শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জলাবদ্ধতা দেখে হতবাক শামীম ওসমান

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ৮ জুন ২০২১  

জলাবদ্ধতায় একেবারে হতবাক হয়ে পড়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের শক্তিমান সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সূত্র জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলীর পিতার মৃত্যুতে ওই দিন ফতুল্লার লালপুর মীর সোহেলের বাড়িতে যান সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।

 

ওইখানে গিয়ে তিনি লালপুরের রাস্তাঘাট ডুবন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এতে তিনি বিব্রত হয়ে পরেন। কারণ ওই এলাকার উন্নয়নের দায়িত্ব এই সংসদ সদস্যের। তিনি সব সময়ই বড় গলায় উন্নয়নের বড়াই করে থাকেন। বিপরিতে সমালোচনা করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র আইভীর। যদিও আইভীর সিটি করপোরেশনের কোনো এলাকায় এমন স্থায়ী কোনো জলাবদ্ধতা নেই।

 

সূত্র জানায়, শামীম ওসমান লালপুরের করুণ অবস্থা দেখে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপনের কাছে জানতে চান এখানে এমন জলাবদ্ধতার কারণ কি? তখন চেয়ারম্যান স্বপন তাকে জানান শুধু লালপুর নয়, বরং গোটা ফতুল্লা ইউনিয়নের বিরাট অংশ জুড়েই এমন জলাবদ্ধতা হচ্ছে। তিনি তখন এমপির কাছে এই ভয়াবহ জলাবদ্ধতার দুটি কারণ জানান। ১) ইসদাইর এলাকায় রেল লাইনের যে বক্স কালভার্ট রয়েছে সেটি বন্ধ করে দিয়েছে রেলওয়ের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ২) ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনে যে মেঘা প্রকল্পের কাজ চলছে সেই কাজ হচ্ছে না ফতুল্লা এলাকায়। মূলত এই দুই কারণেই গত কয়েক বছর ধরে এমন ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

 

এ সময় সব কিছু শুনে এমপি রেলওয়ের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন। চেয়ারম্যানকে তিনি নির্দেশ দেন বক্স কালভার্টের বাধা ভেঙ্গে ফেলতে। এছাড়া তিনি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে এই জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত নেতৃবৃন্দকে জানান। তবে সূত্র আরো জানায়, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান কখনোই ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতার এমন ভয়ানক রূপ নিজের চোখে দেখেননি। কারণ তিনি কখনো কোনো কিছুই সরেজমিন পরিদর্শন করেন না। তিনি যা কিছু করার চেলাদের কাছ থেকে শুনেই করেন। ফলে এবার লালপুরের অবস্থা নিজের চোখে দেখে একেবারে হতবাক হয়ে পরেছেন। কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন তার এলাকার মানুষ কতোটা কষ্টের মাঝে জীবনযাপন করছেন।

 


প্রসঙ্গত, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা নিয়ে শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকা গঠিত। এই দুই থানার মাঝে সিদ্ধিরগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় সেখানে শামীম ওসমানকে কিছুই করতে হচ্ছে না। সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন করে চলেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী। কিন্তু ফতুল্লাকে শামীম ওসমান সিটি করপোরেশনের আওতায় যেতে না দিয়ে নিজের হাতে রেখেছেন অত্র এলাবার উন্নয়নের দায়িত্ব। কিন্তু তিনি আন্তরিকভাবে কোনো উন্নয়নই করছেন না ফতুল্লা এলাকার।

 

এতে ফতুল্লার বিভিন্ন ইউনিয়নে গত কয়েক বছর ধরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে রয়েছে ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকার মানুষ। কিন্তু সেদিকে শামীম ওসমানের কোনো খেয়াল ছিলো না। কিন্তু এবার সোস্যাল মিডিয়ায় এবং লোকাল মিডিয়ায় এই জলাবদ্ধতার খবর ফলাও করে প্রচার হচ্ছে। এতে শামীম ওসমানের ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে একেবারে নগ্নভাবে। তাই লালপুর গিয়ে তিনি কিছুটা বিব্রত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
 

এই বিভাগের আরো খবর