বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ইজারাদারের হাতে জিম্মি নবীগঞ্জ-হাজীগঞ্জ গুদারাঘাটের যাত্রীরা

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১  

নবীগঞ্জ-হাজীগঞ্জ গুদারাঘাট দিয়ে  প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী পারাপার হয়ে থাকে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, গুদারাঘাট ইজারাদারদের কাছে সাধারণ যাত্রীরা জিম্মি। যাত্রীবোঝাই না হলে নৌকা ছাড়ে না। কোনো জিনিসপত্র পারাপার করতে গেলে গুনতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া। ঘাটের টোল আদায়কারীদের দুর্ব্যবহার। ঘাট ইজারাদারের দাপট থেকে যাত্রীদের রক্ষার যেন কেউ নেই। এই ঘাটে চলছে দিনের পর দিন চরম বিশৃঙ্খলা। এই জুলুম সহ্য করা কঠিন; যদিও গুদারাঘাটটি দেখভাল ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু। সাধারণ যাত্রীরা এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি চায়।

 

 

জানা গেছে, নবীগঞ্জ- হাজীগঞ্জ গুদারাঘাটে যেন যাত্রীদের কানমলা দিয়ে তারা ইচ্ছামতো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। সাধারনত পারাপারের ভাড়া ২টাকা হলেও জিসিনসপত্র থাকলে তার আলাদা ভাড়া দিতে হয়। সেই ভাড়া না দিলে পারাপারে টোল আদায়কারীরা দেয় বাঁধা আর করে থাকে দুর্ব্যবহার। ছোট্র একটি কাটুন নিয়ে পারাপার হরেও দিতে হয় ১০-২০ টাকা আর অন্যান্য জিসিনপত্র নিয়ে নৌকায়ও পারাপার হলে গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। এমনকি ইজারাদারদের ট্রলার ছাড়া যদি নৌকা দিয়েও মোটরসাইকেল পারাপার করা হয় তাহলে গুনতে হয়ে থাকে ২০টাকা। দিনের বেলায় ভাড়া ২ টাকা আদায় করলেও রাত সাড়ে দশটার পর থেকে স্পেশাল সার্ভিস নাম দিয়ে ভাড়া আদায় করছে জনপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকারও বেশি। প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের করা হয় দুর্ব্যবহার ।

 

এদিকে ট্রলারে কয়েক’শ যাত্রীর সঙ্গে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করে নদী পারাপার করে থাকে। এই ঘাটে এ দৃশ্য নিত্য দিনের। নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে ইজারাদারের খেয়াল খুশিমত চলছে ঘাটটি। ইচ্ছামাফিক পটাল আদায়, যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও ঘাটের জায়গা দখল করে অবৈধ দোকানপাট ব্যবসা। আর অদক্ষ ও শিশু চালক দিয়ে ট্রলার পারাপার করে থাকে। আবার মাঝে মাঝে ট্রলারের ইঞ্জিনেরতেল ফুরিয়ে যায়, মাঝ নদীতেই বন্ধ হয়ে যায় ট্রলার আর এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারন যাত্রীদের। বালু বহনকারী বালগেটের আনাগোনায় সর্বদা ভীত থাকেন যাত্রীরা। এমনি করে প্রতিদিন পারাপারে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ যাত্রীদের।

 


যাত্রীরা অভিযোগ করে জানান, গুদারাঘাট যাত্রীদের আনাগোনায় দিন রাত থাকে ব্যস্ত। বিশেষ করে সকাল ৭ টা থেকে ৯ টা এবং সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত যাত্রীদের ভীড় লেগে থাকে। যাত্রী পারাপারে মাত্র ৪০- ৫০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রলার হলেও ট্রলার ভর্তি না করে ছাড়ে না। অনেকটা সময় নিরুপায় যাত্রীরা ডিঙি নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে বাধ্য হন। ঘাটের দুই পাড়ে ও ফেরীর জেটিতে অবৈধভাবে দোকানপাট বসিয়ে ব্যবসা করছে হকাররা। আর এতে করে ফয়দা লুটছে ইজারাদার। নানা  সমস্যার কথা ইজারাদারকে জানানো পরও কোন পাত্তা দিচ্ছেন না বলে যাত্রীরা জানান। বরং অভিযোগ করতে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হয়েছেন অনেক যাত্রী। এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানসহ সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাত্রীরা।

এই বিভাগের আরো খবর