বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

গোগনগরে ত্রিমুখী উত্তেজনা

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২১ মে ২০২২  

# ফজর আলীর রাজত্ব কায়েমে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন
# সাবেক চেয়ারম্যানের উপর হামলা
# যুবলীগ নেতাকে হুমকি

 

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজর আলীর বিরুদ্ধে যেন অভিযোগের পাহাড়। ইতি মধ্যে গোগনগরে কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনাই ফজর আলীর ইন্ধনে হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। এমনকি গোগনগর যবলীগ নেতাকে হত্যার হুমকি প্রদান করেছে। অভিযোগ উঠেছে ফজর আলীর বিরুদ্ধে বা তার বাহিনীর অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে দমানোর জন্য অন্যায়ের প্রতিবাদকারীর বাড়িতে হামলা চালায়।

 

এমনকি প্রতিবাদকারি হত্যার হুমকি প্রদান করেন। তাদের বিরুদ্ধে থানায় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অভিযোগ কোন প্রতিকার পানাই বলে ভুক্তভোগির অভিযোগ। প্রশান নিরব থাকায় আতন্কে দিন কাটাচ্ছে গোগনগরের স্থানীয়রা। এই ভাবে চলতে থাকলে গোগনগরে যে কোন সময় বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি হত্যার পর্যন্ত হতে পারে।তাই স্থানীয়দের থেকে দাবী উঠেছে ফজর আলী এর্ব তার বাহিনীর বিরুদ্ধে এখনি ব্যবস্থা নিতে হবে।


খোঁজ নিয়ে জানাযায়, মাস খানিক সময়ের ব্যবধানে গোগনগরে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। তার মাঝে ফজর আলীর বাহিনীর পিস্তুলের গুলিতে গোগনগর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আহত হন। এছাড়া গোগনগর ইউপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুর হোসেনের বাড়িতে হামলা হয়। তার পরিবারের নারী সদস্যরাও এর থেকে বাদ পরেন নাই। স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের উপর হামলা হয়েছে।


এদিকে গতকাল একটি অডিও রেকর্ডে শোনাযায় একটি নিউজ গোগনগর যুবলীগের সভাপতি ইব্রাহীম মোল্লা তার নিজ ফেসবুকে পোষ্ট করেন। তিনি তা পোষ্ট করায় গোগনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এই যুবলীগ নেতাকে হত্যার হুমকি প্রদান করেন। তাকে প্রতিরোধ করার জন্য তখন ফোনে ইব্রাহীম মোল্লাও উত্তেজিত হন। তাকে হুমকি সহ তার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

 

ইব্রাহীম মোল্লা জানান, তিনি সব সময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন। তার প্রতিবাদ অন্যাকারীদের বিরুদ্ধে যাওয়ায় তখন অন্যাকারীরা তার বাড়িতে গিয়ে হামরা করেন। তার স্ত্রী, ভাগ্নি এবং ভায়ের বউ উপর ফজর আলী চেয়ারম্যানের বাহিনী হামলা চালায়।


 তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার রাত প্রায় সাড়ে ৮ টায় গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজর আলী ফোন করে বলে তুমি ফেইসবুকে কি দিছ। এনিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। ফজর আলী ফোনে বলে তোর হাত পা ভাইঙ্গা ফালামু। এ সময় ফজর আলী উত্তেজিত হয়ে বলে তুই থাক, আমি লোক পাঠাইতাছি।

 

ফজর আলী তার বাহিনীর সদস্যদের ইব্রাহীম মোল্লাকে ধরে আনার নির্দেশ দেন। রাত ৯ টায় রুবেল মেম্বার, জাহাঙ্গীর মেম্বার,মাসুদ,আমির,রিয়ান এর নেতৃত্বে ১শ থেকে দেড়শো লোক ইব্রাহীম মোল্লার কদমতলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে মারধর ও ভাংচুর করে বলে জানান ইব্রাহীম মোল্লা।

 

সন্ত্রাসীদের মারধরে ইব্রাহিম মোল্লার ছোট ভাই রাজু মোল্লা, তার স্ত্রী শান্তা,সিরাজুল হক মোল্লা, জুয়েল মোল্লা তার স্ত্রী তানিয়া গুরুতর আহত হয়। এখনও পর্যন্ত চেয়ারম্যান ফজর আলীর সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ব্যবসাস্থল নিতাইগঞ্জ এবং আমার বাড়ির আশপাশে ঘোরাফেরা করছে আমার ক্ষতিসাধনের জন্য।


এদিকে একের পর এক হামলা ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ভুক্তভোগি সজ গোগনগর এলাকাবাসি। ফজর আলীর রামরাজত্ব কায়েম ধরে রাখার জন্য একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। নানা অনিয়ম নিয়ে তার বিরুদ্ধে মানুষ মুখ খুলেছে। ইতিমধ্যে গোগনগর ইউনিয়নের নাগরিক সেবা নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরেছেন মানুষ।

 

সেই সাথে গৃহহীন নির্মানে মানুষের কাছে অর্থ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সচেতন মহল প্রশ্ন তুলে বলেন, যারা এই সকল অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করে নানা অপরাধ করে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা আরও বেশি অনিয়ম করতে সাহস পায়। সূত্রমতে জানাযায়, এছাড়াও গোগনগরের ফজর আলীর রয়েছে বিচ্ছু বাহিনী।

 

যারা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে থাকেন। গত কয়েক দিন আগে এই সন্ত্রাসী বাহিনীর ৮ সদস্য র‌্যাবের জালে গ্রেপ্তার হন। তাদের সাথে দেশিয় অস্ত্র পাওয়া যায়। তাদের হামলায় নারী মেম্বার আহত হন। বিভিন্ন ঘটনায় গোগনগরে এখন ত্রিমুখি উত্তেজনা চলছে। সচেতন মহল মনে করেন এই ত্রিমুখি উত্তেজনায় গোগনগরের মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।  তারা এলাকায় শান্তি চায়।  


গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজর আলীর বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ তিনি অসীকার করেন। তিনি জানান, উল্টো তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে। তিনি স্কুলের জন্য ভবন নির্মান করতে চান। তা নিয়ে তাকেন ভূমি দস্যু বলা হয়েছে বলে জানা তিনি। তার কোন লোকজন কারো বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটান নাই।
গোগনগর ইউনিয়নরে সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুর হোসেন সওদাগর বলেন , ফজর আলী চেয়ারম্যানের বাহিনীর লোকজনের কর্মকান্ডে গোগনগরের মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেও ভুক্তভোগিরা কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। প্রশাসন অনেকটা নিরব ভূমিকা পালন করায় মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। তাদের বিরুদ্বে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই। সেই সাথে যুবলীগ নেতার বাড়িদে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি শাহ জামান জানান, আমাদের কাছে অভিযোগ করলে আমরা আইনানুগ ভাবে ব্যবস্থা নিবো। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

এই বিভাগের আরো খবর