শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

গ্রুপিং তৈরিতে অভিযোগের তীর

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩  

 

# নেতৃত্বে থাকলে নিষ্ক্রিয়, পদ হারালেই সক্রিয়
# গ্রুপিং রাজনীতিতেই লাভবান হন তারা

 

 

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতিতে এক রহস্যময়ী পুরুষ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনির সাংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে বিএনপির রাজনীতি থেকে গাঁ ডাকা দিয়ে ইঁদুরের মত গর্তে চলে যান। তবে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের আগে বিএনপির সুবিধাজনক অবস্থান দেখে আবারও বিএনপির রাজনীতিতে সরব হওয়ায় জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেন কাজী মনির। তখনই তার পুরানো মিত্র জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মামুন মাহমুদকে গ্রুপিং রাজনীতির টোপ দেন।

 

কারণ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে কাঙ্খিত পদ না পেয়ে সেও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির একাংশকে নিয়ে গ্রুপিং রাজনীতির ছক নিয়ে এগুচ্ছিলেন। পরবর্তীতে কাজী মনির তার পুরানো মিত্র মামুন মাহমুদকে সাথে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ব্যানারে জেলা বিএনপির একাংশের নেতাদের নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আবারও বিএনপির সক্রিয়তা দেখান কাজী মনির। তবে তাদের গ্রুপিং রাজনীতিকে তীব্রতর করতে পিছন থেকে মদদ দিয়ে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাহুগ্রাস হিসেবে পরিচিত নজরুল ইসলাম আজাদ। এছাড়া তারা নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির গ্রুপিংয়ের রাজনীতি নিয়ে সীমাবদ্ধ নয় জেলার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনগুলোতে গ্রুপিং সৃষ্টের পায়তারা করে যাচ্ছেন।

 

সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটি হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ জেলা বিএনপির কাঙ্খিত পদে না আসার কারণে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির নেতাদের সাথে একত্রিত হয়নি মামুন মাহমুদ। দীর্ঘদিন নিশ্চুপ থাকার পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরের সাথে জেলা বিএনপির একাংশকে নিয়ে দলীয় কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের গ্রুপিংয়ের রাজনীতির জানান দেয়। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির একাংশের রাজনীতিতে শক্তিশালী করতে পিছন থেকে কলকাঠি নেরে সহযোগীতা করছেন নজরুল ইসলাম আজাদ।

 

কারণ জেলা বিএনপির পূর্বের কমিটিতে নজরুল ইসলাম আজাদ জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মামুন মাহমুদের সহায়ক হিসেবে কাজ করেছেন। যার কারণে এখনো নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির একাংশের নেতাদের পিছন থেকে এখনো সহযোগীতা করছেন আজাদ। আর এই একাংশে মদদ দিতে দেখা যায় জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির আহবায়ক জাহিদ হাসান রোজেলকে। কারণ সেও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে শীর্ষ পদ প্রত্যাশী ছিল। পরবর্তীতে কাজী মনির নেতৃত্বে জেলা বিএনপির একাংশকে নিয়ে গ্রুপিংয়ের রাজনীতিকে তীব্রতর করতে সহায়তা করেন।

 

জেলা বিএনপির একাংশকে অঙ্গসংগঠন থেকে সহযোগীতা করে যাচ্ছেন কাজী মনিরের অনুসারী জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব রহমান। আর এই মাহাবুব কাজী মনিরের রাজনৈতিক হাতকে শক্তিশালী করতে তার পরামর্শই আবার জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক প্রার্থী হয়েছেন। যার কারণে নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের কর্মী সভায় কাজী মনিরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দিপু ভূইয়ার সমর্থিত জেলা স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা রফিকের লোকজনের সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হন জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবের কর্মীরা। কারণ রফিক জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের শীর্ষ পদে আসুক সেটা কোন ক্রমেই জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব মেনে নিতে পারছে না।

 

কারণ রফিক কাজী মনিরের অন্যতম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দিপু ভূইয়ার অনুসারী। যার কারণে নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলে রাজনীতিতেও সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টির মূলে ছিল কাজী মনির। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটিতে কাজী মনিরের অনুসারী সুলতান মাহমুদ কাঙ্খিত পদ না পাওয়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এতে প্রতিয়মান হচ্ছে যে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতেই শুধু গ্রুপিং রাজনীতি সীমাবদ্ধ নয় এখন অঙ্গসংগঠনগুলো কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে গ্রুপিং রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন। আর অঙ্গসংগঠনগুলোতে গ্রুপিং সৃষ্টি এবং সংগঠনে বিভক্ত সৃষ্টের নেপথ্যে দেখা যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রহস্যময়ী পুরুষ কাজী মনিরের অনুসারীদের।    

এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর