শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ইপিজেড-এ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের অবসান কবে হবে

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬ আগস্ট ২০২২  


 # সংঘর্ষের ঘটনা এখন নৈমত্তিক হয়ে পড়েছে

 

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অবস্থিত এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন বা ইপিজেড শিল্প ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। আর এই কারণেই এখানকার ব্যবসায়ীক নিয়ন্ত্রণ যেকোন দল বা নেতার প্রভাবকে আরও সমৃদ্ধ করে। তাই এখানকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীক কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব’র বিষয়টি প্রায়ই সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে দেখা যায়। যার সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার। এই দ্বন্দ্বের ঘটনাটি ঘটে ইপিজেড’র চার্মিং ট্রীম এন্ড প্যাকেজিং লিমিটেড নামক একটি ফ্যাক্টরির ব্যবসায়ীক নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে কেন্দ্র করে।

 

তবে এই ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগেরই দুই অঙ্গ সংগঠনের নাম। ঘটনায় হামলা-পাল্টা হামলা, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ আছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের আহবায়ক মো. লিটন আহমেদ এই ঘটনার জন্য দায়ী করছেন নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতিকে। কাউন্সিলর মতি নিজে উপস্থিত থেকে তার উপর হামলা চালিয়েছে এবং অফিস ভাঙ্গচুর করেছে বলে দাবী করেন তিনি।

 

তবে এই ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেন কাউন্সিলর মতি। তিনি বলেন, লিটনের গ্রুপের উপর হামলা এবং পরে লিটনের গ্রুপও পাল্টা হামলা করেছে বলে শুনেছেন তিনি। একই সাথে এধরণের কথা শুনার সাথে সাথেই তিনি পুলিশকে ফোন করেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে এই চার্মিং প্যাকেজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হামলা বা দ্বন্দ্বের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এর আগেও এই বিষয় নিয়ে একাধিক সংবাদ এসেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। তাই এই খুনোখুনির বন্ধে বিষয়টির তদন্তপূর্বক স্থায়ী সমাধানে প্রশাসনের ভূমিকা চায় স্থানীয় জনগণ।

 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের আহ্বায়ক লিটন আহমেদ বলেন, আমি ইপিক্স-৭ এবং চার্মিংয়ে রানিং ব্যবসা করছি। এখানে আমার কাজগুলো দখল করার জন্য মাস তিনেক আগে কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি বাধা দেয়। তখন আমি তার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিলাম এভাবে কেন করবেন। আপনারা একজন লোক দেন তাকে নিয়েই আমি ব্যবসা করি। এই বিষয়টি নিয়ে তারা বিভিন্ন সময় বসবে বলে আর বসেনি।

 

গতকাল বৃহস্পতিবার যখন আমি কারখানায় সেম্পল মাল দিতে যাই তখন মতির নির্দেশে তার লোকজন আমার লোকজনকে হুমকি ধামকি দেয় এবং মারধর করে। তখন মতি তার লাল গাড়ি নিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমি তখন আহতদেরকে হাসপাতালে পাঠাই। এই ঘটনার পরে আবার মতি আমার কাছে এসে আমাকে ডাক দিলে আমি সালাম দেই। তখন তিনি আমাকে বলেন, তুই কত বড় নেতা হইছস, তাঁতী লীগ কতদিন করে করস, আমি আজকে তা শিখিয়ে দিব।

 

এ সময় তার লোকজন আমাকে আঘাত করে বিভিন্ন জায়গায় জখম করে। পরে আমার গালে আঘাত লাগার পর আমি পরে যাই। এ সময় মতি বলেন ওর অফিস ভেঙ্গে চুরে পরিস্কার করে ফেল্। তখন তারা আমাদের তাঁতী লীগের অফিস ভাংচুর করে এখানকার সিসি ক্যামেরা ও হার্ডডিস্কসহ এখানকার যাবতীয় মেশিনারীজ ওনার গাড়িতে তুলে ওনি নিয়ে যায়। এরা আমার বাড়িতেও হামলা চালায়। এখনও বাড়ির গেটে তার চিহ্ন আছে। পরে আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। 

 

এই বিষয়ে নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতি বলেন, দলীয় অফিসে তাদের সবার ছবি ঠিক আছে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি কেন নামিয়ে চেয়ারের উপর রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, এই ঘটনায় আমি ছিলাম না, শুনেছি। আমি শুনেছি একটি দল বা গ্রুপ ইপিজেড এর ভিতরে গিয়ে লিটনের এক ছেলেকে মারধর করেছে।

 

এরপর আবার তারাও নাকি কয়েকজন মিলে সেই গ্রুপকে মারছে। এই ঘটনার পর যখন উভয় পক্ষই ধারালো অস্ত্র নিচ্ছে বলে শুনতে পেরেছি তখনই আমি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ফোন করেছি। কিন্তু মারামারির ঘটনা যা ঘটেছে তা ভিতরেই ঘটেছে। তিনি বলেন সিদ্ধিরগঞ্জ তাঁতী লীগের অফিসে গিয়ে দেখলেই চোখের সামনে সব পরিস্কার হয়ে যাবে।

 

অফিসের এই দুইটা ছবি ছাড়া সব ছবিই সুন্দরভাবে ঝুলে আছে। আর অফিসের সামনের গ্লাসটা ভেঙ্গেছে। অফিস ভাঙ্গচুরের ঘটনাকে সাজানো নাটক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ঘটনার বিষয় যখনই আমি জানতে পেরেছি সাথে সাথেই আমি পুলিশকে ফোন করেছি। তারাও সাথে সাথে চলে এসেছে। তিনি আরও বলেন, লিটনের রাজনীতি এবং আমার রাজনীতির মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। লিটনকে গিয়ে মতি হুমকি দিবে কেন? আমার নিজেরও একটা পজিশনের ব্যাপার আছে।এসএম/জেসি 
 

এই বিভাগের আরো খবর