Logo
Logo
×

রাজনীতি

চার নেতার ঐক্যের উপর নির্ভর করছে বিএনপির আন্দোলন

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৫৩ পিএম

চার নেতার ঐক্যের উপর নির্ভর করছে বিএনপির আন্দোলন
Swapno

 

# গিয়াস, দীপু, আজাদ ও মান্নান ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামলে পাল্টে যাবে চিত্র

 

 

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে এখন মাঠ কাঁপানোর মতো রয়েছেন মূলত চারজন। এরা হলেন সভাপতি আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন, বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দীপু, সোনারাগাঁয়ের সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান এবং নজরুল ইসলাম আজাদ। এই চার নেতার মাঝে আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন নারায়ণগঞ্জের প্রতাপশালী আওয়ামী লীগ নেতা একেএম শামীম ওসমানের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় দলের সর্বস্থরের নেতাকর্মীদের মাঝে তার একটি বিশেষ গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে।

 

আর দীপু ভুঁইয়া এরই মাঝে রুপগঞ্জে বিশাল কর্মী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। নজরুল ইসলাম আজাদ নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদল, ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের ভাইটাল পদে তার লোক সেট করেছেন। সাদেকুর রহমান সাদেক এবং মনিরুল ইসলাম সজল তার খাস লোক। তাই চলমান আন্দোলনের আজাদও জনসমাগম ঘটাতে সক্ষম। যদিও জেলা যুবদলে আহ্বায়ক সাদেক এবং সদস্যসচিব রনির মাঝে বিরোধ চলছে। এবং এই দুই নেতার কর্মীরা এখন দুই ভাগে বিভক্ত।

 

অপরদিকে সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের বেশ প্রভাব রয়েছে গোটা সোনারগাঁ থানার এলাকার বিএনপির ভেতর। তাই নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন এখনই যদি এই চার নেতা একতাবদ্ধ হয়ে মাঠে না নামেন তাহলে এই জেলায় ক্ষতিগ্রস্থ হবে আন্দোলন। কিন্তু এদের মাঝে ঐক্যের যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

 

এছাড়া মামুন মাহমুদের নেতৃত্বে একটি ছোট্ট গ্রুপ গিয়াস উদ্দিনকে ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য বেশ সক্রিয় রয়েছে আরো আগে থেকেই। ফলে এমতাবস্থায় নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিএনপির আন্দোলন কোন পথে এগুবে সেটা বলা যাচ্ছে না। তাই বিএনপির তৃনমূল নেতাকর্মীরা মনে করেন এই নেতাদের উচিৎ ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ভুলে এখনই ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাঠে নামা।

 

এবার নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন এবং গোলাম ফারুক খোকনের মাঝে চরম বিরোধ চলছে। তবে গোলাম ফারুক খোকন সাধারণ সম্পাদক হলেও তিনি চলেন দীপু ভুঁইয়া ইশারায়। তাই দীপু ভুঁইয়া আন্তরিক না হলে খোকনও আন্তরিক হবে না। তাই যে মুুহুর্তে বিএনপি রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তখন জেলা বিএনপির এ দুই শীর্ষ নেতার মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দলটির আন্দোলন।

 

সূত্রমতে জানা গেছে, এই বিরোধের নেপথ্যে রয়েছেন অপর বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ। আজাদ সুকৌশলে গিয়াস আর খোকনের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি নিজে গিয়াসের কাছে ভিরেছেন। কিন্তু জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঐক্যবদ্ধ না থাকলে এই জেলায় বিএনপির আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। তাই এই সময়ে এসে ব্যক্তিগত লাভের কথা দূরে ঠেলে দুই নেতা এক সাথে মাঠে থাকা জরুরী বলেও মনে করেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির তৃনমূল নেতাকর্মীরা।

 

সূত্র আরো জানিয়েছে এবার ২৭ সেপ্টেম্বরের সমাবেশ সফল করার জন্য কোনো ভূমিকা রাখেননি গোলাম ফারুক খোকন এবং তার বন্ধু দীপু ভুঁইয়া। তারা চায়নি এবারের এই সমাবেশ সফল হোক। তাই আগামী দিনগুলিতে খোকন এবং দীপু ভুঁইয়া অধ্যাপক মামুন মামহমুদকে নিয়ে আলাদা বলয় সৃষ্টির চেষ্টা করছেন বলে সূত্রটি নিশ্চিৎ করেছে। তাই এবারের সমাবেশে রুপগঞ্জের এই দুই নেতা কোনো রকম সহায়তা করেননি। তারা এসেছেন মেহমানের মতো।

 

বরং তারা নেপথ্যে থেকে সমাবেশ বানচালেরও চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রুপগঞ্জে দীপু ভুঁইয়ার যে বিশাল কর্মী বাহিনী রয়েছে সর্বশেষ এবারের এই সমাবেশে তাদেরকে আনা হয়নি। দীপু ভুঁইয়া এই সমাবেশ ফ্লপ করার জন্য বেশ তৎপর ছিলেন। তবে ফতুল্লা সিদ্ধিরগঞ্জ সহ জেলার বিভিন্ন থানা থেকে এবং হাজার হাজার নেতাকর্মী যোগ দিয়ে সমাবেশ সফল করেছে। বিশেষ কারণে দীপু ভুঁইয়া আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী এমপির সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।

 

অপরদিকে সূত্রটি বেশ জোর দিয়ে আরো জানিয়েছে এবার গিয়াস উদ্দিনকে ঠেকাতে বিএনপির ভেতরে যারা তৎপর রয়েছেন তারা আরো সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এদের মাঝে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ আরো অনেক আগে থেকেই গিয়াস উদ্দিনের বিরোধীতা করে আসছেন। মামুন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন। তাই মামুন চাইবেন গিয়াস উদ্দিন যাতে সফল হতে না পারেন। কিন্তু দীপু ভুঁইয়া কেনো গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে গেলেন?

 

তার পরিষ্কার জবাব হলো নারায়ণগঞ্জ শহরে এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে দীপু ভুঁইয়াদের যে সম্পত্তি রয়েছে এগুলো রক্ষার জন্যই তিনি শামীম ওসমানের সাথে হাত মিলিয়েছেন। তাই দীপু ভুঁইয়ার এখন একটিই মিশন আর সেটি হলো গিয়াস উদ্দিনকে ঠেকানো। যদিও এবার গিয়াস উদ্দিন জেলা বিএনপির দায়িত্ব পাওয়ার পেছনে দীপু ভুঁইয়ার সহযোগীতা ছিলো। তিনি তারেক রহমানের কাছে গিয়াস উদ্দিনের পক্ষে সুপারিশ করেছেন বলে আগেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে।

 

এছাড়া গিয়াস উদ্দিন মডেল কলেজ মাঠে জেলা বিএনপির যে সম্মেলন হয়েছিলো সেই সম্মেলন সফল করার পেছনেও ছিলো দীপু ভুঁইয়ার প্রচেষ্টা। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি আর নিজের অবস্থানে ঠিক থাকতে পারেননি। তিনি প্রতিপক্ষ দলের প্রভাবশালী এমপির টার্গেট হয়েছেন এবং তার সাথে হাত মিলিয়েছেন। সূত্র আরো জানায়, তারা জানতে পেরেছেন মামুন মাহমুদই ওই এমপিকে পরামর্শ দিয়েছেন যে তিনি যেনো দীপু ভুঁইয়াকে গিয়াস উদ্দিনের কাছ থেকে সরিয়ে নেন।

 

তাহলে জনবলের দিক থেকে অনেকটাই দূর্বল হয়ে পরবেন গিয়াস উদ্দিন। তাই শেষ পর্যন্ত মামুন সফল হয়েছেন। দীপু ভুঁইয়া এবং তার অনুগত জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খোকনের সাথে এখন বিরোধ চলছে। তাই শিগগিরই মামুন মাহমুদকে নিয়ে দীপু ভুঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন পৃথক কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানা গেছে।

 

তারা শিগগিরই নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবেন বলে জানিয়েছে সূত্র। যা কিনা এই মুহুর্তে বিএনপির আন্দোলনের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হবে বলে অনেকে মনে করেন। তাই নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষ মনে করেন বিএনপির এই সকল নেতারা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন। অন্যথায় নারায়ণগঞ্জের জনগনের কাছে দায়ী থাকবেন তারা। এস.এ/জেসি 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন