মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৩ ১৪৩১

কুতুবপুর ইউপি নির্বাচনে কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন

সাদ্দাম হোসেন শুভ

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১  

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুতুবপুরে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না করলেও আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নৌকা পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ও সদস্য পদে একইভাবে দলীয় আনুকূল্য পেতে সংশ্লিষ্টরা দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের কাছে নিজের পক্ষে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। অনেকেই ঢাকায় গিয়ে দলের হাইকমান্ড ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নানা তদবির-সুপারিশ শুরু করেছেন।

 

এদিকে দলীয় প্রার্থীর বাহিরে অন্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এলাকায় জনগণ ও ভোটারদের নিকট দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করে নিরবে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। নিকট অতীতের নির্বাচন অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই মনে করছেন দলীয় হাইকমান্ডের কাছে সমর্থন আদায় করতে পারলে নৌকা প্রতীক নিয়ে ও অন্যান্য পদে দলীয় আনুকূল্য পেলে বিজয় সুনিশ্চিত। তাই এ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সুকৌশলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা উর্ধ্বতন নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের মাধ্যমে নিজ নিজ পক্ষে শক্তিশালী সমর্থক বলয় তৈরি করে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে ব্যস্ত রয়েছেন।

 

এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে না পারলেও বিভিন্ন খেলাধুলা, সংস্কৃতির অনুষ্ঠানে অনুদান দিয়ে জনগণের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করছেন। আবার অনেকেই মনোনয়ন ক্রয় করতে মোটা অংকের টাকা জোগাড়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা মনে করেন যে, মোটা অংকের টাকা দিয়ে মনোনয়ন ক্রয় করে নৌকার টিকেট বাগিয়ে নিতে পারলেই বিজয় সুনিশ্চিত। এমন ভাবনা থেকেই তারা টাকার জোগাড়ে ব্যস্ত হয়ে গেছেন। তবে একটি নিরপেক্ষ ভোট পর্যবেক্ষণ সূত্র মতে, কুতুবপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জেতার জন্য কেবল নৌকা প্রতীক নির্ভরতা যথেষ্ট নয়। প্রার্থীর ন্যুনতম গ্রহণ যোগ্যতা, অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যক্তি ইমেজের ভোট ব্যাংক ফ্যাক্টর হবে। পুরো কুতুবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় জমে উঠেছে ভোটারদের মাঝে নির্বাচনী আলোচনা। কে মনোনয়ন পাচ্ছেন আবার কে পাচ্ছেন না এসব নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ।

 

সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রাথমিক ভাবে যাদের নাম বলাবলি চলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিকদার মোহাম্মদ গোলাম রসুল আবারও নৌকা প্রতীক পেতে শতভাগ আশাবাদী। তার সঙ্গে নৌকা প্রতীক পেতে আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী জসিম উদ্দিন এবার নৌকার জন্য ছুটছেন। এই ইউনিয়নে তার সঙ্গে নৌকা প্রতীক পেতে জোর লবিংয়ে এগিয়ে চলেছেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কর্যনির্বাহী সদস্য আলহাজ্ব শাহ আলম গাজী টেনু, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও কুতুবপুর ইউনিয়ন ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী জাহাঙ্গীর আলম, কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক মুন্সী, কুতুবপুর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মীর হোসেন মীরু।

 

তবে এ ইউনিয়নে গতবার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে পরাজয় শিকার করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সিকদার মোহাম্মদ গোলাম রসুল। তিনি বেশকিছু দিন যাবত অসুস্থতার কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে রয়েছেন। তার প্রার্থীতা এবারও সুনিশ্চিত মনে করছেন ঘনিষ্ঠ সূত্র। আওয়ামী লীগের একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছেন, দলের জন্য ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। পাশাপাশি ব্যক্তি ইমেজ সহ মাঠের রাজনীতিতে জন সম্পৃক্ততা দেখা হবে। জনবিচ্ছিন্ন কাউকে মনোনয়ন সুপারিশ করা হবে না। অপরদিকে এবারের স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ ভূমিকা বজায় রাখলে তৃণমূল পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদে সঠিক ও স্বচ্ছ জনপ্রতিনিধি ঠাঁই পেতে পারেন বলে মনে করেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।
 

এই বিভাগের আরো খবর