শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আড়াইহাজারও আজাদে তছনছ

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২ আগস্ট ২০২২  

জাতীয় নির্বাচনের বাকী আরও প্রায় দেড়বছর। তবে এখনোই বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা মাঠে নিজেদের নতুন করে মেলে ধরছেন। তারা প্রচার-প্রচারণায় অনেকটাই সবর। আড়াইহাজারে বিএনপির রাজনীতি কয়েকটিভাগে বিভক্ত হলেও বিভিন্ন কারণে শেষ ভরসারস্থল সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর বলে মনে করছেন অনেকেই। নানা কারণে তৃণমুলের নেতাকর্মীসহ বিএনপিরপন্থী ভোটাররাও আঙ্গুরের ওপরই ভরসা রাখতে চান।

 

অনেকেই বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনটি যেনো-তেনোভাবে করতে পারবেনা আওয়ামী লীগ সরকার। দেশ-বিদেশের চাপ রয়েছে সরকারের ওপর। যাতে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যার আলামত এখনই দেখা যাচ্ছে। এতে আসছে নির্বাচনে অনেকটাই আশাবাদি হয়ে উঠেছে দলটির তৃণমুলের নেতাকর্মীরা। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা হলে অনেকেই জানান, বিগতদিনে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীরা বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের সহযোগিতা পেয়েছেন।

 

বিপদে-আপদে তাকে কাছে পেয়েছেন। মামলা-হামলার শিকার নেতাকর্মীদের আজাদ ব্যাপকভাবে সহযোগিতাও দিয়েছেন। তবে তার মাত্রাতিরিক্ত রাজনীতিতে আড়াইহাজার বিএনপির কাঠামো ভেঙে পড়েছে। নেতাকর্মীদের সাথে বিরোধ তৈরিতে তিনি সিদ্ধহস্ত। আড়াইহাজারে বিএনপি কর্মীদের জন্য আজাদ আওয়ামীলীগের চাইতেও বড় প্রতিপক্ষ হিসেবে একনজনকে আরেকজনের পেছনে লাগানোর কাজ করছেন। নানা কমিটিতে পদায়ন করার লোভ দেখিয়ে নিজের দিকে টানছেন। তবে তৃণমূলের পাশে রয়েছেন মাহমুদুর রহমান সুমন। তবে ভোটের মাঠের চিত্রটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভোটারদের কাছে সাবেক এমপি আঙ্গুরের গ্রহণযোগ্যতা বেশী।

 

তিনি পরপর তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়ে এলাকায় তৎকালিন সময়ে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। বিশেষ করে আড়াইহাজারে রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। তিনি এমপি থাকাকালিন উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সরকারি সফর আলী কলেজ সরকারি করন করাসহ অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। বিএনপির হালচাল নিয়ে কথা হয় উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি নেতা আলী আজগরের সঙ্গে। তিনি বলেন, সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর একজন স্বচ্ছ ব্যক্তিত্ব। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ নেই। তিনি একজন ক্লিনইমেজের রাজনীতিবিদ।

 

আড়াইহাজার বিএনপি একাধিকভাগে বিভক্ত হলেও নেতাকর্মী ও বিএনপিপন্থী ভোটারদের এখনো আস্থা ও ভরসারস্থানে রয়েছেন আঙ্গুর। তাকে ছাড়া ২০০৮ সালে বিএনপির হারিয়ে যাওয়া আসনটি পুনরুদ্ধার করাটা সম্ভব হবেনা। তিনি এখনো জনপ্রিয়তার র্শীষে রয়েছেন। কথা হয় উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এড. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। তিনিও একই দাবী করেছেন। তিনি বলেন, আড়াইহাজারের আসনটি পুনরুদ্ধার করতে হলে সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুরের বিকল্প নেই। আমার জানামতে আঙ্গুর মানুষের সঙ্গে কোনদিন খারাপ কোন আচার-আচরণ করেননি।

 

এতেই তিনি মানুষের হৃদয়ে মিশে আছেন। সময়ের পরিক্রমায় হয়তো আড়াইহাজারের মানুষ নিরব রয়েছেন। হামলা ও মামলার ভয়ে মুখ খুলতে চায় না। তবে আগামী নির্বাচনের আগে অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে। এমন একপেশী অবস্থা থাকবে না। সবাই মাঠে নেমে আসবেন। আওয়ামী লীগ সরকারের দিন শেষ হয়ে আসছে। তারা মানুষকে খুশি রাখতে পারেনি। দ্রব্যমূল্যের দাম, বিদ্যুতের সংটকসহ সার্বিক অর্থনীতি ক্রমেই একটি মন্দার দিকে ধাপিত হচ্ছে। এতে আগামী নির্বাচনে মানুষ ভোটের সুযোগ পেলে সরকার পরিবর্তন করবেন এটাই বাস্তবতা।

 

এই সরকারকে এদেশের মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চাচ্ছেনা। জানতে চাইলে সাবেক এমপি আঙ্গুর ‘যুগের চিন্তা’কে বলেন, সরকার মানুষের মৌলিক অধীকারগুলো থেকে বঞ্চিত করছে। মানুষের ভোটের অধীকার নেই। কথা বলার স্বাধীনতা নেই। আইনের কোনো শাসন নেই। সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষ আজ ভোগান্তিতে পড়েছেন। চাল,তেল,ডালসহ সকল ধরনের নিত্যপণ্য আজ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। মানুষের মধ্যে দুর্ভিক্ষ চলছে। কেউ ভয়ে কথা বলতে পারছেনা। গণমাধ্যমের কোন স্বাধীনতা নেই।

 

অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করলে সাজানো মামলায় সাংবাদিকদের জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঘুষ বিহীন কোন কাজ হচ্ছে না। সব জায়গায় দলীয় করুন করা হয়েছে। তিনি বলেন, চাপার জোরে কয়দিন ক্ষমতায় টিকে থাকবে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিএনপির আমলে যেসব আমলারা নিয়োগ পেয়েছেন। তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে পারেনা। আমরা বলবো যেসব আমলারা আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগ পেয়েছেন। তারাও আগামী নির্বাচনে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা থেকে বিরত রাখতে হবে।

 

সাবেক এই এমপি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে যেতে ভয় পাচ্ছে। কারণ তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। তারা জনগণের কাছে ভোট চাইতে যেতে পারবেনা। ভোট চাওয়ার সকল রাস্তা তাদের নিজেদের অপকর্মের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। ক্ষমতা হারানোর ভয় পেয়ে বসেছে আওয়ামী লীগকে। তিনি বলেন, এখন শুধুই ভোটের মাধ্যমে সরকার পরির্বতনের অপেক্ষায় জনগণ।এসএম/জেসি 

এই বিভাগের আরো খবর