আ.লীগের ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম বিএনপির ভাবনা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৮ পিএম

# দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি : গিয়াসউদ্দিন
# নাশকতার রাজনীতির সাথে যুক্ত হতে পারে না : দিপু ভূঁইয়া
# ষড়যন্ত্র এখন আর কোন কাজে আসবে না : এড. সাখাওয়াত
বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ধীরে ধীরে সরকার পতনের আরো বৃহত্তম আন্দোলনের দিকে ঝুঁকছে। আর দফায় দফায় আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের সকল জনগণকে উৎফুল্ল করছে। এমনই সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একের পর এক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। যার কোন গ্রহণযোগ্য নেই বলছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে দফায় দফায় একের পর এক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।
যাকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বেফাঁস বক্তব্য হিসেবে আখ্যা দিয়ে যাচ্ছেন। সেই ধারবাহিকতায় গতকাল সোমবার বিকালে উত্তরার আজমপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে আগামী ৩৬ দিনের মধ্যে অপরাজনীতি, নাশকতা, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়তে আল্টিমেটাম দিলাম। ৩৬ দিনের মধ্যে যদি বিএনপি সংশোধন না হয় তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির অপরাজনীতির কালো হাত ভেঙ্গে দেয়া হবে।
ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, বিএনপি আগুন নিয়ে আসলে হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে, অস্ত্র নিয়ে এলে ভেঙে দেওয়া হবে, যেমন কুকুর তেমন মুগুর। তিনি বলেন, সহিংস-নৈরাজ্যের আন্দোলন থেকে বিএনপি ৩৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়, তারা তো ৩৬ মিনিটও খালেদা জিয়ার জন্য আন্দোলন করতে পারেনি। বিএনপির কোমর ভেঙে হাঁটু সব ভেঙে গেছে গোলাপবাগের কর্মসূচির পর। এখন বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার উপর ভর করেছে। তাই ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম দিলাম, সঠিক পথে আসুন।
যদি তারা সঠিক পথে না আসে তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির কালো হাত ভেঙে দেব। আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ফাইনাল খেলা হবে মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যদি অস্ত্র নিয়ে আসে ওই হাত ভেঙে দিতে হবে, যদি আগুন দিতে আসে ওই হাত পুড়িয়ে দেব। ওবায়দুল কাদেরর এমন বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন যুগের চিন্তাকে বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে দেশের গণতন্ত্রকে হরণ করে রেখেছে যার কারণে দেশের সর্ব পর্যায়ের জনগণ তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে। সেই ধারবাহিকতায় বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপি ইতিমধ্যে দেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া আন্দোলন করছে এমনকি বিএনপির আন্দোলনে ভরসা পেয়ে এখন দেশের সাধারন জনগণ ও বিএনপিকে সমর্থন করে আন্দোলণ সংগ্রামে অংশগ্রহণ করছে।
যার কারণে এখন এই সরকারের নেতাদের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে তারা এটা সহ্য করতে পারছে না। হিংসায় পরে তারা বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রমুলক মামলা দিয়ে বিএনপিকে দমানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনভাবেই বিএনপিকে তারা দমাতে পারছে না, যার কারণে এখন তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই তারা বুঝে ফেলেছে কিছুদিনের মধ্যে তাদের বিদায় হতে হবে সেই লক্ষ্যে নিয়েই এখন তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ও তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করে রাখতে বিএনপির বিরুদ্ধে বক্তব্যে ও বিএনপিকে নাশকতা রাজনীতি বলছে।
বিএনপি একটি শান্তিপূর্ণ দল দেশের জনগণের সাথে সম্পৃক্ত হয়েই তাদের দুঃসময়ে পাশে থেকেই বিএনপি কাজ করে। এই সরকারের এমপি, মন্ত্রীরা এখন যাই বলুক না কেন, যতই তাল বাহানা করুক না কেন তারা আর ক্ষমতায় থাকছে না। এবা দেশের জনগণ তাদের সকল অধিকার ফিরে পেতে চলেছে। যার কারণে আমি বলতে চাই এই সরকারের নেতাকর্মীদের এমন কোন বক্তব্যে নেতাকর্মীদের ও দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু যুগের চিন্তাকে বলেন, বর্তমানে বিএনপি গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলন করে যাচ্ছে যা এই সরকারের এমপি, মন্ত্রীরা মেনে নিতে পারছে না। এছাড়াও বর্তমানে আমাদের আন্দোলন সংগ্রামের গণজোয়ার দেখে তারা ভীত হয়ে পরেছে তাদের নেতাকর্মীরা ভীত হয়ে পরেছে।
সেই কারণে তারা ক্ষমতায় আবার থাকতে তারা বিএনপির উপরে দফায় দফায় হামলা মামলা ও করে যাচ্ছে কিন্তু তাতে ও দমাতে না পেরে তারা এখন বিএনপির উপরে নাশকতা রাজনীতির আখ্যা দিতে চাইছে। কিন্তু বিএনপি দেশের জনগণের দল তারা কখনো নাশকতার রাজনীতির সাথে যুক্ত হতে পারে না। বিএনপি একটি শান্তি প্রিয় দল এই দলের সমর্থন দেশের ১৮ কোটি জনগণ।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান যুগের চিন্তাকে বলেন, গত ১৫ বছর যাবৎ দেশের জনগণকে জিম্মি করে এই সরকার স্বৈরাতন্ত্র কায়েম করেছে, দূর্নীতির একটি সর্বশীর্ষে পরিণত করেছে বাংলাদেশকে। এবার তারা বিএনপিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আবার ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো ভূয়া নির্বাচন দিয়ে তারা ক্ষমতায় আসতে চায়। ওবায়দুল কাদের সাহেব এমন বক্তব্যে আওয়ামী লীগের স্বৈরাতান্ত্রিক প্রকাশ ঘটেছে।
কারণ আওয়ামী লীগ এখন চিন্তা করে যদি বিএনপিকে ধ্বংস করে দিতে পারে তাহলে তাদের আবারো এই স্বৈরাতান্ত্রিক কায়েম করা প্রশস্ত হয়ে যাবে। আমি মনে করি তার এই বক্তব্য সেই চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব উনাকে এখন সারা বাংলাদেশের মানুষ একটি জোকার হিসেবে চিনে উনি বিভিন্ন সময়ে এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে সে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। কিন্তু এখন আর তাদের বক্তব্যে বিভ্রান্ত হয় না। আর কারা মাঠে থাকে কারা আন্দোলন সংগ্রাম করে এটা রাজপথেই প্রমান হবে। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে আমরা প্রতিহত করবো তাদের ষড়যন্ত্র এখন আর কোন কাজে আসবে না।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু যুগের চিন্তাকে বলেন, আওয়ামী লীগের এতো বড় পদে থেকে উনি যে ভাষায় কথা বলছে, এটা একটি রাজনৈতিক ভাষা নয়, এটা একটি সন্ত্রাসীদের ভাষা এবং গডফাদারের ভাষা কারণ আওয়ামী লীগ নিজেরাই একটি সন্ত্রাসী দল। বিএনপি নাশকতার রাজনীতি করে না, নাশকতার রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে। ২০০৬ সালে এই আওয়ামী লীগ লঙ্গি বৈঠা দিয়ে মানুষ মেরে ওয়ান এলিভেন সৃষ্টি করেছিলো যারা তাদের মুখে এই ধরনের কথা শোভা পায় না।
আর ওয়াবাদুল কাদের যে টাইম ফ্রেম দিয়েছে আমি তাকে উদ্দেশ্য করে বলতে চাই আপনি বিএনপিকে টাইমফ্রেম দেওয়ার কে। বিএনপি কখনো সন্ত্রাসের রাজনীতি করে না এবং নাশকতার রাজনীতি করে না। ওবায়দুল কাদের ও তাদের দলের সন্ত্রাসী ইতিহাস রয়েছে। তাদের দলের মধ্যে বেশির ভাগই সন্ত্রাসী এবং গডফাদার, আমরা গণন্ত্রতিক প্রন্থায় রাজপথে আছি রাজপথে থাকবো এমন ওবায়দুল কাদেরের মতো লোকের বক্তব্যে বিএনপির কিছু আসে যায় না। আমি তাকে আরো বলতে চাই তার পদ অনুযায়ী দলকে হুমকি দমকি দেওয়া শোভা পায় না।
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব যুগের চিন্তাকে বলেন, এই ওবায়দুল কাদের কখন কি বলে এটা সে নিজেও জানে না। কিভাবে উনি বলে বিএনপি নাশকতা করছে, নাশকতার রাজনীতির সাথে ও যুক্ত তারা। আমরা বিএনপির নেতৃবৃন্দ আওয়ামী লীগের এমন বেফাঁস মন্তব্যকারী ব্যক্তির কথাই গনি না। এস.এ/জেসি