মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ৫ ১৪৩০

কারাগারে বন্দীদের সাথে ঈদেও স্বজনদের সাক্ষাৎ হবে না

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০২১  

করোনার সংক্রমন থেকে রেহাই পাচ্ছেনা কেউই। যতই নিরাপদে থাকার চেষ্টা থাকুক না কেন, কোন না কোন ভাবে মরনব্যাধী করোনা ভাইরাস ঢুকে যাচ্ছে মানবদেহে। কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন কিংবা লকডাউন দিয়েও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছেনা করোনার সংক্রমনকে। এমন অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার করোনার থাবা থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। করোনার ২য় ওয়েভে এখনও সংক্রমণের শিকার হয়নি কারারক্ষী থেকে বন্দি পর্যন্ত কেউই।


বুধবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে দৈনিক যুগের চিন্তার সাথে একান্ত আলাপকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের সুপার মাহবুবুল আলম করোনা মোকাবেলার সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন।


তিনি বলেন, করোনা সংক্রমন বৃদ্ধির পর থেকে কারাগারে বন্দিদের স্বজনদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে বন্দিরা ৭ দিন পর পর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের স্বজনদের সাথে ১০ মিনিট করে কথা বলার সুযোগ পান। এভাবে আমরা বাইরের মানুষের কাছাকাছি আসা থেকে বন্দিদের দূরে রাখি।


তবে আসন্ন ঈদে স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। এই ব্যাপারে অধিদফতরের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি আমরা। তবে ধারণা করা হচ্ছে এবারও গত বছরের মত দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন জেলা কারাগারের জেলার শাহ রফিকুল ইসলাম।


তবে যারা নতুন বন্দি হিসেবে কারাগারে প্রবেশ করে তাদের ক্ষেত্রে কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় জানতে চাইলে জেল সুপার মাহবুবুল আলম বলেন, নতুন যেসকল বন্দি আসে তাদের আমরা ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখি। এর ভেতর তাদের অসুস্থতা দেখা দিলে তাদের দ্রুত ভিত্তিতে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করাই। ১৪ দিন পর তারা সুস্থ থাকলে অন্যান্য কারাবন্দিদের সাথে মেশার সুযোগ হয় তাদের।


তিনি আরও বলেন, নতুন বছরে এবং করোনার ২য় ঢেউয়ে এখন পর্যন্ত কোন কারারক্ষী, কারাবন্দি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। এর অন্যতম কারন কারাগারে প্রবেশ ও অভ্যন্তরে কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে যেভাবে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা কারাগারে বাধ্যতামূলক ভাবে সকলকে পালন করতে হয়। এর ফলে আমরা সকলকে করোনা ভাইরাস থেকে দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছি।


তবে গত বছর করোনার সংক্রমনে বেশ কিছু কারাবন্দিদের মুক্তি দেয়ার যে সুপারিশ এসেছিলো এবারও তেমন কোন পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, গতবার সারাদেশে কারা কতৃপক্ষ বিভিন্ন মেয়াদে দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের যাচাই বাছাই করে মুক্তি দিয়েছিলো। এবার এখন পর্যন্ত এমন কোন নির্দেশনা আমাদের দেয়া হয়নি। যদি নির্দেশনা দেয়া হয় তাহলে সেই অনুযায়ী আমরা আবারও সুপারিশ করবো।


উল্লেখ্য, গত বছর নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ২০৫ বন্দিকে মুক্তি দেয়ার জন্য কারা অধিদফতরের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করে জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ। একই বছরে প্রায় ১২ জন কারারক্ষী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলো। সেই বিবেচনায় এই বছর করোনা থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছেন জেলা কারা কর্তৃপক্ষ।
 

এই বিভাগের আরো খবর