শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

উজানের পানিতে পদ্মাপাড়ে বিষধর চন্দ্রবোড়া

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২১  

উত্তরাঞ্চলে প্রতিদিনই বাড়ছে পদ্মার পানি। ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে তলিয়ে গেছে রাজশাহী অঞ্চলের পদ্মাপাড়ের শত শত ঘরবাড়ি। অনেকেই বসতভিটা ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন নিরাপদ স্থানে। কেউ কেউ পানিবন্দি অবস্থায় বসবাস করছেন নদী তীরবর্তী নিজ বাসস্থানে।

 

পদ্মার ভাঙনে বসতভিটা হারানোর শঙ্কার পাশাপাশি এখন নতুন করে যোগ হয়েছে সাপ আতংক। ভারত থেকে পানির তোড়ে ভেসে আসতে শুরু করেছে চন্দ্রবোড়া, ক্রেইট ও কোবরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির বিষাক্ত সাপ। এতে আতঙ্কিত রয়েছেন পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা।

 

মহানগরীর মতিহার থানার বাজে কাজলা ফুলতলার বাসিন্দা মাসুদ রানা জানান, উজান থেকে ভেসে আসা পানিতে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত সাপ ভেসে আসছে। আশ্রয় নিচ্ছে পদ্মা পাড়ের ঝোপ-ঝাড় ও জঙ্গলে। ঢুকে পড়ছে পদ্মা পাড়ের বাড়িঘরে। পদ্মাপাড়ের বাঁধের স্লাবের ফাঁকা জায়গাগুলোতেও আশ্রয় নিচ্ছে এসব বিষধর সাপ।

 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাপ আতংকে অনেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় কাজে যেতে পারছেন না। এমনকি জেলেদের জালেও প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে রাসেল ভাইপার। নগরীর পদ্মার পঞ্চবটির বাসিন্দা মোজাম্মেল হক রনি বলেন, রাজশাহী মহানগরীর পঞ্চবটি এলাকা থেকে জাহাটঘাট পর্যন্ত দেখা মিলছে বিভিন্ন প্রজাতির বিষাক্ত সাপ। প্রতিদিনই এলাকায় আট থেকে ১০টি করে সাপ পিটিয়ে মারছেন স্থানীয়রা।

 


তিনি আরও বলেন, এসব সাপের বেশিরভাগই চন্দ্রবোড়া। এ সাপ অত্যধিক বিষাক্ত হওয়ার কারণে অনেকেই সন্ধ্যার পর বাঁধে কিংবা নদীর পাড়ে ভয়ে যাচ্ছেন না। এমনকি নদীর ধারে বেড়াতে আসা বিনোদনপ্রেমীদেরও ভিড় কমেছে সাপের উপদ্রবের কারণে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) জেনেটিক বিভাগের অধ্যাপক আবু রেজা বলেন, এগুলো বিষাক্ত প্রজাতির সাপ। এসব প্রজাতির সাপ সাধারণত চরের বালুতে বসবাস করে। এখন চর ডুবে গেছে। তাই বন্যার পানিতে ভেসে নদীর তীরবর্তী পাড়ে আশ্রয় নিচ্ছে।

 

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে পদ্মা পাড়ে বসবাসরতদের সাবধানে থাকতে হবে। প্রয়োজনে বাড়ির আশপাশে অ্যাসিডজাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ সাপ অ্যাসিডের গন্ধের কারণে ওই স্থানগুলোতে আসে না বা থাকতে পারে না। স্নেক রেসকিউ ও কনজারভেশন সেন্টারের বোরহান বিশ্বাস বলেন, গত চারদিনেই ১৬৩টি সাপ মারার ঘটনা শুনেছি। এর মধ্যে ১০৭টিই হচ্ছে রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া)। বাকিগুলো ক্রেইট ও কোবরা জাতের সাপ।

 

তিনি বলেন, আমাদের উচিত সাপ নিধন না করে তাদের থেকে সাবধানে থাকা। কারণ পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তারা আবার তাদের নিজেদের পছন্দের জায়গায় ফিরে যাবে। কারণ তারাও মানুষের আশপাশে কিংবা লোকালয়ে থাকতে পছন্দ করে না। তাই প্রকৃতি রক্ষাকারী সাপদের না মারাই শ্রেয় বলে মনে করি।

এই বিভাগের আরো খবর