বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ঈদগাহে বর্জ্যরে ভাগাড়, দুর্গন্ধে এলাকাবাসীর গালাগাল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০২৩  


# অসুস্থ হয়ে পড়ছে নারী-শিশু-বৃদ্ধ
# সরাসরি বলে দেই মেয়রের সাথে কথা বলতে : ছক্কু
# প্রতিদিনই ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেই : শ্যামল

 

নারায়ণগঞ্জের চানমারি-হাজীগঞ্জ মূল সড়কের পাশে তৈরি হয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। নাকের রুমালকেও হার মানায় এই ময়লার দূর্গন্ধ। যার কারনে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসিদের। কাউন্সিলরকে বলেও কোনো উপকার হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা এছাড়া দূর্গন্ধের কারনে তারা বিভিন্ন ধরনের অসুখ এবং ডায়রিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

 

 

এ ব্যাপারে নাজমা বেগম বলেন, এই রোডটা নতুন করা হয়েছে। পুরো এলাকার লোক এখানে এসে ময়লা ফেলে। এ ময়লার দূরগন্ধের কারনে বাড়িতে থাকা যায় না। বাড়িতে মেহমান পযন্ত আসতে পারে না। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, আমার পুরো বাড়িতে প্রতিটা রুমে ভাড়াটিয়া ছিল।

 

 

অনেক আগের ভাড়াটিয়ারাও এখন থাকতে চায় না। যার কারনে এখন নিজের টাকা দিয়ে গ্যাস ও পানির বিল দিতে হচ্ছে। পুরো বাড়িতে ময়লার পানি এসে ভরে গেছে। বাথরুমের মধ্যে সাপ উঠে থাকে। তার মাঝে মাটির নিচের থেকে গ্যাস উঠে ময়লাতে আগুন লেগে যায়। এমন অবস্থায় কে-ই-বা থাকতে চাইবে।

 

 

এছাড়া আরো বড় সমস্যা হচ্ছে  দুর্গন্ধের কারনে মানুষের ডায়রিয়া এবং বমি হয়ে থাকে। পথচারী বেবি নামের এক ব্যাক্তি বলেন, যখন এ রোডটা নতুন হয়েছিলো তখন খুব সুন্দর ছিলো। আগে আামি দিনে প্রায় ৩-৪ বার এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতাম। এখন ময়লার দূর্গন্ধের কারনে এ রাস্তা দিয়ে হাটাও যায় না।

 

 

বলেছিলো এ জায়গাতে নাকি ঈদগার মাঠ হবে। এই ময়লাই হলো ঈদগাহের নমুনা। এলাকাতে থাকা যায় ময়লার কারনে। মানুষের অশান্তি করে লাভ আছে নাকি। রাত হলে মশার জন্য তো বাড়িতে বসাই যায় না। মশার কামরের কারণে অসুস্থ হয়ে যাই। দোকানদার জাকির মিয়া বলেন, এই ময়লার কারনে অনেক অস্বস্তি হচ্ছে। দূগর্ন্ধের কারনে দোকানই খুলে বসতে পারি না।

 

 

শান্তিতে যে নামাজ পড়বো তারও কোনো উপায় নেই। মসজিদেও এর গন্ধে বসা যায় না। আর আশে পাশের বাসাবাড়ির কথা না বলাই ভালো। তারা আরো অনেক কষ্টে আছে। না পারছে ঠিক মতো দুবেলা পেট ভরে ভাতখেতে। তার কথার সুর ধরে মো: আজিজুল হক বলেন, প্রতিদিন এ রোড দিয়ে নীট-কনসার্টে মেয়েরা যাতায়াত করে। ময়লার গন্ধে প্রতিদিন বমি করে।

 

 

তাও তারা পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে যায় এই পথ দিয়ে। এটা মানুষের অনেক হয়রানি কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। ৬-৭ মাস ধরে এই জায়গাটার এমন অবস্থায় বিরাজ করছে। একই ব্যাপারে শামসুল হক বলেন, মেয়র আপা ওয়াদা করে বলছিলো এখানে ময়লা দিয়ে ভরে ঈদগাঁ করে দিবে। আমরা ভেবে ছিলাম ৬ মাসের মধ্যে হয়ে যাবে কিন্তু এখনো কোনো কাজই শুরু হয়নি।

 

 

ময়লা সরিয়ে নিবে রেখে আরো তারা গাড়ি গাড়ি করে ময়লা ফেলে দিয়ে যায়।  এ ব্যাপারে কাউন্সিলরকে বলা হয়েছে অনেকবার কিন্তু তিনি বলেন মেয়র মহাদয়ের সাথে কথা বলতে। গন্ধে টিকতে না পেরে আমরা দাবি করেছিলাম ময়লা দিয়ে না বালু দিয়ে যেনো এই জায়গাটা ভরাট করা হয়।          

 

 

এ ব্যপারে ১১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অহিদুল ইসলাম (ছক্কু) যুগের চিন্তাকে বলেন, ঈদগাহ তো আমি আমার স্বার্থে চাই নাই। এলাকাবাসী নিজেদের কারনে এটা মেয়র আপার থেকে চাইছে তাই তিনি দিবে বলেছেন। ভালো কিছু পেতে হলে তো একটু কষ্ট করতেই হবে। ঈদগাঁটা হলে তো এর উপকারিতা তারাই ভোগ করবো।

 

 

আমার কাছে এই ময়লা নিয়ে অভিযোগ প্রায় আসে। আমি তাদের সরাসরি বলে দেই মেয়র আপার সাথে কথা বলতে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পরিষ্কার-পরিছন্ন বিভাগের কর্মকতা শ্যামল চন্দ্র পাল যুগের চিন্তাকে বলেন, আমাদের ময়লা ফেলার আসল জায়গা হলো আল-আমিন নগরে। সেখানে কিছু সমস্যা হওয়ার কারনে বর্তমানে হাজীগঞ্জের সেই জায়গাতে ময়লা ফেলা হচ্ছে।

 

 

কয়েকদিনের মধ্যে আল-আমিন নগরের জায়গা ঠিক হয়ে গেলে আর  হাজীগঞ্জের এলাকাতে ফেলা হবে না। তবে আমরা  হগাজীগঞ্জের সেই ময়লার ভাগাড়েরর মধ্যে প্রতিদিনই ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেই এবং ভালো মানের নতুন বেকু গাড়ি আনা হয়েছে সেটা দিয়ে ময়লা সমান করে দেই। এন. হুসেইন/ জেসি

এই বিভাগের আরো খবর