শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

ঘুমন্ত ছেলে ইমাম হোসেনকে কোলে নিয়ে পাশের পুকুরে ফেলেছিলো মা

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১  

এক চিরকুটের সূত্র ধরে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় দুই মাসের শিশু ইমাম হোসেনকে পুকুরে ফেলে হত্যার রহস উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরিবারের লোকজনের উপহাস ও স্বামী ভরণ-পোষণ না দেওয়ায় নিজের ছেলেকে পুকুরে ফেলে হত্যা করেন মা।

 

রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন শিশুটির মা খাদিজা আক্তার পিংকি।

 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, স্বামী ভরণ-পোষণ না দেওয়ায় এবং পরিবারের লোকজনের উপহাস সহ্য করতে না পেরে ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার ঘুমন্ত ছেলে ইমাম হোসেনকে কোলে নিয়ে ঘরের পাশের পুকুরে ফেলে হত্যা করেন।

 

মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল রাতে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার ১নং মাধবপাশা (কান্দিপাড়া) এলাকার বাদী মো. রুবেলের (ভিকটিমের বাবা) শ্বশুর জবেদ আলীর বসতবাড়ি থেকে নবজাতক ইমাম হোসেন হারিয়ে যায়। তখন নিখোঁজের মা মোসাম্মৎ খাদিজা আক্তার পিংকি চিৎকার দিলে বাড়ির লোকজন আসেন। ওই সময় জিজ্ঞাসাবাদে খাদিজা জানান তার ছেলে ইমাম হোসেন ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় কারা যেন চুরি করে নিয়ে গেছে। পরদিন ২১ এপ্রিল সকালে খাদিজা আক্তার পিংকির বসতবাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুর থেকে তার ছেলেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

 

এ ঘটনায় করা মামলার তদন্তভারের দায়িত্ব নেয় পিবিআই। তদন্তকালে ঘটনাস্থল থেকে ছয় শব্দের একটি ছোট কাগজের টুকরা আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। জব্দ কাগজে লেখা থাকে ‘বাচা গড়ে গড়ে চুরি করমু সাবথাব’। এই কাগজে হাতের লেখার বিষয়ে ঘটনাস্থলসহ আশপাশের লোকজনের নমুনা লেখা সংগ্রহ করা হয়। পর্যালোচনার একপর্যায়ে ভিকটিমের মা খাদিজা আক্তার পিংকির হাতের লেখার সঙ্গে মিল পাওয়া যায়।

 

এরপর আদালতের মাধ্যমে সংগ্রহ করে নমুনা হাতের লেখা বিশেষজ্ঞ দ্বারা তুলনামূলক পরীক্ষা করে জব্দ লেখা ভিকটিমের মা পিংকির লেখার সঙ্গে মিল পায়। হাতের লেখা মিলে যাওয়ার ঘটনায় পিবিআই নারায়ণগঞ্জ অফিসে নিয়ে পিংকিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

 

এ সময় পিংকি জানান, তার স্বামী তাকে বার বার টাকার জন্য চাপ দিতেন। তার স্বামী (বাদী) চাইতেন তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার পিংকি তাকে কামাই করে খাওয়াবেন। তিনি বাবার বাড়িতে আসার পর তার স্বামী (বাদী) কোনো ভরণ-পোষণ দিতেন না। এটা নিয়ে তার পরিবারের লোকজন তাকে উপহাস করতেন। তাই তিনি চাপ সহ্য করতে না পেরে তার ঘুমন্ত ছেলে ইমাম হোসেনকে কোলে নিয়ে ঘরের পাশের পুকুরে ফেলে দেন।

এই বিভাগের আরো খবর