শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আড়াইহাজারে পর্দার আড়ালে একাট্টা আওয়ামী লীগ-বিএনপি

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২২  

# বিএনপি-আওয়ামী লীগের সুবিধাবঞ্চিত নেতাদের নয়া কৌশল
# দায়িত্বপ্রাপ্তদের নজরদারিতে সুযোগসন্ধানীরা

 

আড়াইহাজার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতকার্মীদের মধ্যে অনেক নেতাই এখন পর্দার আড়ালে একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন দিন ধরেই ভেতরে ভেতরে এমন গুনজন চলে আসছিল। তবে অন্তরালের এই গুঞ্জন যেন সামনে এসে পড়েছে। প্রবাদে আছে ‘গোপন শক্র’র চেয়ে প্রকাশ্যে শক্র অনেক ভালো।

 

’ উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে সম্প্রতি ঘটেছে এমনই এক ঘটনা। অনেকেই বলেছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই একটি গুনজন ছিল কিছু নেতা গোপনে ইকবাল পারভেজ, মমতাজ ও বিএনপির সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুরের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। তাদের মূল এজেন্ডাই হলো এমপি নজরুল ইসলাম বাবুকে কিভাবে ‘মাইনাস’ করা যায়। অনেকের অভিযোগ, এর মূল সমন্বয়ক হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক সভাপতি।

 

তার সঙ্গে রয়েছেন সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি লিয়াকত হোসেন। কিছু অসমর্থিত সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটি গঠনের আগ পর্যন্ত তার সঙ্গে সবচেয়ে বেশী যোগাযোগ ছিল ইকবাল পারভেজের। পরে কিছুভাটা পড়ে যায়। বর্তমানে মমতাজের সঙ্গে। নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানিয়েছেন, তারা দুজনই সর্বদা ইকবাল পারভেজ,

 

মমতাজ হোসেন ও বিএনপির সাবেক এমপি আঙ্গুরের সঙ্গে গভীরভাবে যোগাযোগ করেন। সুযোগ পেলেই পাল্টি দেবেন। তবে অতীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের র্দুসময়ে মমতাজের প্রসংশিত ভুমিকা ছিল। কিন্তু তিনি দল থেকে সেভাবে মূল্যায়ন পাননি। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগে ইকবাল পারভেজের কোন ভুমিকাই নেই। তিনি অনেকটা উড়ে এসে জুড়ে বসার চেষ্টা করেন।

 

অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতা বনে যাওয়া ‘একট্রা’ নেতা লিয়াকত হোসেনরা এমপি নজরুল ইসলাম বাবুকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। সাবেক এই সভাপতির বাড়িতে লিয়াকত হোসেনের বেশ আসা-যাওয়া রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই তাদের মধ্যে ছোট্র-খাটো বৈঠকও হচ্ছে। এ তালিকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের আপাতত কেউ নেই।

 

তবে এমপি নজরুল ইসলাম বাবুও কম নয়। তিনি সর্বদাই নজরে রাখছেন তাদের গতিবিধি। তিনি নিজেও জানেন, তাদের এই ষড়যন্ত্রের বিষয়টি। তবে প্রকশ্যে তারা একে অপরের জন্য। ষড়যন্ত্রের আঁচ করতে পেরে সেভাবেই সাজিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগকে। উপজেলা জুড়েই বিপুল সংখ্যক নিজস্ব কর্মী বাহিনী রয়েছে তার। এদিকে নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানান, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত হোসেনের

 

ছেলে নিজ্জলের বৌ-ভাত অনুষ্ঠানে বিএনপির সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর আমন্ত্রিত হন। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মমতাজ হোসেনও। অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে ছিল সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজালাল মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। এতেই প্রমাণ মেলে লিয়াকত হোসেনের সঙ্গে এমপি বাবুর প্রতিপক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথাটা সখ্যতা চলছে।

 

এদিকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ছেলে নিজ্জলের বৌ-ভাতের দাওয়াত দিতে সেদিন লিয়াকতসহ আরও আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই গিয়েছেন সাবেক এমপি আঙ্গুরের ঢাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এদিকে স্থানীয় ছাত্রলীগের একটি অংশের অভিযোগ, লিয়াকত হোসেন আওয়ামী লীগ থেকে সদ্যঅনুষ্ঠিত উচিৎপুরা ইউনিয়ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশ করেছিলেন।

 

কিন্তু তিনি বঞ্চিত হন। তার অভিযোগ ছিল এমপি নজরুল ইসলাম বাবু তাকে সহযোগিতা করেনি। অপরদিকে উপজেলা উচিৎপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার দাবী লিয়াকত হোসেনের এলাকায় কোন জনপ্রিয়তা নেই। তিনি অতীতেও বেশ কয়েকবার দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু এলাকাবাসী তাকে সর্মথন করেনি। একবার তিনি নির্বাচনেও অংশ নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। ছাত্রলীগের অনেক নেতাই বলেন, তার ছেলে নিজ্জলকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত রাখার কোন মানে নেই।

 

যেহেতু তার বাবা লিয়াকত হোসেন সর্বদা নজরুল ইসলাম বাবু’র বিরুদ্ধে গোপনে কলকাঠি নাড়ছেন। নিজ্জলের বিষয়টি এখন ঘরের শত্রু বিভীষণ হয়ে দাঁিড়য়েছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও নিজ্জল ও তার বাবা লিয়াকত হোসেনকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যাস্টাস দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও স্থানীয় পর্যায়েও লিয়াকত হোসেনের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ।

 

এলাকাবাসী তার নানা অপকর্মে অতিষ্ঠ। এদিকে একই অবস্থা বিরাজ করছে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যেও। গুনজন রয়েছে, বিএনপির একটি অংশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের সঙ্গে গোপনে আতাঁত করে চলাচল করছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। এমন অভিযোগের তীর সাবেক এমপি আঙ্গুরের দিকেই বেশী।

 

বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে সাবেক আঙ্গুরের ভুমিকা ছিল নিরব। দলটির শত শত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হলেও আঙ্গুরের বিরুদ্ধে এ যাবৎকালে কোন মামলা হয়নি। নেতাকর্মীরা তার কাছ থেকে কোন সহযোগিতাই পায়নি। দলটির মাছ পর্যায়ের অনেক নেতার অভিযোগ, বিএনপির দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী নজরুল ইসলাম আজাদ ও মাহমুদুর রহমান সুমনকে ঠেক দেওয়ার মিশনে আদাজল খেয়ে নেমেছেন আঙ্গুর।

এই বিভাগের আরো খবর