শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ছাত্রদলের কমিটি গঠন কার্যক্রম স্থগিত

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২২  

 

দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাহিরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। অপর দিকে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের নানা হামলা মামলার শিকার হতে হয়েছে এই বিএনপির নেতাকর্মীদের। যার কারণে কোন আন্দোলন সংগ্রাম ও শক্তিশালী নবাগত কমিটি গড়তে সক্ষম হয়নি তার কারণে তারা অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন।

 

 

কিন্তু চলতি বছরে নানা ইস্যু নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রাম করছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় দলকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

 

 

ইতিমধ্যে প্রতি জেলায় জেলায় তারেক রহমানের নির্দেশে যাচাই বাছাই করে বুষ্টার কমিটি দেওয়া হচ্ছে। তারই ধারাবহিকতা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল নানা সময় নানা আন্দোলন সংগ্রামে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে।

 

 

চলতি বছরে ও মেয়াদউত্তীর্ণ অবস্থায় বিএনপির সকল কর্মসূচিতে ব্যাপক সক্রিয় ছিল এই ছাত্রদল। কিছুদিন পূর্বে সহযোগী সংঠনকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ যাপন করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। জানা গিয়েছিল নভেম্বরের মাঝেই ছাত্রদলের কমিটির অনুমোদন দিবে কেন্দ্র। কিন্তু বিমএনপির বিভাগীয় সমাবেশের কারণে সেটা আর হয়ে উঠেনি।

 

 

দলীয় সূত্রে জানা যায়, জেলা ছাত্রদলের সাবেক কমিটি ২০১৮ সালের ৫ জুন মশিউর রহমান রনিকে সভাপতি ও খাইরুল ইসলাম সজিবকে সাধারন সম্পাদক করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন অর রশিদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান।

 

 

পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৩০ মার্চ আরিফুর রহমান মানিককে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও খাইরুল ইসলাম সজিবকে সাধারন সম্পাদক করে জেলা ছাত্রদলের ৫৯২ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। অপর দিকে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক কমিটি ২০১৮ সালের ৫ জুন শাহেদ আহম্মেদকে সভাপতি ও মমিনুর রহমান বাবুকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র।

 

 

দীর্ঘদিন এ কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ অবস্থায় পরে থাকার কারণে ও ছাত্রদলে দায়িত্বে থাকা সভাপতি সাধারণ সম্পাদক সকল আন্দোলন সংগ্রামে ব্যাপক ভূমিকা পালন করার কারণে তাদেরকে যুবদলে পদ দেওয়া হয়। যার কারণে ছাত্রদল পুরোটাই ছন্নছাড়া অবস্থায় থাকে।

 

 

পরবর্তীতে ছাত্রদলের কমিটিকে লক্ষ্যে নিয়ে ১৫ই নভেম্বর ছাত্রদলের সাবেক কমিটির বিলুপ্ত কমিটি ঘোষণা দেয় কেন্দ্র। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রদলে নতুন আসতে চাওয়া পদ প্রত্যাশী নেতৃবৃন্দ অনেকটাই উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিল।

 

 

সকলেই আশা করেছিলেন নভেম্বরের মধ্যেই নবাগত কমিটির অনুমোদন দেওয়া হবে। তার জন্য সকলে আন্দোলন সংগ্রামে আরো জোরদার ভূমিকা পালন করা শুরু করে এবং লবিং চালিয়ে যায়।

 

 

কিন্তু ১০ই ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত সর্বশেষ মহা সমাবেশ তার কারণে বিএনপির নেতাদের অনেক হামলা মামলার শিকার হতে হয়। আবার অনেকে এখনও এ মামলার কারণে নিজ এলাকায় অবস্থান করতে পারছে না। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রদলের নবাগত কমিটি আর হয়ে উঠেনি।

 

 

দলীয় সূত্রে আরো জানা যায়, সোমবার ২৯ নভেম্বর রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের কারণে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটি গঠন এর কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়। যার কারণে বিএনপির অনেক তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছে ১০ই ডিসেম্বরের আগে কমিটি হলে আরো শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারতো ছাত্রদল।

 

 

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী নাহিদ ভূইয়া যুগের চিন্তাকে জানান, আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি করি আমরা কখনো কোন পদের জন্য রাজনীতি করি না।

 

 

আমরা রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ নিয়ে বিগত ১৪ বছর বিএনপি ক্ষমতায় না থাকা সত্ত্বে ও ব্যাপক আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছি। বর্তমানে ও মাঠ পর্যায়ে সকল আন্দোলন সংগ্রামে আছি এবং থাকবো। এখন আমাদের কমিটি নিয়ে চিন্তা করার কোন সময় নেই।

 

 

দল যাকে যে সময় যে দায়িত্ব দেওয়া দরকার তাকেই দিবে। কেন্দ্রীয় কমিটি ইতি মধ্যে যাচাই বাছাই করে রেখেছে কার হাতে দায়িত্ব তুলে দিলে ছাত্রদল শক্তিশালী হবে। আমরা এখন রূপগঞ্জ পর্যায়ের সকল নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করছি। কারণ ১০ই ডিসেম্বরকে সফল করাই আমাদের বর্তমান উদ্দেশ্য।

 

 

ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী মেহেদী হাসান দোলন যুগের চিন্তাকে জানান, আমাদের ফতুল্লা থানা ছাত্রদল সকল সময় সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে ও আমাদের নেতাকর্মী মাঠে সক্রিয় রয়েছে।

 

 

আমাদের কমিটি নভেম্বরেই হবে বলে আমরা জানতে পেয়েছিলাম কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি ভৌতিক মামলার কারণে এটা আর হয়ে উঠেনি। সরকারি এমন মামলা হামলা কখনো বিএনপিকে দামাতে পারেনি ভবিষ্যতে পারবে ও না।

 

 

গতকাল কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের কারণে আমরা আরো বেশি উৎফুল্ল হয়ে উঠেছি। এখন আমাদের কমিটি নিয়ে চিন্তুা নাই বললেই চলে আমরা এখন পুরো দমে ১০ই ডিসেম্বরের মহা সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত। সেদিন আমি আমাদের ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সকল নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাবেশে ব্যাপকভাবে অংশ গ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ।

 

 

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী রাকিবুর রহমান সাগর যুগের চিন্তাকে জানান, আমরা বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল করি। আমরা কোন ভালো কমিটিতে স্থান পাওয়ার জন্য রাজনীতি করি না।

 

 

আমরা রাজনীতিকে বুকে ধারণ করেই সকল কার্যক্রম করে থাকি। আমরা রাজপথে ছিলাম আছি এবং দলের যতই কঠিন সময় হোক আমরা থাকবো। আমরা কখনো লোভের বা কোন্দলের রাজনীতি করি না। আমার সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সকল নেতাকর্মী আমার সাথে সকল প্রোগ্রামে অংশ গ্রহন করেছে এবং এখনও তারা আমার সাথেই আছে।

 

 

নভেম্বরে আমাদের সাবেক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। তাই আমরা আশাবাদি ছিলাম নভেম্বরেই কমিটি হবে। কিন্তু ১০ই ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি ভৌতিক মামলা দেওয়া হচ্ছে যার কারণে আমাদের কমিটি হয়ে উঠেনি। কিন্তু গতকাল কেন্দ্রীয়ভাবে ছাত্রদলের কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

 

 

যার কারণে আমরা আগে থেকে আরো উৎফুল্ল হয়ে উঠেছি এখন কেন্দ্র দেখতে পারবে কে বেশি নেতাকর্মী নিয়ে সমাবেশে অংশ গ্রহণ করতে পারে। যার কারণে আরো সঠিকভাবে যোগ্য নেতৃত্বের হাতে নবাগত কমিটির দায়িত্ব তুলে দিতে পারবেন কেন্দ্র। আমরা ইতি মধ্যে সকল নেতাকর্মীদের আরো উজ্জ্বীবিত করছি কারণ ১০ই ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ সফল করাই আমাদের লক্ষ্য।

 

 

সদর থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী কাজী নাহিসুল ইসলাম সাদ্দাম যুগের চিন্তাকে জানান, এখন আমাদের কমিটি নিয়ে আর ভাবার  সময় নেই। আমরা এখন শুধু চাই গণতন্ত্র হরন মুক্ত করতে। আমরা শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ চাই। এখন আমাদের আর কমিটি নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই।

 

 

আমরা আমাদের মতো করেই বিএনপির সকল আন্দোলন সংগ্রামে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছি এবং বর্তমানে ও সক্রিয় আছি। এখন আমাদের কমিটি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার কোন সময় নেই আমরা এখন ব্যাপকভাবে ১০ই ডিসেম্বর কিভাবে সফল করা যায় তা নিয়ে ভাবছি। আর আশা করছি সকল বিভাগীয় সমাবেশের মতো করেই এ ঢাকার সর্বশেষ সমাবেশ ও আমরা সফল করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর