শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

এনায়েতনগর বিএনপিতে এবার পদ বাণিজ্যের অভিযোগ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২৩  

 

# সাত লাখ টাকা দিয়ে সাইনিং পাওয়ার এনেছে যুগ্ম আহবায়ক শাহাদাৎ

 

 

এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির ১নং যুগ্ম আহবায়ক শাহাদাৎ হোসেন এবং সদস্যসচিব মাহবুবুর রহমান সুমন পদ বানিজ্যে মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের যে ৩৯ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন তারা এ প্রতিনিধিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। আর তাদেরকে সহায়তা করছেন খন্দকার মনিরুল ইসলাম। ফলে এই ইউনিয়নে বিএনপির রাজনীতিতে চরম বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পরেছে।

 

এদিকে ৯নং ওয়ার্ডে যারা পদত্যাগ করেছেন তারা হলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমির আলী, সহ-সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন, মো. মুজাহিদুল ইসলাম (সেলিম), আনোয়ার হোসেন খান, মোঃ মোকলেছুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলিম ফালান, সহ-সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রুমেন, কোষাধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন, প্রচার সম্পাদক মো. লিটন, দপ্তর সম্পাদক আ. কাদির প্রধান, যুব বিষয়ক সম্পাদক চয়ন শিকদার, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. মুকুল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আ. কাদির, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মোসা. সম্পা আক্তার, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মো. মোস্তাক।

 

মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক মো. শাহীন, ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ইসরাত জাহান বৃষ্টি, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, সদস্য এড. মো. সিরাজুল ইসলাম, জামিল হোসেন খান স্বাধীন, আলামিন শিকদার মাইজ ভান্ডারী, পেয়ার আলী ভূঁইয়া, নিয়ামুল হোসেন বাবুল, ইয়াকুব খান বাবুল, তাহেরা বেগম, মাসুমা আক্তার, ন্যান্সী, স্বপন মাদবর, জসিম, আনোয়ার হোসেন, রনি সরকার, খোকন, পিয়ার আলী, গোলাম সারোয়ার, মনির হোসেন, মাহবুব রহমান, হানিফ।

 

এদিকে বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম পদত্যাগ পত্রে লিখেছেন, আমি মো: কামরুল ইসলাম। নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থানাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এনায়েতনগর ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড কমিটিরসহ সাধারণ সম্পাদক। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জন্মলগ্ন থেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর আদর্শে উজ্জ্বীবিত হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে থাকাবস্থায় ২০০১ইং সনে এনায়েতনগর ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি।

 

বর্তমানে অদক্ষ, অযোগ্য ব্যক্তিবর্গ দ্বারা এনায়েতনগর ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড কমিটি গঠিত হওয়াতে উক্ত কমিটিতে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয় বিধায় বর্তমান কমিটি থেকে আমাকে পদত্যাগ প্রদানের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। আরো উল্লেখ্য যে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর আদর্শে উজ্জ্বীবিত হয়ে আমৃত্যু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)'র সক্রিয় রাজনীতির সাথে একজন সৈনিক হিসাবে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে যাবো।

 

এদিকে সর্বস্থরের নেতাকর্মীরা আরো জানান, ফতুল্লা থানার এনায়েতনগর ইউনিয়নে বিএনপির রাজনীতিতে চরম বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পরেছে। তারা বলেন মনিরুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জে একজন বহিরাগত ব্যক্তি হলেও ২০০১ সালের নির্বাচনের পর ওই সময়কার এমপি আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন তাকে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি করেন। কিন্তু গোটা ফতুল্লা থানায় তার কোনো কর্মী বাহিনী নেই। এমন কি তিনি যে এলাকার বাসিন্দা সেই এলাকায়ও তার কোনো কর্মী নেই।

 

অথচ ৯নং ওয়ার্ডটি গঠন করা হয়েছে তার নির্দেশনায়। তিনি এলাকার যোগ্যতম নেতৃত্বকে মাইনাস করে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করেছেন। যার ফলে মনিরের উপর নাখোশ হয়েই নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করছেন বলে জানা গেছে। নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম কে শাহআলম পন্থী আর কে গিয়াস পন্থী এসব দেখে কমিটি গঠন করছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো মনির নিজেই এক সময় শাহআলম পন্থী ছিলেন।

 

পরে শাহআলম তাকে দিয়ে ফতুল্লা থানার সব কমিটি করিয়ে শেষে কিকআউট করে দেন। পরে বাধ্য হয়ে তিনি গিয়াসপন্থী বনে যান। আর তৃনমূল নেতাকর্মীদের বক্তব্য হলো তারা আসলে কেউ গিয়াস বা শাহআলমপন্থী নন। তারা বিএনপি করেন তাই দল যখন যাকে দায়িত্ব দেন তারা তখন তার নেতৃত্ব মানেন। অথচ মনিরুল ইসলাম এখন পন্থী খুঁজে বেড়াচ্ছেন। যার ফলে ওয়ার্ড বিএনপিতে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে বলে নেতাকর্মীরা জানান।

 

প্রসঙ্গত, এডভোকেট আলমগীরকে আহবায়ক করে এবং সুমন নামক একজনকে সদস্যসচিব করে এনায়েতনগর ইউনিয়ন কমিটি করা হয়েছে। কিন্তু সুমন এখন আর এডভোকেট আলমগীরকে পাত্তা দিচ্ছেন না। যার ফলে গোটা ইউনিয়ন ব্যাপী বিএনপির ভেতরে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পরেছে।এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর