ওসমানদের বিপক্ষে দাঁড়াতে সাহস পেল না আ.লীগ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৫২ পিএম

# স্বতন্ত্র প্রার্থীতায় কোন বাধা ছিল না
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হাওয়া পুরোদমে বইছে। নারায়ণগঞ্জ-৪ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন দুটিতে শক্তিশালী প্রার্থী না থাকায় আবার দুই সহোদরই সংসদ সদস্য হিসেবে বহাল থাকছে। অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম ওসমান এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমান রয়েছেন।
তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আলোচিত তেমন কোন ব্যক্তি প্রার্থী নাই। এদিকে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে দাপুটে এক পরিবার ওসমান পরিবার। পরিবারটির সদস্যরা ব্যবসা ও রাজনীতির দুই ক্ষেত্রেই পরিচিতি পেয়েছেন প্রচণ্ড প্রতাপশালী হিসেবে। এ পর্যন্ত পরিবারটির তিন প্রজন্মের পাঁচ সদস্য সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
এদিকে ওসমান পরিবারের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিত্ব নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান। জেলার রাজনীতিতে এখনো তাকে ধরা হয় অপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে। তার ভাই সেলিম ওসমান এমপি ব্যবসায়ী পাশাপাশি রাজনীতিবিদ হিসেবেও পরিচিত। পোশাক খাতের নিটওয়্যার উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
তাদের প্রয়াত ভাই নাসিম ওসমানও ছিলেন জাতীয় সংসদের সদস্য। তাদের পিতা একেএম শামসুজ্জোহা ছিলেন সত্তরের নির্বাচনে বিজয়ী জনপ্রতিনিধিদের একজন। একেএম শামসুজ্জোহার পিতা খান সাহেব ওসমান আলীও ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য। সব মিলিয়ে রাজনীতিতে এই পরিবার আগে থেকেই প্রতাপশালী।
অপরদিকে জানা যায়, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে একই দলের ডামি প্রার্থী রাখার নির্দেশনা দেন। এই ক্ষেত্রে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে শামীম ওসমান থাকলেও তার বিপক্ষে আওয়ামী লীগের ডামি প্রার্থী রাখা হয় নাই। কিংবা ডামি প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে কেউ সাহস করে নাই।
যদিও এই আসন থেকে কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউসার আহম্মেদ পলাশ আলোচনায় ছিলেন। এমনকি তিনি এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছে। কিন্তু দল থেকে মনোনয়ন না পেলেও তার স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে কোন বাধা ছিল না। তিনি তা হন নাই। আর এতে করে নৌকার প্রার্থী জয় ছিনিয়ে আনা সহজ হয়ে যায়।
বিপরীতে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটি দীর্ঘ দিন যাবৎ জাতীয় পার্টির দখলে রয়েছে। ২০১৮ সনের একাদশ নির্বাচনের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জোরালো ভাবে দাবী জানিয়ে আসলেও তাতে কোন কাজ হয় নাই। তাদের এই দাবী দলীয় সভানেত্রী কোন কর্ণপাত করেন নাই। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে কোন প্রার্থী ঘোষনা করা হয় নাই। এই আসন থেকে যারা নৌকার মনোনয়ন চেয়েছে তারা হতাশ হয়ে এখন অনেকটা বেকার সময় পার করছে।
তাছাড়া আওয়ামী লীগ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিলেও এই আসন থেকে নৌকান মনোনয়ন প্রত্যাশী কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে সাহস করেন নাই। কেননা স্বতন্ত্র প্রার্থীতার ক্ষেত্রে তাদের কোন বাধা ছিল না। এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমানকে সমর্থনও দেন নাই। তবে আওয়ামী লীগে হেভিওয়েট প্রার্থী থাকা সত্বেত্ত ভোটে না দাড়ানোর জন্য সেলিম ওসমান নির্ভার।
দলীয় সুত্রমতে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের একাধিক হেভিওয়েট নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছে। কিন্তু এখানে আওয়ামী লীগ থেকে কোন প্রার্থী ঘোষনা করা হয় নাই। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এড. আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জল নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন চেয়েছে।
এমনকি তারা বিভিন্ন সভা সমাবেশে নৌকার জন্য দাবী জানিয়েছেন। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে উম্মুক্ত থাকলেও তারা কেউই সেলিম ওসমানের বিপক্ষে গিয়ে প্রার্থী হওয়াস সহাস দেখাতে পারে নাই। তবে কি ওসমান পরিবারের কাছে এই হেভিওয়েট প্রার্থীরা রাজনীতির মাঠে ধরাশায়ী হয়ে গেলেন এমনটাই আলোচনা চলে রাচনৈতিক অঙ্গনে। তবে সব কিছু মিলিয়ে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পারি দিতে পারলে ওসমান পরিবারের দুই সহোদর সফল। কেননা তারা অনেকটা নিশ্চিত ভাবে আবার এমপি হচ্ছেন। এস.এ/জেসি