শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কুমুদিনী ক্যান্সার হাসপাতাল বাস্তাবায়নের দাবীতে মানববন্ধন

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২১  

নারায়ণগঞ্জ জেলার ১ কোটি জনগণের চিকিৎসা সেবা ও মান উন্নয়নে বাধাগ্রস্থ করতে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী অর্থলোভী নামধারী শ্রমিক নেতার ষড়যন্ত্র থেকে কুমুদিনী ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল এন্ড ক্যান্সার কেয়ার বাস্তাবায়নের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

 

শনিবার (১২ জুন) বিকেলে শহরের মেট্রোহলের মোড়ে চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলের সভাপতিত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী সংগঠন সংহতি প্রকাশ করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

 

এ সময় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নারায়নগঞ্জে কুমুদিনী ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সাইন্স এন্ড ক্যান্সার কেয়ার হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তরের উদ্বোধন করেন। এই হাসপাতালকে দ্রুত বাস্তাবায়ের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান ও ৪- আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান।

 

খানপুরে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ারের জমিতে ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরীর খরচ কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্টের পক্ষ থেকে বহন করার ঘোষনা দেন। কিন্তু একটি স্বার্থন্বেষী মহল কোন কারন ছাড়া এই কাজকে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছ এবং নির্মাণে বাধা দিচ্ছে। আর এই অপকর্মে নেতৃত্ব দিচ্ছে নামধার্রী শ্রমিক নেতা এড.মাহবুবুর রহমান ইসমাইল। নারায়নগঞ্জে কুমুদিনী ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সাইন্স এন্ড ক্যান্সার কেয়ার হাসপাতাল নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র করলে নারায়ণগঞ্জবাসী মেনে নিবে না। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী অর্থলোভী নামধারী শ্রমিক নেতা ও ষড়যন্ত্রকারীদের নারায়ণগঞ্জ থেকে বিতাড়িত করা হবে।

 

বক্তারা আরও বলেন, কুমুদিনীর সকল শ্রমিকদের শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের পাওনা পরিশোধ করেই জায়গা খালি করানো হবে। কিন্তু কিছু অবৈধ দখলদারদের উস্কানী দিয়ে রাস্তায় নামিয়েছে নামধারী কথিত শ্রমিত নেতা ইসমাইল। নারায়ণগঞ্জে যাতে এই হাসপাতাল না হয় তার জন্য এই সব ষড়যন্ত্র করছে। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী চাই নারায়ণগঞ্জে এই হাসতালটি নির্মাণ করা হোক। এত করে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী উপকৃত হবো। নারায়ণগঞ্জবাসীর স্বার্থ রক্ষায় আমরা নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। সামনে যদি আবারও এই হাসপালকে নিয়ে কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র  করা হয় তাহলে আমরা এ সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো এবং তাদেরকে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিতাড়িত করবো।

 

এ সময় মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাবকে নারী সাংসদ এড. হোসনে আরা বাবলী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি মোরশেদ সারোয়ার সোহেল, বাংলাদেশ হোসিয়ারি এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজল, বন্দর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক এহসানুল হক নিপু, বাংলাদেশ ইয়ান মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি সভাপতি লিটন সাহা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদেও সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া, নাসিক ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফি প্রধান, ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফজাল হোসেন, মহানগর স্বোচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার প্রধান, গোগনগর  ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুর হোসেন সওদাগর প্রমুখ।

 

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন গত ১৪ ফেব্রæয়ারি কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড ক্যানসার রিসার্চ (কিমস কেয়ার) ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। কুমুদিনী র‌্যালি বাগান নামে শ্রমিকদের বাসস্থানের ওই জায়গাতে নির্মিত হবে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ২৪২ বর্গফুট আয়তনের সেই হাসপাতালটি। থাকবে ৩০০ শয্যার সাধারণ হাসপাতাল, ৫০ শয্যার ক্যানসার রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা ব্যবস্থা, এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের জন্য মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, গবেষণা কেন্দ্র , ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরি ও হোস্টেল।

 

এরপর গত ২৯ মে কুমুদিনী ওয়েলফেয়াল ট্রাস্টের অধীন বেঙ্গল বিডি লিমিটেডের পাট কোম্পানির শ্রমিকদের ব্যানারে পুনর্বাসনের দাবি তুলে কাফনের কাপড় পরে প্রতিবাদ মিছিল করে। তাতে কুমুদিনী র‌্যালী বাগানে বসবাসরতদের একটি অংশ দাবী করেন, তারা কুমুদিনীর শ্রমিক। ওই ঘটনার পর গত ৮ জুন দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শ্রমিক নেতা, র‌্যালি বাগানের বাসিন্দা, পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে শ্রম আইন অনুযায়ী, সকল বৈধ শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করে তাদের (বসবাসরতদের) উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু ওই সভার সিদ্ধান্তে শ্রমিকনেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

এই বিভাগের আরো খবর