Logo
Logo
×

স্বাস্থ্য

ইনজেকশন পুশে গুনতে হচ্ছে টাকা

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৩ পিএম

ইনজেকশন পুশে গুনতে হচ্ছে টাকা
Swapno

 

# বাইরে লাগে ৫ হাজার, আমি নেই ১৫০০ : ডা. আব্দুল কাইয়ুম
# এমন কোন অভিযোগ পাইনি : হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক

 

 

নারায়ণগঞ্জের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির বেশির ভাগ মানুষ স্বল্প টাকায় ভালো সেবা পাওয়ার আশায় ছুটে আসেন খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে। অল্প মূল্যে টিকেট কেটে প্রায় বিনা খরচে কিংবা নাম মাত্র খরচে চিকিৎসার আশায় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগীরা এখানে ছুটে আসেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি ও আশে পাশে অবস্থিত বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকের সাথে যোগসাজশ করে বিভিন্ন হয়রানির মাধ্যমে রোগীদের অতিরিক্ত টাকা খরচের অভিযোগ আসে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে।

 

এবার এই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের কাছ থেকে এক অভিনব পন্থায় টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এই অভিযোগ এসেছে হাসপাতালের আউটডোরের সার্জারী বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার মো. আব্দুল কাইয়ুম এবং ডাক্তার মো. আকমল হোসেন ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে। রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ এখানে চিকিৎসা করতে আসা হাঁটুর জয়েন্টে ব্যথার রোগীদের ইনজেকশন পুশ করার জন্য রোগীদের কাছ থেকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা করে ফি নেওয়া হয়।

 

বিভিন্ন রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালে জয়েন্টের ব্যথা জনিত সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের প্রাথমিকভাবে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হলেও যদি ব্যথা না কমে তাহলে তাদের ব্যথা উপশম করার জন্য একটি ইনজেকশন পুশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই ইনজেকশনের জন্য প্রত্যেক রোগীর কাছ থেকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা (যার কাছ থেকে যা নেওয়া যায়) করে চুক্তি করা হয় বলেও জানা যায়।

 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয় তুলে ধরলে তাদের কাছেও অভিযোগ আসে উল্লেখ করে বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন বলে জানান। অন্যদিকে বিষয়টি পাঁচকান হয়ে যাওয়ার পর এখন আর হাসপাতালে এই ইনজেকশন দেওয়া হয় না উল্লেখ করে রোগীদের হাতে প্রাইভেট চেম্বারের ঠিকানা ধরিয়ে দিচ্ছেন। যেন তারা এ বিষয় তাদের সাথে তাদের পার্সোনাল চেম্বারে গিয়ে চিকিৎসা নেন। তবে গোপন সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে সাংবাদিক আসার বিষয়টি আগে থেকেই প্রকাশ হওয়ার পর নাকি রোগীদের চিকিৎসা নিতে ডাক্তাররা চেম্বারে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। এর আগে হাসপাতালেই নাকি এই ইনজেকশন পুশ করা হতো।

 

রোববার হাসপাতালে আসা জনাব সাইফুল নামের একজন রোগীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি আমার জয়েন্টে ব্যথার সমস্যা নিয়ে ডা. মো. আব্দুল কাইয়ুম এর কাছে এসেছি। আমাকে এর আগে এই সমস্যার কারণে ডাক্তার ঔষধ দিয়েছিলেন। তবে ব্যথা তেমন কমেনি এখন আবার এসেছি ডাক্তার দেখাতে ডাক্তার বললেন ইনজেকশন পুশ করার কথা। সে আমাকে পরামর্শ দিলেন তার প্রাইভেট চেম্বারে দেখা করার জন্য।

 

ডা. মো. আব্দুল কাইয়ুম এর কাছে টাকা নেওয়ার এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সম্পূর্ণ বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বলেন, পুরো বাংলাদেশে কোনো সরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসা দেওয়া হয় না। জয়েন্টে ইনজেকশন পুশ করার বিষয়টি ডাক্তাররা প্রাইভেট চেম্বারে দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আমাদের হাসপাতালে অনেক গরীব রোগী আসেন তাদের অবস্থা বিবেচনা করে আমরা তাদের বাইরে কোথাও এই ইনজেকশন দেওয়ার বিষয় পরামর্শ দেই সে ক্ষেত্রে বাইরে কোথাও এই ইনজেকশন দিতে ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকা করে লাগে আমার পারসোনাল চেম্বারে ১৫০০ টাকার মধ্যে আমি তাদের এই ইনজেকশন পুশ করে থাকি।

 

একই অভিযোগে অভিযুক্ত ডা. মো. আকমল হোসেন ভুঁইয়াও বলেন, এই ইনজেকশনটি হাসপাতালে দেয়া হয় না। বাংলাদেশের কোনো সরকারি হাসপাতালেই দেয়া হয় না। এই ইনজেকশন পার্সোনাল ক্লিনিকে দেওয়া হয়। এই কথার পাল্টা পশ্ন করায় তিনি বলেন আপনাদের সোর্স বলতে কিছু নাই সংবাদিকদের কাজ সবকিছু যাচাই বাছাই করা, তবে আপনারা ঠিক মতো তথ্য না নিয়ে আমাদের প্রশ্ন করেন। তিনি আরো বলেন হাসপাতালের বহিঃ বিভাগে ক্রিটিক্যাল কোনো কাজ করা হয় না।

 

হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডা. মো. আবুল বাসারের কাছে এই বিষয় প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এমন কোনো অভিযোগ আমার কাছে নেই। আপনাদের কাছে এমন কোনো অভিযোগ থাকলে অভিযুক্তকে আমার কাছে অভিযোগ জানাতে বলবেন আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এস.এ/জেসি
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন