বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

উন্নয়নের আসল রূপকার কে?

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২১  

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমানকে তার অনুসারীরা বলে থাকেন উন্নয়নের রূপকার। দু’দিন আগে একটি অনলাইন পোর্টালে রিপোর্ট করা হয়েছে শামীম ওসমানকে যদি উন্নয়নের রুপকার বলা না হয় তাহলে নাকি নাকি তিনি রাগ করেন। কিন্তু বাস্তবে শামীম ওসমান যে কি উন্নয়ন করেছেন তার চিত্র এবারের বর্ষায় ভালোমতো ফুটে উঠেছে।

 

এই এমপির অব্যবস্থাপনা এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে গোটা ফতুল্লা অঞ্চল এখন জলজটে আক্রান্ত হয়েছে। ভাঙা রাস্তা, কোনো ড্রেনেজ সুবিধা না থাকা, ময়লা ব্যবস্থাপনা না থাকা আর ভয়াবহ জলাবদ্ধতা এখন ফতুল্লার জনগনের নিয়তিতে পরিণত হয়েছে। তাই প্রশ্ন উঠেছে তাহলে তিনি কিসের উন্নয়নের রুপকার? নিজের ভাগ্যের উন্নয়ন করা ছাড়া তিনি জনগণের জন্য কি উন্নয়ন করেছেন সেটা এখন দেখাই যাচ্ছে। শুধু মাত্র ফতুল্লা থানার পাঁচটি ইউনিয়নের উন্নয়নের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তাও আবার জোর করে ধরে রেখেছেন এই দায়িত্ব।

 

ফতুল্লা থানার একমাত্র বক্তাবলী ইউনিয়ন ছাড়া বাকী চারটি ইউনিয়ন শহর এলাকা হওয়া সত্তে¡ও শামীম ওসমানের কারণে এসব ইউনিয়ন সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভূক্ত হতে পারছে না। তিনি বাধা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশনের সূত্র। তাই তিনি নিজেও ফতুল্লা এলাকার উন্নয়ন করছেন না আবার সিটি এলাকাটিকে করপোরেশনেও যেতে দিচ্ছেন না। ফলে দিনে দিনে ফতুল্লার মানুষের দুর্ভোগের পাহাড় জমেছে।

 


অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার উন্নয়নের দায়িত্ব পালন করছেন মেয়র আইভী। নারায়ণগঞ্জ শহর, বন্দর এবং সিদ্ধিরগঞ্জ এই তিনটি থানা এলাকার বিশাল অংশ নিয়ে গঠন করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকা। এই তিনটি এলাকায়ই মেয়র আইভী ব্যাপক উন্নয়ন করে চলেছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার মানুষ সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা ভোগ করছেন। তিনি গোটা সিটি করপোরেশন এলাকায় রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যাবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করার পাশাপাশি মাঠাঘাট, হাট বাজার, বিনোদন কেন্দ্র, নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা, ময়লা বা বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা ও লাইটিং সহ এমন কোনো উন্নয়ন নেই যা তিনি করছেন না। এরই মাঝে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর, বন্দর এবং সিদ্ধিরগঞ্জে দশটি মেঘা প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। এর মাঝে বেশ কয়েকটি মেঘা প্রকল্পের কাজ তিনি শেষ করেছেন।

 

এসব উন্নয়ন কাজের মাঝে রয়েছে শেখ রাসেল পার্ক, বাবুরাইল খাল, সিদ্ধিরগঞ্জ খাল, জালকুড়িতে বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা কেন্দ্র নির্মান, বন্দরে বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা কেন্দ্র নির্মাণ, নগর ভবন নির্মাণ এবং আলী আহম্মেদ চুনকা মিলনায়নত নির্মান করা সহ তিনি আরো বহু উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি নগরীর কবরস্থান এবং শশ্মানগুলিরও ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। গড়ে তুলেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দির। সারা সিটি করপোরেশন এলাকায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গড়ে তুলেছেন মাতৃসদন। ফলে নগরবাসী দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত মেয়র আইভীর উন্নয়নের সুফল ভোগ করছেন।

 

তাই এক বাক্যে এখন সবাই বলছেন মেয়র আইভীই হলেন আসল উন্নয়নের রুপকার। কঠোর পরিশ্রমী আইভী দিনরাত একাকার করে তার এলাকার উন্নয়ন করে চলেছেন। একাধারে তিনি সৎ, পরিশ্রমী এবং মেধাবী। নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে তিনি কাজ পাগল একজন মেয়র হিসাবেও পরিচিত। এক সময় এই নারায়ণগঞ্জ শহর বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছিলো। কিন্তু মেয়র আইভী সেই শহরের চেহারা একেবারে পাল্টে দিয়েছেন। তিনি গোটা সিটি করপোরেশন এলাকায় এমন ভাবে ড্রেনেজ ব্যাবস্থা গড়ে তুলেছেন যে এখানে তেমন কোনো জলাবদ্ধতা হয় না। প্রবল বৃষ্টি হলে বঙ্গবন্ধু সড়কসহ কিছু এলাকায় স্বল্প সময়ের জন্য কিছু পানি জমলেও বৃষ্টি থামার ২/১ ঘন্টার মাঝেই সেই পানি নেমে যায়। ফতুল্লার মতো মাসের পর মাস ডুবে থাকে না। তাই সর্বস্তরের নারায়ণগঞ্জবাসীর মতো মেয়র আইভীই হলেন উন্নয়নের আসল রূপকার। আর বিপরিতে শামীম ওসমান হলেন চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ একজন এমপি যার এলাকায় সমস্যার কোনো শেষ নেই। 


 

এই বিভাগের আরো খবর