শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

করোনাভাইরাস : ৩১ মার্চ পর্যন্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২০  

ডেস্ক রিপোর্ট (যুগের চিন্তা ২০৪) : করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সোমবার (১৬ মার্চ) শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।   


এদিকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় শিক্ষার্থীদের গ্রীষ্মকালীন ছুটি এগিয়ে নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 


১৮ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস–পরীক্ষা সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। ৩৬ জন শিক্ষকের অভিমতের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আতঙ্কে রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উপস্থিতি কমে আসছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, চুয়েটসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন শুরু করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরাও বিবৃতি দিয়ে ছুটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।


শিক্ষা মন্ত্রণালয় এত দিন বলে আসছিল এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু গতকাল রোববার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হবে নাকি বন্ধ রাখা হবে, সেটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিষয়।


শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মত দিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া উচিত। ইতিমধ্যে করোনা-আতঙ্কে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বড় অংশ ক্লাসে যাওয়া থেকে বিরত থাকছেন।

এদিকে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে। চলতি মাসের  ৮ তারিখে করোনা ভাইরাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংবাদের পর অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। অভিভাবকরা জানিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী নিজে থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।


নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। কিন্তু করোনাভাইরাস আতঙ্কে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি প্রায় ৩০-৪০ ভাগ কমে গিয়েছিল। আমি মনে করি সরকার একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন বন্ধ হলে এটা পরে ক্লাশ করে এটা পুষিয়ে নেয়া যাবে।


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রওশন-ই-ফেরদ্দৌস জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। 


নারায়ণগঞ্জ আইডিয়াল স্কুলের এক অভিভাবক জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে বাসা থেকে সবাই ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিতে বলেছে। তাই আমরা স্কুলে পাঠানো আগে থেকেই বন্ধ রেখেছি। অবশ্য শহরের চেঞ্জেস স্কুলসহ বেশ কিছু ইংলিশ স্কুল গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।



গতকালও রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি কম ছিল। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম গতকাল তাঁর প্রতিষ্ঠানে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ উপস্থিতির কথা জানান। অনেক অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না।

 

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফওজিয়া বলেন, গতকাল চতুর্থ শ্রেণির প্রভাতি শাখায় উপস্থিতি কম ছিল। আর দিবা শাখায় উপস্থিতি ছিল ৫০ শতাংশের বেশি।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৬টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের মধ্যে অন্তত ৪০টির শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন। বুয়েটের শিক্ষার্থীরা আগের দিনের মতো গতকালও কোনো ক্লাস করেননি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাস বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সব বর্ষের শিক্ষার্থীরা আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।


রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (রুয়েট) শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের শিক্ষার্থীরাও ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। (তথ্যসূত্র : প্রথম আলো)

এই বিভাগের আরো খবর