শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

এড়ানো যাচ্ছেনা গ্যাস লাইনের বিস্ফোরণ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৩  

 

# গ্যাস ব্যবহার করায় সবাইকে সচেতন হতে হবে : ফখর উদ্দিন আহাম্মদ

 

 

নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনাগুলো অস্বাভাবিক দুর্ঘটনা। একের পর এক এমন ঘটনা ভাবিয়ে তুলছে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। যার কারণে একের পর এক বাসাবাড়িতে ও বিভিন্ন গার্মেন্টস এ গ্যাস বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যুর সংখ্যার সাথে মিলে তেমনি বেড়েছে আহতের সংখ্যাও অনেক। যার কারণ খুঁজে এখনো পাওয়া যায়নি বেশিরভাগগুলোই। জানা যায়, ২০২২ সালের তুলনায় এবার নারায়ণগঞ্জে ২০২৩ সালে তিনমাসে অনেকটা বেশি আগুনের ঘটনা বেড়েছে।  

 

তবে তার মধ্যে উল্লেখ্য ঘটনা হলো, শনিবার ১৮ মার্চ শহরে সব থেকে বড় ভোগ্যপণ্যের বাজার নিতাইগঞ্জে পুরানো একটি দোতলা ভবনের নিচতলায় ডালের গোডাউনে ধুপ জালানোর সময় হঠাৎ বিস্ফোরনে লেবার আওলাদ (৪০) নামে একজনের মৃত্যু হয় ও আহতদের অবস্থা আসংঙ্কা জনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে। আহতদের মধ্যে ২২ মার্চ সকাল পর্যন্ত ইকবাল নামের এক নিরাপত্তা কর্মী ও শাহজাহান নামের আরেক শ্রমিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে মারা যান। বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্থ দোতলা ভবনটি বুধবার (২২ মার্চ) এক্সেভেটর দিয়ে ভেঙে ফেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (এনসিসি)। এদিন সকাল থেকে ভবন ভাঙার কাজ শুরু করে একদল কর্মী।

 

এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের জালকুড়ি পশ্চিমপাড়া ঝুটপট্টি এলাকার মো. পিন্টুর ঝুটের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে আগুনে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহজামাল ওরফে শাহজালাল (৫২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ২ ফেব্রুয়ারি ভোরে এ অগ্নিকাণ্ডের শহরের খানপুর এলাকায় অবস্থিত বিদ্যুতের পাওয়ার সাপলাই স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মণ্ডলপাড়া ও হাজিগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের পাঁচটি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ৭ ফেব্রুয়ারি জালকুড়ি পশ্চিমপাড়া ঝুটপট্টি এলাকার মো. পিন্টুর ঝুটের গোডাউনে রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তাতে শাহজামাল ওরফে শাহজালাল (৫২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

 

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ফতুল্লা রামারবাগ এলাকায় একটি বাসায় গ্যাস লাইনের ছিদ্র থেকে সৃষ্টি বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডে আগুনে এক দম্পতিসহ পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধরা হচ্ছেন- মোতালেব গার্মেন্টসের অপারেটর আল আমিন সিকদার (৩০) ও তার স্ত্রী মেট্রো গার্মেন্টসের শ্রমিক সুখী আক্তার (২৫), আলেয়া বেগম (৬৫) ও তার ছেলে জামাল (৪৫) এবং রাজমিস্ত্রী রফিক (৩৫)। ২৮ ফেব্রুয়ারী রূপগঞ্জ উপজেলার ভূলতা এলাকার নান্নু স্পিনিং মিলে এবং বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা এলাকার এইচপি কেমিক্যাল কারখানায় এ অগ্নিকাণ্ড হয়।

 

২ মার্চ মঙ্গলবার বেলা সোয়া একটায় রূপগঞ্জ উপজেলার ভূলতা এলাকার নান্নু স্পিনিং মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিটের কর্মীরা পরে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। এবং বেলা ১টা ৩৫ মিনিটে আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা এলাকার এইচপি কেমিক্যাল কারখানায় এ অগ্নিকাণ্ড হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট কাজ করছে।গত ১২ মার্চ মাসদাইর শুভন গামের্ন্টস এর সামনে খন্দকার ম্যানশনের ষষ্ঠ তলায় ৬তলায় ফ্ল্যাটে গ্যাস লিকেজ থেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরনে মা ও শিশু সন্তান দগ্ধ হয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। দগ্ধরা হলেন-কুলসুম বেগম (২৫) ও তার ৩ বছর বয়সী ছেলে খালিদ। স্থানীয়রা দগ্ধ মা ও সন্তানকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেছে।  

 

নারায়ণগঞ্জ সচেতন মহল বলেছে, আমাদের অসাবধানতার জন্য এসব আগুনের ঘটনা ঘটছে। তাই আমাদের আরো অনকে বেশি সচেতন হতে হবে। যাতে আমাদের একটু ভুলের জন্য পুরো পরিবার শেষ হয়ে না যায়। সকলে গ্যাস ব্যবহার এর প্রতি যন্তবান হতে হবে। সকলের বাচ্চাদের আরো সাবধানে রাখতে হবে যাতে তারা গ্যাস এর সামনে যেতে না পারে। ফায়ার সার্ভিস এর পক্ষে থেকে আরো বেশি তদারকি করার প্রয়োজন। কারন নারায়ণগঞ্জ এর ফায়ার সার্ভিস এর ঠিক মত তদারকির অভার রয়েছে।

 

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এর উপ সহকারী পরিচালক মো. ফখর উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, যারা গ্যাস ব্যবহার করেন সকলে সবার আগে আরো বেশি সাবধান হতে হবে। যারা বাসাবাড়ীতে গ্যাস এর সিলিন্ডার ব্যবহার করেন তাদের নজর রাখতে হবে যে কোন গ্যাস লিক হয়েছে নাকি। যদি ঘরের দরজা জানালা বন্ধ থাকে তাহলে সবার আগে সেগুলো খুলে নিতে হবে যাতে কোন সমস্যা না হয়। যদি ঘরের ভিতরে গ্যাস থাকে তাহলে আগুন জালানো যাবে না। বিশেষ করে গার্মেন্টস ও শিল্পপতিষ্ঠানের গ্যাস সব সময় চেক করে নিতে হবে।

 

কারন সেখানে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করে তার জীবন যাতে কোন ভাবে মৃত্যু ঝুঁকিতে না পরে। আমাদের কোন ইঞ্জিনিয়ার নেই যার কারনে আমরা কোন ভবনটি ঝুঁকিতে আছে সেটা আমরা বুঝতে পারি না। সিটি করপোরেশন ইঞ্জিনিয়াররা যেটাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে ঘোষণা দেন আমরা সেটার জন্য কাজ করতে পারি।

এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর