বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

এসেছিলাম ঝড় মাথায় নিয়ে : প্রধানমন্ত্রী

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৭ মে ২০২১  

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর নানা বাধা-বিঘœ পেরিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসতে পারার জন্য তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘অনেক ঝড়-ঝাপটা ও বাধা অতিক্রম করে আমাকে আসতে হয়েছে। সেই দিন ঢাকার দুর্যোগময় আবহাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এসেছিলাম তো ঝড় মাথায় নিয়েই। সেদিন ৬০ মাইল বেগে ঝড় হচ্ছিল তখন আমি ট্রাকে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায়।’ 


 সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে বক্তব্য দিতে গিয়ে ১৭ মে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রসঙ্গ এলে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সঙ্গে যুক্ত হন।


বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে এবং আমার পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবো এমন দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক ঝড়-ঝাপটা ও বাধা অতিক্রম করে আমাকে আসতে হয়েছে। অনেক বাধা ছিল। তখনকার সরকার কিছুতেই আমাকে আসতে দেবে না। আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র। অনেক চিঠি পত্র পাঠানো। নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা। অনেক কিছুই করা হয়েছিল।’ সেই সময়কার সরকারের পক্ষ থেকে দেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন। তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তারা ছিল ক্ষমতায়। খুনিদের ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছিল তারা ক্ষমতায়। এ অবস্থায় কিন্তু আমি চলে এসেছিলাম। আমি কোনও কিছু চিন্তা করিনি। শুধু দেশের ভেতরে না, দেশের বাইরে আরও  অনেক ঝড়-ঝাপটা পেরিয়ে এখানে আসতে পেরেছি। এটাই সব থেকে বড় কথা।’ দেশে ফিরে আসার কারণ ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না। স্বাধীনতাকে আমার সফল করতেই হবে। এই প্রতিজ্ঞা আমার আর রেহানার সব সময় ছিল। এ কারণে চলে এসেছিলাম।’


তিনি জানান, সেদিন ৬০ মাইল বেগে ঝড় হচ্ছিল তখন আমি ট্রাকে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায়। এ জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই  সেই সময়কার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের। যারা আমাকে আমার অবর্তমানে দলের সভাপতি নির্বাচিত করেছিলেন। এটা আমি জানতামও না। তারপর থেকে যারা আমার পাশে ছিলেন, সব থেকে বড় কথা এদেশের জনগণের শক্তি, তা-ই ছিল আমার কাছে সবচেয়ে বড় শক্তি, যখন বাবা-মা, ভাই- বোন সব হারিয়ে এদেশে এসেছি। এরপর গ্রামেগঞ্জে যেখানেই গিয়েছি, সাধারণ মানুষের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। অনেক স্নেহ, দোয়া আমি তাদের কাছ থেকে পেয়েছি । আমার কাছে ওই শক্তিটাই সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল। এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত পেয়েছি।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫ সালের পরের ইতিহাস একেবারেই মুছে ফেলা হয়েছিল। একেবারে পুরো পরিবর্তন। তবে এখন একটা আত্মবিশ্বাস এসে গেছে, বাংলাদেশের ইতিহাস আর কেউ কখনও কোনোদিন বিকৃত করতে পারবে না। মুছতে পারবে না। এ জন্য  দেশের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। সেই সময় আমার সঙ্গে যারা দলের জন্য কাজ করেছেন, তাদের অনেকেই এখন আমাদের মাঝে নেই। অনেককে হারিয়েছি। তারপরও যারা আছেন,তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’
 

এই বিভাগের আরো খবর