মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ৫ ১৪৩০

চাঁদা চেয়েছিলো সাখাওয়াত-আনোয়ার

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২১  

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। বিএনপিপন্থী আইনজীবী মো. শহীদ সারোয়ার বাদি হয়ে অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও তার ৭ সহযোগির বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত ভাবে ওই চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন।  


অন্যদিকে, শহীদ সারোয়ারের বিরুদ্ধে সিনিয়র আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ তুলেছেন, গত ২৮ এপ্রিল শহীদ সারোয়ার মাইক্রোবাস যোগে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের নিয়ে তার চেম্বারে এসে ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে তাকে অপহরনের চেষ্টা চালিয়েছে। সাখাওয়াত হোসেনের ভাষ্য, শহীদ সারোয়ার জুনিয়র আইনজীবী হওয়ায় সম্মানের কথা চিন্তা করে ওই বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা নেননি।


এদিকে, শহীদ সারোয়ারের দায়েরকৃত অভিযোগে কেবল অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেনই নয়, অভিযুক্ত করা হয়েছে মহানগর মৎসজীবী দলের আহবায়ক অ্যাড. আনোয়ার প্রধান, সাখাওয়াত হোসেনের সহযোগি হিরন বাদশা, মেহবুব আবেফিন টুটু, ওমর ফারুক নয়ন, মো. হাবিব, আনজুম আহমেদ রিফাত ও তানভীর আহমেদ। গত ৯ই মে ফতুল্লা মডেল থানায় সাখাওয়াত ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ দায়ের করেন অ্যাড. শহীদ সারোয়ার।


অভিযোগে শহীদ সারোয়ার বলেন, গত ২৮ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে আমি চেম্বারে যাওয়ার সময় এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান তার জুনিয়র মো. হাবিবের মাধ্যমে আমাকে তার চেম্বারে ডেকে নেয়। আমি যাওয়ার পর সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “তুই দুদকে নাড়া দিয়েছিস কেন? আমার দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে কুৎসা রটাচ্ছিস এবং বারের নির্বাচনের  দলের প্যানেল বিক্রি করার বিষয়টি তুই প্রচার করছিস কেন” একথা বলেই সাখাওয়াত হোসেন তার সহযোগি এ্যাড. আনোয়ার প্রধান, হিরন বাদশা, মেহবুব আরেফিন টুটু, ওমর ফারুক নয়ন, মো. হাবিব, আনজুম আহমেদ রিফাত ও তানভীর আহমেদ মিলে আমাকে মারধর করে এবং সাখাওয়াত হোসেন আমার কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদাদাবী করে। একপর্যায়ে আনোয়ার প্রধান সাখাওয়াতের চেম্বারে থাকা গামছা আমার গলায় পেঁচিয়ে ধরে হত্যার চেষ্টা চালায়। তিনি বলেন, তাদের বেদম প্রহারের ফলে আমি আশঙ্কা জনক অবস্থায় দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম।”

 
এছাড়া, সাখাওয়াত হোসেন তাকে দিয়ে ইতিপূর্বে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের মুক্তির দাবীর বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে বলেছিলেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।


অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘শহীদ সারোয়ার আগে আমার অফিসে কাজ করতো। আমি তাঁকে ভরন পোষন দিতাম। তো সেই লোকের কাছে আমি দু’লাখ টাকা চাঁদা চাইবো, সেটাতো বিশ্বাসযোগ্য নয়।’ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শহীদ সারোয়ার আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এগুলো করছে, আমাকে অপহরণ করতে চেয়েছে।

 

কারণ, সে আমার প্রতিদ্বন্ধী না। আর কারো কাছে চাঁদা চাইবো সে ধরনের মনমানসিকতার লোক আমি নই। সে অপরাধ করে চুরির উপর সিনাজুরি করছে। অথচ, ঘটনার দিন তাকে যখন আটক করা হয়, তখন সে লিখিত দিয়েছে। তার সাথে কারাকারা এসেছিলো, সেটা বলেছে এবং তার কাছ থেকে চাকু উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনায় কোন আইনী ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সম্মানের কথা চিন্তা করে আমি কোন আইনী ব্যবস্থা নেইনি। কারণ আমি চাইনি যে, এই জিনিসটা এতো ঘাটাঘাটি হোক।’  


এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাদী অ্যাড. শহীদ সারোয়ার দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘সেদিন আমার সাথে যা ঘটেছিলো, অভিযোগে তাই উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের মারধরে আমি হাসপাতালে ভর্তি থাকায় থানায় অভিযোগ দিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আমি চাই পুলিশ এটা তদন্ত করুক। সঠিক তদন্ত হলেই অভিযোগের সত্যতা মিলবে।’


অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবির-১ জানান, ‘তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে।’
এদিকে, ঘটনার পর অ্যাড. আনোয়ার প্রধান বলেছিলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর পূর্বে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া না দেয়াকে কেন্দ্র করে সাখাওয়াত হোসেনের উপর ক্ষুব্ধ হন তার জুনিয়র অ্যাড. শহীদ সারোয়ার। শহীদ সারোয়ার অ্যাড, তৈমূর আলম খন্দকারের অনুসারী।’  
 

এই বিভাগের আরো খবর