বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

কুতুবপুরে বিতর্কিতদের হাকডাক !

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২১  

ঘনিয়ে আসছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী কোরবানীর ঈদের পরই অনুষ্ঠিত হতে পারে নির্বাচনি তফসিল। বিষয়টি মাথায় রেখেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা। ব্যতিক্রম ঘটেনি কুতুবপুর ইউনিয়নেও। ইউনিয়নটিতে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাসীরা। তবে, এই ইউনিয়নটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাসী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের সিংহভাগই বিতর্কিত।

 

ফলে এখনো পর্যন্ত কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে যোগ্য ও পরিচ্ছন্ন প্রার্থীর সংকট রয়েছে বলে মনে করছেন বোদ্ধা মহল। জানা গেছে, কুতুবপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাসী হিসেবে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করেছেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিম উদ্দিন, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল খালেক মুন্সী, সাবেক ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, কুতুবপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মীর হোসেন মীরু এবং পাগলা বাজার বহুমুখি সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি টেনু গাজী।  

 

অভিযোগ রয়েছে, এদের মধ্যে প্রত্যেকেই কোননা কোন ভাবে বিতর্কিত। বিশেষ করে মীর হোসেন মীরুর বিরুদ্ধে রয়েছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিস্তর অভিযোগ। মাদক ব্যবসা, অবৈধ অস্ত্র, হত্যা, হত্যার চেষ্টা, ভূমিদস্যুতাসহ চাঁদাবাজীর অভিযোগে বিশের অধিক মামলা রয়েছে মীরুর বিরুদ্ধে। এতো মামলার আসামী হয়েও স্বপ্ন দেখছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার। উদ্দেশ্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়া!

 

এদিকে, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনও কম বিতর্কিত নন। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা এবং মাদককারবারীদের সেল্টার দেয়ারও অভিযোগ উঠেছিলো। ইতিপূর্বে মাদক কারবারীদের সাথে তার মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও কৌশল সংক্রান্ত এক বৈঠকের অডিও রেকর্ড প্রকাশ পায় গণমাধ্যমে। যেখানে জসিম উদ্দিনের কণ্ঠেই স্পষ্ট শোনা যায়, মাদক কারবার নিয়ে তার বিস্তর পরিকল্পনার কথা। বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয় কুতুবপুর সহ গোটা ফতুল্লায়। বিতর্ক রয়েছে যুবলীগ নেতা খালেক মুন্সী ও তার ভাই মালেক মুন্সীকে নিয়েও। এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে কুতুবপুরের মুন্সীবাগসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজীসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বহু অভিযোগ রয়েছে।

 

অন্যদিকে, চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন একই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম। এতে করে, কুতুবপুরবাসীর মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। কেননা তিনি ছিলেন, ওয়ার্ড ইউপি সদস্য। সেখান থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের স্বপ্ন ইউনিয়ন বাসীর কাছেই হাস্যকর।


তাছাড়া, আরেক বিতর্কিত ব্যক্তি টেনু গাজীও ভেতরে ভেতরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে লবিং চালিয়ে যাচ্ছে বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে। টেনু গাজী ইতিপূর্বে পাগলায় কোরবানির পশুর হাট নিয়ে নিজ বলয়ের সাথে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছিলো। তাছাড়া, বিচারের নামে দুই ব্যক্তিকে মারধর করে রক্তাক্ত করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। গত বেশ কিছুদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের এই বিতর্কিত নেতারা ইউনিয়ণ পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন আঙ্গিকে নিজেদের জাহির করতে ব্যস্ত।

 

এদিকে, বর্তমান চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুকে নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। বিশেষ করে সেন্টু চেয়ারম্যান কুতুবপুরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে বিভক্ত করে রেখেছেন বলে স্থানীয় সূত্র গুলোর অভিযোগ। আর সেন্টু চেয়ারম্যান সাংসদ শামীম ওসমানের আনুগত্য স্বীকার করে এখন নানা ভাবেই নিজেকে আওয়ামী লীগার হিসেবে জাহির করার সু² প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বলা হচ্ছে, গতবারের মত এই বছরও তিনি সাংসদ শামীম ওসমানের আশির্বাদের আশায় আছেন। এবারও যদি তিনি শামীম ওসমানের আশির্বাদ পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেন, তাহলে স্থানীয় আওয়ামী লীগারদের মধ্যে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন। সবশেষ কে হবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আর কার পক্ষেই থাকবে সাংসদ শামীম ওসমানের আশির্বাদ তা নিয়েই কৌতুহল জেগেছে জনমনে। 


 

এই বিভাগের আরো খবর