শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কার ইন্ধনে দেলোয়ার কলাগাছিয়ায় অত্যাচার চালাচ্ছে: কাজিম উদ্দিন

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২১  

বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য অনুষ্ঠিত কলাগাছিযা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজিম উদ্দিন প্রধান বলেছেন, নির্বাচনে হারজিত আছেই। কিন্তু নির্বাচনের পরে আমার নেতাকর্মীদের, আমার সমর্থকদের, আমার মা ও ভাই-বোনদের উপরে যে রকমভাবে দেলোয়ার প্রধানের পেটোয়া বাহিনী হামলা চালাচ্ছে মনে হচ্ছে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক না। আমরা রাজাকারের মতো পরিণত হয়েছি। এ বিষয়ে আমি আমার জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহবান রাখছি, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হওয়ার পরে আমাদের নেতাকর্মীদের উপরে যেভাবে হামলা মামলা চলছে তা রক্ষা করার জন্য সু-দৃষ্টি দিবেন বলে আমি জোর দাবী জানাচ্ছি। কার ইন্ধনে ও সাহসে দেলোয়ার প্রধান পূর্বেকারের মতই অত্যাচার ও নির্যাতন চালাচ্ছে জানতে চান তিনি। শুক্রবার নির্বাচনের পরের দিন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জায়গায় হামলা ও মারধরের ঘটনার এক প্রতিক্রিয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় ফরাজীকান্দায় অবস্থিত বন্দর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়া এসব কথা বলেন তিনি।
 
তিনি আরো বলেন, আমি জানতে পেরেছি নির্বাচনে যারা আমার কর্মী ছিল নির্বাচনের পর তাদের বাড়িঘরে দেলোয়ার প্রধানের ছেলে সোহান প্রধানের নেতৃত্বে হামলা করা হয়েছে। এই হামলায় আবু বক্কর, এমরান, বিজয়, জামান, রাজন, আনাস, আসিফ, পিয়ার, আরমান প্রধান, লাভলু, সামছুল হক, সাদ্দাম, ফজলুল করিম, মো: হোসেন, মো: আসাদ, আব্দুল মোতালেব, সেলিম, সোহেল, রাজু, নিহাদ, হানিফসহ ২০ থেকে ২৫ জন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায় বলে তার কাছে খবর এসেছে উল্লেখ করে তিনি জানান, শুক্রবার সকালে প্রকাশ্যে দক্ষিণ সেলসারদীর  আবু হালিমের দোকানে হামলা চালিয়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করে। এ সময় হালিম নৌকা দিয়ে খাল পার হয়ে আলী নগর এলাকায় গিয়ে প্রাণে রক্ষা পায় বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান ২ নং মাধবপাশা এলাকার ইউসুফ প্রধানের ছেলে মুছা মিয়ার মুরগীর ফার্মে হামলা চালিয়ে দেলোয়ার বাহিনী প্রায় ২ শতাধিক মুরগী লুট করে নিয়ে যায়। ফরাজীকান্দা বালিয়া এলাকার ইয়াসমিনের প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার মূল্যের গরুকে বিষ সেবন করিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। তার গরুর অবস্থা আশংকাজনক। আমরা এর প্রতিবাদ করতে পারতাম। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি আমারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা বন্দর থানার ওসিকে অবগত করেছি এবং থানায় গিয়ে অভিযোগ দেবো।
 
তিনি স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের প্রতি বিশেষ আহবান করে বলেন, এখনও সময় আছে দেলোয়ারকে সামলান। আমি আওয়ামী লীগ করি, অনেক কিছু বলতে চাইলেও পারি না। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দেলোয়ার বাহিনী যে অপকর্ম ও তাণ্ডব শুরু করেছে তা মানতে কষ্ট হচ্ছে। পরাজিত হয়ে ক্ষমতাসীন দলের যে কাজ আমাদের করার কথা, সেটা দেলোয়ার বাহিনী করছে। দেলোয়ারকে কে সাহস দিচ্ছে তাও দেখতে হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
 
কাজিম উদ্দিন প্রধান বলেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় হবেই। ১জন জয়ী হবে এটাই স্বাভাবিক।  আমার নির্বাচন করার অপরাধে দেলোয়ারের সন্ত্রাসী পেটুয়া বাহিনী দোকান ভাংচুর, লুটপাট, বাড়িঘরে হামলা, নিরীহ প্রানী গরুকেও ছাড় দেয়নি। দেলোয়ার বাহিনীকে আবারও হুশিয়ার করে তিনি বলেন, তুমি দেলোয়ার এখনও সময় আছে শোধরাও। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতাদের জানিয়েছি। কেন্দ্রীয় নেতারা অচিরেই তদন্ত করতে আসবে।
 
এবিষয়ে চেয়ারম্যান দেলোয়র হোসেন প্রধানের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
 
এবিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা জানান, খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থল ঘুরে এসেছি। আমাকে মৌখিক ভাবে বলেছে কিন্তু থানায় এখনও কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
জানাগেছে, গত শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় পাটির প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের কর্মীরা আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজিম উদ্দিন প্রধানের কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ১০ জনকে পিটিয়ে আহতসহ বাড়িঘড় ভাংচুর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনায় থানায় একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে । হামলায় আহত জহির উদ্দিন বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তার ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভাংচুর, শো-কেছে থাকা ১০ ভরি স্বর্ণালংকার লুটপাট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কাজিম উদ্দিন প্রধান বলেন, আমার নৌকার পক্ষে কলাগাছিয়া ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, ইউছুফ মেম্বার, হালিম মিয়া, ইয়াসমিন, হান্নান প্রধান, জহির মিয়া, ইবরাহিম টুটুল, তাইজুল ইসলাম, মামুন কাজ করায় তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাদের পিটিয়ে আহত করে এবং তাদের বাড়ি ঘড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরসহ লুুটপাট করা হয়।

এই বিভাগের আরো খবর