শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কেন্দ্রের অলসতায় ধুঁকছে জেলা ও মহানগর যুবদল

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১ জুন ২০২৩  

 

# দীর্ঘ ৯ মাসেও জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটি দিতে ব্যর্থ কেন্দ্র

 

 

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবদলের নতুন কমিটি দেওয়া নিয়ে বর্তমানে অলসতা করছে কেন্দ্রীয় যুবদলের নেতৃবৃন্দ। যার কারণে যে কোন সময় ঝিমিয়ে পরতে পারে জেলা ও মহানগর যুবদল। জানা গেছে, দীর্ঘ ৭ মাস যাবৎ জেলা যুবদলের কমিটিতে আহ্বায়কের পদ ফাঁকা। যার কারণে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি পুরো জেলা যুবদলের ভাড় একা নিজ কাঁদে বহন করে যাচ্ছে।

 

এককভাবে এতো বড় একটি জেলা যুবদলের সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মীদেরকে রাজপথে উজ্জ্বীবিত রেখেছেন তিনি। যার কারণে জেলা যুবদল সংগঠনটি একটু হলে ও রাজপথে উজ্জ্বীবিত ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু সংগঠনটি বর্তমানে এককভাবে মশিউর রহমান রনি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একটা জেলা পুরোটা এককভাবে কন্ট্রোল করা সম্ভব না। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ও সংগঠনিকে আরো শক্তিশালী করতে জেলা যুবদলের কমিটি অত্যন্ত জরুরী।

 

অপর দিকে মহানগর যুবদলে বর্তমানে যারা নেতৃত্ব নিয়ে যাচ্ছে মন্তু ও সজল তাদের বিরুদ্ধে কমিটি নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে তারা যে বির্তকিত কর্মকান্ড করেছে যার কারণে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পরেছে মহানগর যুবদল। এমনকি মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্যদের নামে ইতিমধ্যেই পদ বানিজ্যেসহ সংগঠনিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে যতগুলো পদক্ষেপ করা দরকার সব থেকে পিছিয়ে তারা যার কারণে কেন্দ্র পদক্ষেপ নিয়েছে।

 

মহানগর যুবদলের কমিটি নতুনভাবে গঠন করা হবে তা ছাড়া কোন উপায় নেই। কারণ এই কমিটিতে রয়েছে পদবানিজ্যেক্ষেত ও বিশৃঙ্খলা লিডার হিসেবে পরিচিত নজরুল ইসলাম আজাদের কালো হাত যা অচিরেই ভেঙ্গে এই সংগঠনটিকে শক্তিশালী করতে চান কেন্দ্রীয় কমিটি। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই মহানগর যুবদলের সুপার ফাইভ কমিটির অনেকটাই মূল দায়িত্বে আসার জন্য দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘ ৮/৯ মাসেও জেলা ও মহানগর যুবদলের নতুন কমিটি দিতে ব্যর্থ হচ্ছে কেন্দ্র।

 

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৬ নভেম্বর কেন্দ্রীয় যুবদলের প্যাডে দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল স্বাক্ষরিত এক বার্তায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর এই কমিটিতে মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তুকে আহবায়ক এবং মহানগর বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজলকে সদস্য সচিব করা হয়।

 

সেই সাথে কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে রয়েছেন সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাগর প্রধান, সহ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহমেদ। কমিটি ঘোষণার এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি তাঁরা। সেই সাথে ওয়ার্ড কমিটিও তাঁরা ঘোষণা করতে পারেননি। পাশাপাশি দলীয় আন্দোলন সংগ্রামে জোরালো কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি। বিপরীতে তাঁরা বিভিন্ন কর্মকান্ডে বিতর্কিত হয়ে আসছেন।

 

বিশেষ করে আহবায়ক মমতাজউদ্দিন মন্তুতে যুবদলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা কোনোভাবেই সন্তুষ্ট নয়। এই মধ্যে কয়েক দফায় মহানগর যুবদলের আহবায়ক মমতাজউদ্দিন মন্তু ও সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় যুবদলে অভিযোগ করা হয়েছে। আর এসকল অভিযোগে উল্লেখ করা করা হয়েছে, বর্তমান নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহবায়ক ও সদস্য সচিব তাদের মনগড়া মতো গঠনতন্ত্র বহির্ভূতভাবে সংগঠন পরিচালনা করার অভিযোগ করা হয়েছে।

 

আহ্বায়ক সদস্য সচিবের সাথে যুগ্ম আহ্বায়কদের সাথে সম্মিলিতভাবে কোনো আলোচনা না করে তাঁরা দুইজন ব্যক্তিগত স্বার্থ নিয়ে সংগঠন পরিচালনা করছে। সেই সাথে হামলা মামলার স্বীকার সিনিয়র ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের সংগঠনের নতুন কমিটির বাইরে রেখে নতুন লোক মামলা মোকাদ্দমা বিহীন ও অর্থ স্বার্থ বিনিময় ইউনিয়ন পর্যায়ের লোক দিয়ে নতুন কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি বর্তমানে সুপার ফাইভ কমিটি কেউ কাউর সাথে সম্বনয় করে কিছূ করছে না।

 

যে যার মতো করে সংগঠনের মূল দায়িত্বে আসার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু বর্তমানে একত্রভাবে রাজপথে দেখা গেলেও দলীয় চাপে একত্র রয়েছেন কিন্তু ভিতরে ভিতরে সকল নেতৃবৃন্দ মূল দায়িত্বে আসার লোভ পোষন করে যাচ্ছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর যুবদলের চলমান কমিটির ব্যর্থতায় নতুন কমিটি নিয়ে আলাপ আলোচনায় সরগরম চলছে যুবদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে।

 

আর এই নতুন কমিটিকে কেন্দ্র করে আলোচনায় রয়েছেন এক সময়ের কে এম মাজহারুল ইসলাম জোসেফ, বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল ও যুগ্ম আহবায়ক সাগর প্রধান, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদ এদেরকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের নতুন কমিটির ঘোষণা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

 

অপরদিকে গত ২০২২ সালের ১৬ মার্চ কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষনা করা হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের তিন সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি। কমিটিতে গোলাম ফারুক খোকনকে আহবায়ক আর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান রনিকে সদস্য সচিব করা হয় গঠিত কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করা হয় ভিপি কবিরকে।

 

কিন্তু কমিটি হওয়ার ছয় মাসের মাথায় ১৫ নভেম্বর ঘোষনা করা হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৯ সদস্যের আহবায়ক কমিটি যেখানে সদস্য সচিব করা হয় জেলা যুবদলের আহবায়ক গোলাম ফারুক খোকনকে। ফলে জেলা যুবদলের আহবায়ক পদটি খালি হয়ে যায়। তারপর থেকেই জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির একক নেতৃত্বে একদিকে চলছে যুবদলের একাংশের রাজনীতি।

 

অপরদিকে জেলা যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান থেকে জেলা যুবদলের ব্যানারে চালিয়ে আসছে জেলা যুবদলের রাজনৈতিক কার্যক্রম। জেলা যুবদলের নেতৃত্ব প্রত্যাশী প্রায় ডজন খানেক নেতা দলের কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। নানা বলয় ও গ্রুপিংয়ের কারনে জেলা যুবদলের কমিটি গঠন জটিল আকার ধারণ করেছে, যার ফলে জেলা যুবদলের কমিটি আসছেনা বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। যার কারণে আহ্বায়ক পদায়ন করে নয়া কমিটি গঠনের জন্য বার বার পিছিয়ে পরছে কেন্দ্র।

 

এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের কমিটিতে স্থান পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন অনেকেই। দলের বিরোধীতাকারী কাউকে নতুন কমিটিতে স্থান না দিতে এবং যুবদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদপ্রার্থী নেতাদের জীবনবৃত্তান্ত, দলীয় কর্মকাণ্ডে ভূমিকা, তৃণমূলে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে যাচাই বাছাই করে এমন নেতাদের কমিটিতে দায়িত্ব দিতে কেন্দ্রীয় যুবদলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

 

আর জেলা যুবদলের নতুন কমিটি গঠনের খবরে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচঞ্চলতা ফিরে আসলে ও কেন্দ্রের নানা গাড়িমসিতে এটা আর হয়ে উঠছে না। কারা আসছেন জেলা যুবদলের দায়িত্বে এ নিয়ে যুবদল নেতাকর্মীর মধ্যে চলছে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা। এবার নতুন কমিটি গঠন হলে জেলা যুবদল আরও চাঙা হবে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে জেলা যুবদলকে ছায়া দিয়ে রাখা মশিউর রহমান রনিকেই আহ্বায়কের হিসেবে দেখতে চান অনেকেই।

 

অপর দিকে কেন্দ্রীয় যুবদলের কার্যকরী কমিটির ১নং সদস্য সাদেকুর রহমান সাদেককে ও জেলা যুবদলের একটি ভালো দায়িত্বে দেখতে চান তৃণমূল নেতৃবৃন্দরা। এরা ছাড়াও জেলা যুবদলে নিজ নিজ বলয় থেকেই অনেকে দায়িত্ব পেতে জোরদার লবিং করে যাচ্ছে। কিন্তু জেলা যুবদলে আহ্বায়ক হিসেবে অনেকটাই আশাবাদী ও নেতাকর্মীদের পছন্দের নেতা হিসেবে রয়েছে একই কমিটি সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি।

 

কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎই পদের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে নেতাকর্মীরা কিন্তু কেন্দ্র সংগঠন ২টিকে গর্জে দাড়নোর জন্য কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যার পরিপ্রেক্ষিতে ঝিমিয়ে যাওয়ার পথে জেলা ও মহানগর যুবদল। আর ঘনিয়ে এসেছে দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচন এই নির্বাচনকে ঘিরে জেলা ও মহানগর যুবদলের তৎপরতা আরো বৃদ্ধি করতে হবে তা হলে অচিরেই শক্ত অবস্থানে ফিরে আসবে এই সংগঠনটি।এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর