শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জনগণের কষ্টে পাশে নেই চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানরা!

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২১  

# কাজ না করেই গুনছেন ভাতাসহ মোটা অঙ্কের সম্মানী


যুগের চিন্তা অনলাইন : বিগত এক মাস ধরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে ডিএনডির ফতুল্লার এলাকার মানুষ। অথচ স্থানীয় উপজেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের কোনো দেখা পাচ্ছেন না তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু ডিএনডির জলাবদ্ধতায় নয়, বরং কোনো কাজেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের কোনো দেখা পাওয়া যায় না।

 

তাই প্রশ্ন উঠেছে, তাদেরকে কেনো রাখা হয়েছে? কি দরকার উপজেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের? কোনো কাজই যদি তারা না করবেন তাহলে তারা কিসের জনপ্রতিনিধি? মূলত এভাবেই এখন নানা প্রশ্ন করছেন দুর্যোগ কবলিত ফতুল্লা এলাকার মানুষ। এলাকাবাসী আরো মনে করেন, আর যাই হোক সদর উপজেলার চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানরা যদি এলাকাগুলি পরিদর্শন করে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতেন তাহলেও মানুষ সাহস পেতো। তারা গিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে এসে প্রশাসনকে এবং স্থানীয় এমপিকে জানাতে পারতেন। জানাতে পারতেন ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্বে নিয়োজিত সেনা বাহিনীকে বা কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু কোনো কাজেই তাদেরকে পাওয়া যায় না বলে জানিয়েছে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

 


এদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় বিগত প্রায় চৌদ্দ বছরের বেশি সময় ধরে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। ফলে মানুষ নতুন কোনো জনপ্রতিনিধি পাচ্ছেন না। চৌদ্দ বছর আগে নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানরা হলেন, চেয়ারম্যান এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন আহম্মেদ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির। বহু বছর ধরে তারা এই উপজেলার চেয়ারম্যান হলেও জনস্বার্থে তাদেরকে কখনো কোনো কাজ করতে দেখা যায়নি। রহস্যজনক কারণে এই উপজেলায় কোনো নির্বাচনও হচ্ছে না। ফলে জনগণ নতুন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানও পাচ্ছে না।

 


এদিকে সূত্রমতে জানা গেছে, এই চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যানরা জনস্বার্থে কোনো কাজ না করলেও প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের সম্মানী, ভাতা এবং অন্নান্য সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ ও ভোগ করছেন। উপজেলার চেয়াম্যানের মাসিক সম্মানী চল্লিশ হাজার টাকা। এছাড়া তিনি সরকারী গাড়ি ব্যবহার করছেন। অন্যান্য ভাতাও নিয়মিত পাচ্ছেন। এছাড়া তার বেশ উপরি আয়ও রয়েছে বলে জানা গেছে। একই ভাবে দুইজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রতি মাসে সন্মানী পাচ্ছেন সাতাশ হাজার টাকা করে। একই ভাবে তারা অন্যান্য ভাতা এবং সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। কিন্তু তারা কেনো আছেন? কি কাজ করছেন? জানেনা সদর উপজেলার সাধারন মানুষ।

 


এদিকে এ বিষয়ে ফতুল্লার ইসদাইর এলাকার বাসিন্দা শহীদ উল্লাহ মিয়া বলেন, আমরা বর্ষাকাল ছাড়াও সারা বছর ধরে ডুবে থাকি। এরই মাঝে এই এলাকা একটি পরিত্যাক্ত এলাকায় পরিনত হয়েছে। এখানে এখন আর বাড়িওয়ালারা ছাড়া কোনো ভাড়াটিয়া থাকতে চায় না। তাই যারা বাড়ি ভাড়ার উপর নির্ভরশীল ছিলো তারা অনেকে না খেয়ে থাকছে। উল্টো বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ খরচ চালাতে গিয়ে আমরা হিমসিম খাচ্ছি। আমাদের দূর্দশা নিয়ে শুধু সাংবাদিকরা লিখেন বা রিপোর্ট করেন। কিন্তু কোনো কাজ হয় না। বিগত ছয়/সাত বছর ধরে চলছে এই অবস্থা। তিনি আরো জানান, এলাকার চেয়ারম্যান স্বপন মাঝে মাঝে খোঁজ নেন। কিন্তু তিনি কিছুই করতে পারছেন না। তিনি জানান, উপজেলার চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যানদের তিনি কখনো এই এলাকায় আসতে দেখেননি। কখনোই তারা খোঁজ নেননি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন তারা যদি কোনো কাজই না করবেন তাহলে তাদেরকে রাখা হয়েছে কেনো?

 


একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এনায়েতনগর ইউনিয়নের মুসলিমনগরের বাসিন্দারা। তারাও বলেন উপজেলা পরিষদ কেনো রয়েছে। তারা বছরের পর বছর ধরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছেন। কিন্তু কেউ কোনো খোঁজ নিচ্ছেন না। এমপি কোনো খোঁজ নেন না। উপজেলা পরিষদের যে তিনজন চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছে তাদেরকে কখনো দেখা যায়নি বলে তারা জানান। তারা এই ধরনের অথর্ব উপজেলা পরিষদই বিলুপ্ত করার দাবি জানান। মূলত এভাবেই এখন বিভিন্ন এলাকার মানুষ তীব্র সমালোচনা করছে উপজেলার চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যানদের। 

এই বিভাগের আরো খবর