বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

আশ্বিনে চৈত্র্যের গরম, জনজীবন অতিষ্ঠ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২১  

তীব্র গরমে নেই স্বস্তি, সূর্যের খরতাপে দিশেহারা মানুষ। সূর্য তেঁতে ওঠায় কয়েকদিন ধরেই তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেই প্রখর রোদ আর গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়ছে সূর্যের তাপ। তীব্র গরমে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বেড়েই চলছে তাপমাত্রা। সূর্যের প্রখর তাপ আর ভ্যাপসা গরমে ক্লান্ত নগরজীবন।একদিকে তাপদাহ, অপরদিকে বৃষ্টিহীন দিন-রাত। প্রচন্ড রোদ আর তীব্র গরমে নেই কোথাও স্বস্তি। হঠাৎ করে আশ্বিনের তীব্র গাঁজ্বলা গরমে সবেচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ।

 

গতকাল ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় দিশেহারা মানুষ। নগর -গ্রাম, মাঠঘাট, বাজার, কোথাও স্বন্তি নেই। তীব্র গরমে নানা ধরনের রোগে আক্রন্ত হচ্ছে মানুষ। এ অবস্থায় মানুষের পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে। সেই সাথে হচ্ছে বিভিন্ন রোগ বালাই। ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তিতে থাকতে পারছে না মানুষ। এবারে ভাদ্রতে খুব একটা গরম না পড়লেও আশ্বিনের শুরুতেই অত্যধিক গরম অনুভূত হতে থাকে। যার ধারাবাহিকতা টানা দুই সপ্তাহের বেশীদিন ধরে রয়েছে। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ডায়েরিয়া, জ্বরসহ নানা রোগে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানাগেজে, দেশে মৃদু গরম বইছে। এ গরম আর বেশ কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। মৌসুমী বায়ু যোগ হলেই গরমের দাপট কমে যাবে।

 


আশ্বিনের কাঠফাঁটা রোদে স্বস্তি নেই কোথাও। ঘর থেকে বাইরে  বেরোলেই শরীর ভিজে ঘামে। তাপদাহ শরীরে জ্বালাপোড়া ধরাচ্ছে। গত এক সপ্তাহের বেশি ধরে ৩৭ থেকে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এদিকে শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায়; ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

 


এদিকে নগরীর ফুটপাতের দোকানি ও ভ্রাম্যমাণ হকাররা গরমে কাহিল। দুপুরের আগেই নগরীতে রিকশার সংখ্যাও কিছুটা কম ছিলো। প্রচন্ড গরমে রিকশাচালকদের বেশির ভাগই সকাল থেকে বেলা বারোটা এবং বিকেলে সূর্যের তাপ কমার পর রাত পর্যন্ত রিকশা নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছে। নগরীর চাষাঢ়া, কালীরবাজার, ২নং রেলগেইট, নিতাইগঞ্জ এলাকায় রিকশাভ্যানে পানির ফিল্টার মেশিন বসিয়ে লেবু ও বেলের শরবত এবং আখের রস বিক্রি হচ্ছে। গরমে ক্লান্ত পথচারিরা ৫ থেকে ১০ টাকার বিনিময়ে তৃষ্ণা মেটাতে গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে।

 

এ ছাড়াও নগরীর কনফেকশনারী ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোতে ফ্রিজে রক্ষিত বিভিন্ন কোম্পানীর কোমল পানীয়, আইসক্রীম, দই ও জুসের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। ফার্মেসী ও অন্যান্য মনোহরী দোকানগুলোতে খাবার স্যালাইন দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল, খানপুর ৩০০শয্যা হাসপাতালসহ অন্যান্য প্রাইভেট হাসপাতালে ডায়রিয়ায়, ঠ্রান্ডা, জ্বরের আক্রান্ত রোগী প্রতিদিনই কমবেশি ভর্তি হচ্ছে। এর মধ্যে বয়স্ক ও শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। নগরীর শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চেম্বারে প্রচন্ড গরমের কারণে সর্দি কাশিসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়া শিশুদের নিয়ে অভিভাবকরা চিকিৎসকের শরনাপন্ন হচ্ছেন। যেসব শিশুর অবস্থা জটিল তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ আহমেদ যুগের চিন্তাকে বলেন, যেহেতু কোভিড চলছে এর মধ্যে হঠাৎ করে তীব্র গরম পড়ছে আমরা অহেতু বাইরে ঘুরাফেরা না করি। সবাইকে প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে। যতটুকু পারে বাইরে বের নাহলেই ভালো হয়। আর যারা দিনমুজুর রয়েছে তাদেরকে তো বাইরে কাজ করতেই হবে। ফাঁকে ফাঁেক বেশী বেশী করে পানি পার করতে হবে। আর পারলে একটু লেবু পানি পান করতে পারলে আরও ভালো। এবং অবশ্যই অবশ্যই সবাইকে মাস্ক পড়তে হবে। মাস্ক কোভিড থেকেও বাঁচাবে এবং এখন গরমের যে ভাইরাসজনিত জ্বর রয়েছে সেটা থেকেও রক্ষা করবে।

 

তিনি শিশুদের বিষয়ে বলেন, গরমের ভাইরাস জ্বরে শিশুরাই বেশী আক্রান্ত হচ্ছে । যেহেতু গরম বেশী পড়তাছে তার জন্য শিশুদের পাতলা কাপড়- চোপড় পড়াতে হবে। বেশী বেশী করে পানি পান করাতে হবে। আর জ্বর দেখলেই যেনো প্যারাসিটেমল সিরাপ খাওয়ানো এবং শরীর ভিজা কাপড় দিয়ে মুছেঁ দেই। আর কোনো বাচ্চার যদি ভাইরাস জ্বর, কাঁশি ও ঠাণ্ডা হয় তাহলে তাকে আলাদা রাখা এবং অন্যরাও যেনো আলাদা থাকে। সবাইকে সর্তক ও সচেতন থাকতে হবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর