বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

এড. মাসুমের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে দুলালের পাল্টা চ্যালেঞ্জ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১  

নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম এর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তাকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধান। মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বন্দরের পৌরসভা মোড় এলাকায় ২৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কর্মী সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই চ্যালেঞ্জ করেন।

 

কাউন্সিলর দুলাল প্রধান এড. মাসুমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কিছুদিন আগে ইউটিউবে দেখলাম কোন এক সাবেক সাংবাদিক নেতা আমার গুরু এবং রাজনৈতিক নেতা একেএম শামীম ওসমানকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। আমি তাকে বলতে চাই, শামীম ওসমানের একজন ক্ষুদ্রকর্মী হিসেবে আপনার চ্যালেঞ্জ আমি গ্রহণ করলাম। নেতাকে পরে আপনি আগে কর্মীদের সামলান। আপনি কি করতে পারেন, আমরা দেখবো। আপনাকে রাজনৈতিকভাবেই প্রতিহত করবো। জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চলছে এবং চলবে। কোন ষড়যন্ত্রই তা রুখতে পারবে না। 


কর্মী সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন কবীর মৃধা, মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. জুয়েল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান কমল ও মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ প্রমুখ।

 

এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নগরীর আলী আহম্মদ চুনকা পাঠাগার মিলনায়তন প্রাঙ্গণে ত্বকী হত্যার বিচার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত মানববন্ধনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানকে চ্যালেঞ্জ করে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেছেন, ‘নারায়ণগঞ্জকে জিম্মি করে রেখেছে একটি পরিবার। মাঝে মধ্যে আস্ফালন দেন শামীম ওসমান। আপনি ঘুঘু দেখেছেন কিন্তু ঘুঘুর ফাঁদ দেখেননি। 

 

তিনি বলেন, আপনি ওইদিন রাইফেল ক্লাবে বলেছেন, আপনি হুকুম দিলে শুধু মাথা দেখা যাবে মাটি আর দেখা যাবে না। আসেন না বাপের বেটা হলে হুকুম দেন! পরে থাক আমাদের মাথা আর সরকার সরকারের কাজ করুক। হুমকি আমাদেরকে দিবেন না। আপনার হুমকি, আপনার ধমক এবং আপনার ক্ষমতা জেনেই কিন্তু আমরা রাজপথে নেমেছি। আমরা বলেছি ত্বকী হত্যার বিচার না পাওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বো না। আপনি আপনার ভাই সেলিম ওসমান, আপনার চন্দন, খোকন যে সব নেতারা আছে এবং খোদ এই মামলার আসামি আজমেরী ওসমানকে নিয়ে আসেন।’ 

 

এ সময় সাংসদ শামীম ওসমানকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আস্ফালান করবেন না। আপনার বহু আস্ফালন দেখেছি। আপনার আস্ফালন দেখতে দেখতে বহু দিন কেটে গেছে। ফতুল্লাবাসীকে ডুবিয়ে নারায়ণগঞ্জ নিয়ে কথা বলেন। এত কথা যে বলেন, বলার আগে বুঝেন না, কি কথা বলছেন। মিথ্যা কথা বলার একটা সীমা থাকা দরকার। আপনি একটা চরম মিথ্যাবাদী। আপনি শুধু বানিয়ে বানিয়ে কথা বলেন। আপনি মৃত্যুর কথা বলেন কিন্তু আপনার মৃত্যুর ভয় নাই।’ 

 

মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, ‘আপনি তো জনপ্রতিনিধি। তাহলে আপনি ত্বকী হত্যার বিচার চান না কেন? আজকে কেন চঞ্চলের মা কেঁদে বেড়ায়? আজকে ভুলু সাহার পরিবার কেন বিচার পায় নাই? আর মিঠু তো আপনার দলের লোক যাকে ওপেন রাজপথে হত্যা করা হলো। সেই মিঠুর বিচার চান না কেন? শুধু নিজের বেলাতেই ষোলো আনা। আপনার দিন শেষ হয়ে গেছে শামীম ওসমান। মানুষ আপনার ভেল্কিবাজি ধরে ফেলেছে। ওইসব আজেবাজে কথা বলে কোনো লাভ হবে না। প্রধানমন্ত্রী আপনার পক্ষে থাকতে পারে কিন্তু এমন সময় আসবে যে সাধারণ মানুষ আপনার পক্ষে আর থাকবে না। আমি আপনাকে আবারও ওপেন চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, আর একবারও বলবেন না যে আপনি হুকুম দিলে সব তছনছ হয়ে যাবে। তছনছ করার ক্ষমতা আপনার নাই।’

 

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২ আগস্ট রাতে শহরের নবীগঞ্জ ফেরী ঘাট এলাকা থেকে সাইফুদ্দীন আহমেদ দুলাল প্রধানকে মাদকসহ গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।  সে সময় তার ৫ সহযোগীকেও আটক করে ডিবি পুলিশ। তারা হলেন, কামাল হাসান (৪৭), মনির হোসেন মনু (৫০), তানভীর আহম্মেদ সোহেল (৪১), মো. মজিবর রহমান (৫২)। 

 

তখন পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডিবি পুলিশ সদস্যরা গোপন সূত্রে জানতে পারেন যে, একটি সাদা মাইক্রোবাসে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী মাদক নিয়ে নবীগঞ্জ ঘাট পার হচ্ছে। পরে ডিবি’র একটি দল নবীগঞ্জ ঘাট অতিক্রম করার সময় গাড়িটি আটক করে। গাড়ি ও যাত্রীদের তল্লাশি করে ৫০ বোতল ফেনসিডিল ও  নগদ ৩২ হাজার টাকা জব্দ করে। ওই গাড়িতে ছিলেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দীন আহমেদ দুলাল প্রধান।

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাদকের সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা কাউন্সিলর দুলাল স্বীকার করেছেন বলেও জানায় পুলিশ। তিনি জানিয়েছেন, কাউন্সিলর এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ের আড়ালে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফেনসিডিলের ব্যবসা করে আসছিলেন।
 

এই বিভাগের আরো খবর