শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কাউন্সিলর মতির এ কেমন আচরণ

যুগের চিন্তা  রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৫ মার্চ ২০২৩  


# মানুষকে আটকে রাখার অভিযোগ

# উপস্থিত নেতা কর্মীরা হতভম্ব
 

এক দিকে আগামী নির্বাচন ঘিরে নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র আলোচনা। অপরদিকে জেলা মহানগর থানা ওয়ার্ড পর্যায়ের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন নিয়ে আলোচনা। কিন্তু থানা থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে আলোচন সমালোচনার শেষ নেই। এমনকি সম্মেলন গুলোতে নানা বিতর্ক তৈরী হয়ে রয়েছে। সেই সাথে সম্মেলনে নানা বিতর্ক কর্মকান্ডের মাধ্যমে শহর জুড়ে সমালোচনা হচ্ছে। 

 

 

এদিকে গতকাল মহানগর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৯টি ওয়ার্ডের সম্মেলন শেষ হয়েছে। গতকাল নাসিক ৪,৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মেলন শেষ হয়। কিন্তু এই সম্মেলনটি সিদ্ধিরগঞ্জ ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। তবে একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ তুলেছেন তাদের ডেকে নিয়ে সম্মেলন স্থল ভরা হয়।

 

 

কিন্তু কেউ বের হতে চাইলে তাদেরকে আর বের হতে দেয়া হয় নাই। তাছাড়া অনেককে ধমক দিয়ে জোর করে বসাতে দেখা যায় নাসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতিকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, তিনি কয়েকজন মহিলাকে নিয়ে বের হতে চাইলে তাকে জোর করে গেটে আটকে দেয়া হয়।

 

 

তখন যুবলীগ সভাপতি ও নাসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি তাকে ধমক দিে বলেন তোমাকে আসতে কইছে কে। কেন আসছো। এই জনপ্রতিনিধির কান্ডে উপস্থিত নেতা কর্মীরা হতবাক হয়ে যান।

 

 

আবার অনেকে প্রশ্ন তুলেন, একজন জনপ্রতিনিধির আচরণ কি করে এমন হতে পারে। তাদের কাছে নাকি আবার মানুষ মন খুলে কথা বলতে পারবে কী করে। তার এই আচরণ নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ তথা পুরো নারায়ণগঞ্জ জুরে আলোচনা হচ্ছে। 

 

 

তার পাশে আরেক জন বলেন, সম্মেলন থেকে কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী নামাজ পড়ার জন্য বের হতে চাইলে তাকে পর্যন্ত বের হতে দেয় নাই গেটে দায়িত্বে থাকা আরিফ, সোহেল, লিমন। একপর্যায়ের এক গণমাধ্যম কর্মীর সাথে তাদের মাঝে তর্কবিতর্ক তৈরী হয়। আরিফ বলে, কাউন্সিলর মতি সাহেব কাউকে বের হতে দিতে নিষেধ করছে।

 

 

তাছাড়া গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় দেয়ার পরেও কার্ড দেখতে চান। পরে এক নেতা এসে বলেন এই তোমরা এই সাংবাদিকের সাথে তর্ক করছো কেন। পরে তারা চুপ হয়ে যায়। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে গতকালকের সম্মেলনে পানি আক্তারের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। তিনিও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওয়ার্ডের সভাপতি হতে চায়। যা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।  

 

 

দলীয় সূত্র মতে জানা যায়, অপরিদেক ২৫ ফেব্রুয়ারি নগরীর খানপুর পোলস্টার ক্লাব মাঠে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১০, ১১, ১২ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২৬  ফেব্রুয়ারি তোলারাম কলেজ মাঠে নাসিক ১৩, ১৪, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের ওয়ার্ড কমিটির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এই দুই সম্মেলনে লঙ্কাকাণ্ড ঘটে যায়।

 

 

যা নিয়ে রীতিমত খোদ দলীয় নেতা কর্মীরা হতবাক হন। আর তা হলো সম্মেলনের আলোচনা চলাকালীন সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ১০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিরাজ এসে বলেন, ওই দিন যে ১০ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন এটা আমাদের জানা ছিল না। তাছাড়া সদর থানার মাঝে ১০ নম্বর ওয়ার্ড পরে না।

 

 

পরে সম্মেলন শেষে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন সিরাজের ঘার ধরে বলেন, তোর কাছে আমার রাজনীতি শিখতে হবে। তার এমন কান্ডে নানা সমালোচনা তৈরী হয়।  এছাড়া প্রশ্ন তোলেন সিদ্ধিরগঞ্জের ওয়ার্ডের সম্মেলন কেন সদর থানা এলাকায় হবে।

 

 

তাছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জের দায়িত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি শাহানারা ইয়াসমিন। ওই থানার ওয়ার্ডে যারা সভাপতি হবে তাদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নেতৃবৃন্দের নিকট জমা দিতে বলা হয়েছে। 

 

 

সূত্র জানায়, ২৬ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩, ১৪, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এই সম্মেলনেও আরেক লঙ্কাকাণ্ড ঘটে যায়। এখানে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সবুজ চন্দ্র দাস বলেন, আমাদের এলাকায় কিংবা মহল্লায় যারা আছে সবাই আওয়ামী লীগ করে। তাই আমিও আওয়ামী লীগ করি। 

 

 

এসময় তাকে জাতীয় পরিষদের সদস্য টিপু সুলতান জিজ্ঞেস করে তিনি এর আগে ছাত্রলীগ করেছে কি না? তখন সবুজ চন্দ্র বলেন, ছাত্রলীগ-ছাত্রদল যখন যে দল ডাকে সেই দলেই যাই। তার এই বক্তব্য নিয়ে পুরো সমাবেশ হাসিতে পরিণত হয়। এছাড়া রাজনৈতিক মহল প্রশ্ন তোলেন তাদের কে কেন ধরে এনে প্রার্থী করা হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকলীগ করার মত কী নেতা কর্মীর অভাব পড়েছে।

 

 

আবার নেতারা তাদের বক্তব্যে বলেন, মাদক ব্যবসায়ী, চাদাঁবাজদের কমিটিতে ঠাই হবে না। কেননা এই ধরনের ব্যক্তিরা নেতা হলে তা দলের জন্য ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। আর এ কারণে স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিতর্ক তৈরী হচ্ছে। তাই রাজনৈতিক সচেতন মহল মনে করেন একের পর এক লঙ্কাকান্ডে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে বিতর্ক তৈরী হচ্ছে।  এন.হুসেইন/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর