শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

এক স্বপনেই সর্বনাশ ফতুল্লার

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৩  

 

#  অপরিকল্পিত ও অপ্রতুল ড্রেনেজ ব্যবস্থা, মাদক, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য
# এবারের বর্ষায় বিগত দিনের চেয়ে অবস্থা আরো অবনতি হবে বলে আশঙ্কা

 

 

ফতুল্লা থানার অন্তর্গত ৫ টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন হচ্ছে ফতুল্লা ইউনিয়ন। তবে গুরুত্বপূর্ন এ ইউনিয়টি সময়ের পরিক্রমায় সবচেয়ে অবহেলিত ইউনিয়নে পরিনত হয়েছে। এ ইউনিয়নের অন্তর্গত প্রতিটি ওয়ার্ডে নাগরিক সুযোগ সুবিধে নিম্নমুখী । রাস্তাঘাটের বেহাল দশার পাশাপাশি অপরিকল্পিত ও অপ্রতুল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারনে এ ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা যেনো নিত্যদিনের ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে এ জনপদের বাসিন্দারা জলাবদ্ধতার যাতাকলে পিষ্ঠ থাকলেও এ নিয়ে যেনো কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই চেয়ারম্যান স্বপনের।

 

জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনো সুখবর দিতে পারেনি তিনি। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এ ইউনিয়নের ক্ষমতার মসনদে বসে আছে তিনি। এ এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায় ইউনিয়নের অভ্যন্তরে বহু ভাঙ্গা সড়ক থাকলেও তা মেরামতে কোনো আগ্রহ দেখান নি তিনি। শুধু তাই নয়, জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন নি চেয়ারম্যান। ফলে বছরের পর বছর ভোগান্তিতে দিন পার করছে কয়েক হাজার পরিবার।

 

শুধু যে জলাবদ্ধতার সমস্যা তা নয়। এ ইউনিয়নে মাদক সমস্যা, কিশোর গ্যাং, অবৈধ ডাইং এর দৌড়াত্ন্য , সন্ত্রাস সব কিছুই অনন্য যে কোনো ইউনিয়নের চেয়ে কয়েকগুন বেশি। তবে এসব সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তার আওতাধীন এলাকায় তেমন কোনো উন্নয়ন এর ছোঁয়া লাগেনি।

 

এলাকাবাসির ভাষ্য তার বাড়ির ৫০০ গজের মধ্যোই বর্ষায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সেগুলো নিরসনে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি চেয়ারম্যান। শুধু তাই নয় তিনি তার নির্বাচনী এলাকার যাবতীয় সমস্যার কথা এমপি কে বলার মতো সৎসাহস দেখান নি।এতে করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীতে পরিনত হচ্ছে ফতুল্লার বাসিন্দারা। এলাকাবাসির ভাষ্যমতে, ফতুল্লার চেয়ারম্যান স্বপন  একজন ব্যর্থ চেয়ারম্যান।


অথচ এই ইউনিয়নের আশেপাশের ইউনিয়নগুলোর সার্বিক অবস্থা তূলনামূলক ভালো । বক্তাবলীকে ফতুল্লার ছিটমহল একটা সময় বলা হলেও সেই বক্তাবলী ও ফতুল্লার চেয়ে অনেক উন্নত। সাম্প্রতিক নারায়নগঞ্জ -৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বক্তাবলীকে নারায়ণগঞ্জ এর সবচেয়ে আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষনা দিয়েছিলেন। অথচ ফতুল্লার অবস্থা একেবারেই নাজুক। সেই দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই কারো। সচেতন মহল বলছে ফতুল্লাকে এমপির সুদৃষ্টি আকর্ষনে ব্যর্থ হয়েছে চেয়ারম্যান স্বপন।


দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকার পর ও একটা ইউনিয়নের এমন বেহাল দশা দেখে হতাশ সমগ্র ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। তারা বলছে জনপ্রতিনিধি হিসেবে একেবারে ব্যর্থ ফতুল্লার চেয়ারম্যান স্বপন। কারন এটি একটি গুরুত্বপূর্ন ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে জীবনযাত্রার মান একেবারেই অনুন্নত। ঘনিয়ে আসছে বর্ষাকাল। থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে কয়েকদিন যাবৎ। সামান্য বৃষ্টিতেই কয়েকদিন ধরে ইতিমধ্যে তলিয়ে গেছে ফতুল্লার গুরুত্বপূর্ন কয়েকটি সড়ক।

 

ভারি ও একটানা বৃষ্টি হলে বিগত দিনের ন্যায় গাড়ির পরিবর্তে নৌকা ও ভ্যানে চলতে হবে ফতুল্লার কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। তবে এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি চেয়ারম্যানকে। বরং এ বিষয়টি দেখেও যেনো না দেখার ভান করে থাকে চেয়ারম্যান। বিগত দিনে এ জলাবদ্ধতা নিরসনে সাময়িক সমাধান হিসেবে পাম্প দিয়ে পানি সড়ানোর ব্যবস্থা করলেও এ বছর পাম্প ব্যবহার নিয়ে ও শঙ্কা রয়েছে।

 

এক সাক্ষাৎকারে চেয়ারম্যান স্বপন বলেন পূর্বে পাম্প ব্যাবহার করে পানি নিষ্কাশন করলেও সেটা অতিরিক্ত বিদ্যুত বিলের কারনে আর সম্ভব না। কারন বিদ্যুত বিল কয়েক লাখ টাকা আসে যা পরিষদ কর্তৃক বহন করা সম্ভব না। অর্থাৎ এ বর্ষায় ভোগান্তি যেকোনো বছরের চেয়ে বেশি হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। আসছে বর্ষায় কপাল পুড়তে যাচ্ছে ফতুল্লাবাসীর।

 

চেয়ারম্যান স্বপন শুধুমাত্র জলাবদ্ধতা নিরসনেই ব্যর্থ নন। তিনি এ ইউনিয়নের মাদক সমস্যা, সন্ত্রাস , কিশোর গ্যাং এর লাগাম টানতে ও ব্যর্থ হন। এক কথায় সর্বদিক থেকে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে চেয়ারম্যান স্বপন। এই ইউনিয়ন ঘিরে একটাই কথা শোনা যায় এক স্বপনেই সর্বনাশ ফতুল্লার।
 

এই বিভাগের আরো খবর