভারে ‘আদু ভাই’ উপাধী পেয়েছেন, আর যুবলীগ নেতারা ধাবিত হয়েছেন বার্ধক্যে। তাই বুড়োদের নামের পাশে এখনো লেগে আছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের টাইটেল।

 

তবে, এতোদিনেও জেলা থেকে শুরু করে থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে পরিপূর্ণভাবে কমিটি গুছাতে না পারায় তা নিয়ে তৃণমূলে চলছে সমালোচনা, রয়েছে ক্ষোভ। দ্বিবার্ষিক মেয়াদে এসব কমিটি গঠন হলেও পরবর্তীতে সময় আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সহযোগি সংগঠনের কমিটি ধারাবাহিক ভাবে না হওয়ায় নেতৃত্ব বিকাশেও রয়েছে অন্তরায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘বর্তমানে যারা ছাত্রলীগের কমিটিতে যৌবন পাড় করে দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই যুবলীগ বা মূলদলেও নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা রাখে। কিন্তু কমিটি না হওয়ায় তারা ছাত্রলীগেই আটকে আছেন। একই ভাবে যুবলীগের কমিটিতে থাকা নেতারা বার্ধক্যে উপণিত হলেও কমিটি না হাওয়ায় যুবলীগেও নতুন নেতৃত্ব আসছে না। ধারাবাহিক ভাবে কমিটি হলে নতুন নেতৃত্ব আসার পাশাপাশি সাংগঠনিক গতি আরো বৃদ্ধি পেত। তৃণমূলও সক্রিয় হয়ে উঠতো।’

 

বোদ্ধা মহল বলছেন, দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থেকেও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনগুলো পূর্নাঙ্গ ভাবে গুছিয়ে উঠতে না পারার ব্যর্থতা ভেসে উঠেছে মোটা দাগে। বর্তমানে ক্ষমতায় থাকায় ওই ব্যর্থতার প্রভাব পরিপূর্ণভাবে আঁচ করতে না পারলেও আগামীতে দলীয় আন্দোলণ সংগ্রামে এর মাশুল দিতে হবে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনগুলোকে। জানা গেছে, কেবল ঘর গুছানোর ব্যর্থতাই নয়, রয়েছে নেতায় নেতায় বিভাজন। জেলা থেকে ওয়ার্ড আর মূল দল থেকে সহযোগি সংগঠন, নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব নিয়ে এমন বিভাজন সর্বত্রই দৃশ্যমান। নেতায় নেতায় ভাগ হওয়ায় খন্ডিত হয়েছে তৃণমূল কর্মীরাও। ফলে সাংগঠনিক কর্মসূচিতে এক কাতারে দাঁড়াতে পারছে না নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সহযোগি সংগঠনগুলো। এতে সাংগঠনিক ভীত দূর্বল হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাই এক যুগেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকলেও নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের এমন চিত্র হতাশ করছে পোড় খাওয়া ত্যাগী নেতাদের।


 

এই বিভাগের আরো খবর