শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কুনতং এ্যাপারেলস লিঃ এর শ্রমিকদের বকেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২১  

আদমজী ইপিজেডে অবস্থিত কুনতং এ্যাপারেলস লিঃ ফ্যাশন সিটি’র শ্রমিকেরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেন। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর চাষাড়ার প্রেসক্লাবের সামনে কারখানার শ্রমিক সীমার সভাপতিত্বে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

 

এসময় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক এস.এম. কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি রুহুল আমিন সোহাগ, কারখানা শ্রমিক রিনা, আঞ্জুমান আরা, জহির ও আনোয়ার।

 

এসময় নেতৃবৃন্দরা বলেন, ফ্যাশন সিটি মালিক কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বেপজা আইন অনুযায়ী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ অক্টোবর ১ মাস কারখানা লেঅফ করে। পরবর্তীতে আরও ৩ মাস অবৈধভাবে বেপজা আইন লঙ্ঘন করে কারখানা বন্ধ করে রাখে। শ্রমিকেরা ডিসেম্বর ২১ বকেয়া বেতনের জন্য ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসের ৭ তারিখে ইপিজেড এর গেটে অবস্থান করলে শিল্প ও থানা পুলিশ এবং বেপজা সিকিউরিটি মিলে বেপজা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শ্রমিকদের ব্যাপক মারধোর করে।

 

এ ঘটনায় ৫০-৬০জন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়। আবারও ৯ জানুয়ারী শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের জন্য ইপিজেড গেটে গেল কঠোর হামলা চালানো হয়। তারপর কারখানার শ্রমিকেরা গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম আইন মেনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ১২ জানুয়ারী মালিক কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে ৭ দফার ভিত্তিতে লাগাতার কঠোর কর্মসূচী পালন করে। ৩ ফেব্রুয়ারী আদমজী ইপিজেড কর্তৃপক্ষ, ৫ ফেব্রুয়ারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি এবং ৮ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। তীব্র আন্দোলনের ফলে বেপজা কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ১৫,১৬ ও ১৭ তারিখে শ্রমিকদের আইনগত প্রাপ্য পাওনা ১০০ শতাংশ থেকে ৩৬ শতাংশ পরিশোধ করে আরও ৬৪ শতাংশ বকেয়া প্রাপ্য পাওনা রয়েছে। শ্রমিকদের পে ¯িøপ দেয় ও অঙ্গীকার করে বেপজা কর্তৃপক্ষ বলে বকেয়া প্রাপ্য পাওনা আমরা অচিরেই পরিশোধের ব্যবস্থা করব কিন্তু আজ পর্যন্ত বকেয়া আইনগত প্রাপ্য পাওনা শ্রমিকেরা পায় নাই।

 

বক্তারা আরও বলেন শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, অর্জিত ছুটি, টার্মিনেশন ও মার্তৃত্বকালীন সুযোগ সুবিধার টাকা শ্রমিক কাজ করা অবস্থায় মালিকের নিকট আইন অনুযায়ী জমা থাকে, তাহলে টাকা পরিশোধে এত গড়িমসি, অজুহাত দেখিয়ে বিলম্ব কেন? শ্রমিকদের বকেয়া প্রাপ্য পাওনা আত্মসাৎ প্রচেষ্টাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার করার দাবি জানান। ২০২১ সালের ফ্রেব্রুয়ারী থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেল আজ অবধি পরিশোধ হয় নাই কেন। ইপিজেডস্থ শ্রম আইন আলাদা করেছে সরকার মালিকদের রক্ষা করার জন্য এবং শ্রমিকেরা নিরাপদ্দ কর্মপরিবেশ, শ্রম অধিকার নিশ্চিতভাবে যাতে পায় সেজন্য। শ্রমিকেরা তাদের পাওনা আদায়ের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করবে সেখানে শ্রমিকদের উপর হামলা তাদের নামে মামলা দেয়া হয়েছে কেন?

 

এই ৯ মাসে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি কারনে বাসাভাড়া গ্যাস বিল বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের সন্তানদের লেখাপড়া, পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা করতে না পারা সঞ্চয় না থাকার কারনে বিপদ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। তাহলে কি বেপজা কর্তৃপক্ষ, জেলা, শিল্প ও পুলিশ প্রশাসন মিলে শ্রমিকের অধিকার হরণ করতে চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে কি? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইপিজেড এর সমস্ত ভালোমন্দ দেকভাল করেন, তাহলে এই শ্রমিকরা আজকে রাজপথে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করছে তাদের খবর কি রাখেন না? 

 

অবিলম্বে শ্রমিকদের নামে অজ্ঞাত দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে বকেয়া প্রাপ্য পাওনা পরিশোধ করার আহবান জানান নেতৃবৃন্দ অন্যথায় শ্রমিকেরা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

এই বিভাগের আরো খবর