শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

চারারগোপে শ’ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, চাষাঢ়ায় ৫০০!

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২২  

 

চারারগোপে বড় সাইজের ১‘শ লিচু বিক্রি হচ্ছে ছোট ৩শ’টাকায়। সেই লিচু মাত্র ১ কিলো মিটারের ব্যবধানে নগরীর চাষাঢ়ার মোড়ে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪‘শ থেকে ৫‘শ টাকায়। একই ভাবে জাত ভেদে আম-কাঠাল আর আঙ্গুরের দাম বেড়েছে দেড় গুন। ক্রেতাদের অভিযোগ, নিয়মিত বাজার মনিটরিং না করার ফলে প্রতারিত হচ্ছে ভোক্তারা’। মধুর মাস জ্যৈষ্ঠের ৩০ তারিখে শিল্প নগরী নারায়ণগঞ্জে এ ভাবেই প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর ভোক্তা অধিকার বলছে, ‘অতিদ্রুতই মাঠে নেমে কাজ করবো’।

 

 

নগরীর কয়েকটি ফল বিক্রির স্থান ঘুরে জানা যায়, চারারগোপে আপেল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, সেই আপেল চাষাঢ়ায় ২২০ থেকে ২৫০। মাল্টাচারারগোপে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, চাষাঢ়ায় সেই মাল্টাই বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি। গুটি আম ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে চারারগোপে, চাষাঢ়ায় একই আম প্রতিকেজি ৬০ টাকা। হাড়িভাঙ্গা চারারগোপে ৮০ টাকা, চাষাঢ়ায় ১২০ টাকা। আম রূপালি চারারগোপে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও চাষাঢ়ায় ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হিমসাহগর চারারগোপে ৯০ টাকা কেজি আর চাষাঢ়ায় ১শ ৪০।

 

 

একই ভাবে কাঠালের দামও বেশি চাষাঢ়ায়। চারারগোপে যে কাঠাল ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেই কাঠালই চাষাঢ়ার আশপাশে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। চারারগোপে লাল আঙ্গুর ৩০০ টাকা আর সবুজ আঙ্গুর ২০০, সেই আঙ্গুর চাষাঢ়ায় লাল ৪০০ ও সবুজ ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চারারগোপে জাম ১৪০, লটকন ১১০, চাষাঢ়ায় জামের কেজি ১৮০ আল লটকন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

 

 

চারারগোপে আনারস প্রতিপিছ ৩০ থেকে ৭০ টাকা, পাকা পেপের প্রতি কেজি ৪০ টাকা, চাষাঢ়ায় আনারস ৬০ থেকে ৯০ টাো, পাকা পেপে ৬০ টাকা। একই ভাবে অন্যান্য বাজারেও চারারগোপ থেকে প্রতিকেজি ফলে ২০ থেকে ১০০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।

 

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাষাঢ়া এলাকার এক ফলে বিক্রেতা জানান, শহরের অন্যান্য জায়গায় দোকান বসানোর চেয়ে এখানে খরচ বেশি। তাছাড়া প্রতি দিন দেড় শ’ থেকে ২শ’ টাকা চাঁদা দিয়ে দোকানদারি করতে হয়। তার উপর বিদ্যুতের খরচ আলাদা ৫০ টাকা করে দিতে হয়। এসব মিলিয়ে প্রতিদিন আড়াই শ’ থেকে ৩শ’ টাকা বেশি দিতে হয় আমাদের। আর এই টাকাতো ফল বিক্রি করেই কামাই করতে হবে। আর অন্যান্য বাজারের সাথে মিল রেখে চলতে গেলে আমাদের তো না খেয়ে মরতে হবে। কারণ আমাদের মধ্যে অনেকে সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে, কেউ আবার সপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তিও আছে। তার উপর ঘর ভাড়া আর সন্তানের পড়া-লেখাসহ অন্যান্য খরচ, সব এখান থেকেই বের করতে হয়। এখন আমরা যদি কম দামে বিক্রি করি, তা হলে আর ব্যবসা থাকবে না।

 

 

ফতুল্লা এলাকার আরিফ জানান, গত ৩/৪ দিন আগে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকার ফলের দোকান থেকে ২শ’বড় লিচু কিনে ছিলাম ৮শ’টাকা দিয়ে। আজ বাচ্চা হঠাৎ ফোন করে বাসায় লিচু নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে। চাষাঢ়ায় একটি কাজের জন্য এসে ছিলেন তিনি, তাই চলতি পথে রিক্সা থেকে নেমে জিয়া হলের সামনে আসলাম লিচু কিনার জন্য। তবে এখানেতো ফল বিক্রেতারা পুরো ডাকাত, ১শ’লিচুর এক দাম চাচ্ছে ৫শ’ টাকা। এটা রিতিমত আমাদের সাথে একধরণের প্রতারণা। আসলে এখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা দরকার তা না হলে এদের সায়েস্তা করা সম্ভব না।

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বাজার কর্মকর্তা মো. জহিরুল আলমের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।

 

 

তবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মো. সেলিমুজ্জামান বলেছেন, ‘এক পণ্যের স্থানভেদে দামের এত ব্যবধান হতে পারে না। এমনটা হওয়া একেবারেই অনিয়ম। অনিয়মের বিরুদ্ধে অতিদ্রুতই মাঠে নেমে কাজ করবো এবং এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।এমই/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর