শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

গোগনগরে তুচ্ছ ঘটনায় বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে খুন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২  

 

#  গ্রেফতার একজন, বাকিদেরও ধরতে অভিযান চলছে : ওসি

 

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের উত্তর মসিনাবন্দ এলাকায় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে জায়েদা বেগম (৫৫) নামে এক নারী নিহত ও তার স্বামী কাইয়ুম মণ্ডল (৭০) আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় গোগনগরের উত্তর মসিন্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় পাচঁজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যাক্তিরা হলেন মৃত কফলুদ্দিন (কপ্পা) মিয়ার ছেলে শেকুল (৬০), স্ত্রী জাহানারা ওরফে সুফিয়া খাতুন (৫২), ছেলে রানা (২৫) বৈশাখী (২৬)।

 

এ ঘটনার বিষয়ে নিহতের স্বজনরা জানান, গত দুই দিন আগে আমার ফুফা কাইয়ুম মন্ডলের পাশের বাড়ি ওয়ালা শেকুল মিয়া একটি আম গাছ কাটেন। যার ফলে কাইয়ুম মন্ডলের ভবনের একটি পানির পাইপ ভেঙ্গে যায়। পরবর্তীতে আমার ফুপুু নিহত জায়েদা বেগম পাইপ ভাঙ্গা বিষয়ে শেকুল মিয়ার স্ত্রী সুফিয়াকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে তারা পাইপ এনে নতুন করে মেরামতের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু তারা আর এ মেরামতের কাজ শুরু করে না। যার ফলে ফুপুুরা অসুবিধার সম্মূখীন হচ্ছিল। যার কারণে ফুপুু জায়েদা শেকুল মিয়ার বাড়িতে জিজ্ঞাসা করতে যায় কবে তারা এ মেরামতের কাজ করবে।

 

তখনই শেকুল মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন ফুফুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে তাদের এ ধরণের কর্মকালাপ থেকে আমার ফুপু ও তাদের গালিগালাজ করে। এ পর্যায়ে হৈচৈ শুনে সুফিয়া খাতুনের স্বামী শেকুল, ছেলে রানা ও মেয়ে বৈশাখী দৌড়ে ঘর থেকে বেড় হয়ে আসে এসেই আমার ফুপুুর উপরে তাদের হাতের কাছে থাকা কাঁচ ভাঙ্গার টুকরো নিক্ষেপ করে। পরবর্তীতে সুফিয়ার স্বামী ও ছেলে রানা ফুপুকে এলোপাথালি কিল ঘুষি মারেন এ সময় জায়েদা বেগমের স্বামী কাইয়ুম মন্ডল তার স্ত্রীকে রক্ষা করার জন্য সামনে আসলেই শেকুল মিয়া বাঁশ দিয়ে কাইয়ুমকে বাড়ি মারতে নেয় সেই বাড়ি জায়েদা বেগমের মাথায় লাগে। পরে ঘটনাস্থলেই আহত হন পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

নিহতের স্বামী আহত কাইয়ুম মন্ডল যুগের চিন্তাকে জানান, আমার বিল্ডিংয়ের উপরে তাদের একটি আম গাছ ছিল। সেই গাছ তারা দুইদিন আগে কাটে যার ফলে আমার বাসার পানির পাইপ ভেঙ্গে যায়। পরে আমার স্ত্রী তাদেরকে বলেন আপনারা বললেন পাইপ মেরামত করবেন কিন্তু করলেন না তো আর গাছ কাটার আগে আমাদের জানানো প্রয়োজন ছিল আপনাদের। পরেই তারা আমার স্ত্রীকে গালিগালাজ শুরু করে। যার ফলে আমরা স্ত্রী ও তাদের গালিগালাজ করে। পরে শেকুল ও তার স্ত্রী ছেলে মেয়ে ও তাদের কিছু আত্মীয় স্বজন মিলে আমার স্ত্রী ও আমাকে বেদরভাবে মারধর করে। এর আগে ও তারা আমার বাড়ি থেকে স্বর্ণ অলঙ্কার চুরি করলে সেগুলা মেম্বার বাপ্পি উদ্ধার করে দেয়। আমরা এর সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে আসামীদের ফাঁসি চাই।

 

এ বিষয়ে গোগনগর ইউপি ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইকবাল প্রধান বাপ্পী যুগের চিন্তাকে জানান, আজকে আমরা সারাদিন আমাদের চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে উপজেলায় ছিলাম আমরা এলাকায় একটি কল বসাবো এ নিয়ে মিটিং ছিল। হঠাৎ সাড়ে তিনটার সময় আমাকে এলাকা থেকে একজন কল দিয়ে বলে। এলাকায় শেকুল ও কাইয়ুম মন্ডলদের সাথে ঝগড়া লেগেছে। দুইজন আহত হয়েছে দুইজনকে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তখন আমি ভিক্টোরিয়া জানতে পারলাম  জায়েদা বেগম মারা গেছে। আমি এলাকায় ছিলাম না তাই আমি বেশি কিছুু বলতে পারছি না। এলাকায় এসে লোকমুখে যা জানতে পারলাম গাছ কাটার পরে কাইয়ুম মিয়াদের বাসার পানির পাইপ ভেঙে যায় ফলে মাহিলারা মহিলারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে হাতাহাতির এক পর্যায়ের এই ঘটনা ঘটে। আমার দুর্ভাগ্য আমি এলাকায় ছিলাম না আমি এলাকায় থাকলে এ ধরনের দুর্ঘটনা কখনো ঘটতে দিতাম না। অনেকের মুখে শুনলাম শেকুল মিয়ার পরিবার বিনা অপরাধে বৃদ্ধা মহিলাকে মেরেছে এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি। আর এখন পর্যন্ত আমি এসআই মনির ভাই থেকে শুনলাম একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা জানান, গোগনগরের হত্যার বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে আমার কাজ করবো এবং ইতমধ্যেই একজনেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত বাকী আসামীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। এ বিষয়ে ঘটনার তদন্ত চলছে।

এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর