বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ডাক্তাদের মনগড়া ‘ফি’ এবং দালালের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ট মানুষ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১  

চিকিৎসকদের মনগড়া ফি’য়ের কারনে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে সাধারন মানুষ। বেশীর ভাগ চিকিৎসকের ফি এখন ৮শ থেকে বারশ টাকা। খুব কম সংখ্যকই চিকিৎসকের ফি রয়েছে ৫শ থেকে ৬শ টাকা। প্রথম র্দশন ৮শ টাকা এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেখাতে লাগে ফি’য়ের অর্ধেক টাকা। একমাস পর আবার ওই রোগীকে দেখালে ৮শ টাকা ফি নিয়ে থাকেন ওই চিকিৎসক।

 

ফলে চিকিৎসকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে রোগীরা। বেসরকারি খাতে চিকিৎসার ব্যায় বেড়ে যাওয়ায় রোগীর চাপ বাড়ছে শহরের একমাত্র সরকারি জেনারেল হাসপাতালে। খানপুর হাসপাতালটি কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড  ঘোষনার পর সাধারন রোগীর চিকিৎসায় চরম ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। তাই গরিবদের চিকিৎসার জন্য এক মাত্র ভরসা সরকারি জেনারেল হাসপাতাল। কিন্তু সেখানেও সমস্যা দালালদের দৌরাত্ব। পরিক্ষা-নিরিক্ষা’র নামে রোগীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অর্থ।


সরেজমিনে দেখাগেছে, এই জেনারেল হাসপাতালটি কে কেন্দ্র করে গরে উঠেছে অসংখ্য ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এরমধ্যে ইউনাউটেড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, একতা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সেন্টাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডি এইড, নারায়ণগঞ্জ প্যাথলজী, সিটি লাইফ, সোনার বাংলা ক্লিনিক ও মেডি লাইফ। এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন সর্বক্ষণ সরকারি এই হাসপাতাল টিতে বিচরন করে থাকার অভিযোগ উঠেছে।



জরুরী বিভাগ ও বর্হিবিভাগে রোগী চিকিৎসা নিয়ে বেড় হলেই এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল গিয়াস, অপু, সালাউদ্দিন, সিজান, জাকির ব্রাদার, খাইরুনিসহ এই দালাল চক্র গিরে ধরে। এরা রোগীদের ভুলবাল বুজিয়ে তাদের নির্দিষ্ট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে পরিক্ষা-নিরিক্ষা’র নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। ভোক্তভুগিদের দাবী হাসপাতাল সমন্ধে এরা রোগীদের বিষিয়ে তুলে। হাসপাতালে এসব পরিক্ষা-নীরিক্ষা হয় না। আমার সাথে আসেন দ্রুত পরীক্ষ করে রিপোর্ট দিয়ে দিবো।



ভোলাইল এলাকার মধ্যবিক্ত পরিবারের গৃহবধূ বিউটি বেগম (২৫) এসেছেন চিকিৎসা নিতে এই হাসপাতালে। তিনি জানান, সরকারি হাসপাতাল সমন্ধে জনগনের দীর্ঘদিনের নানা অভিযোগ থাকলেও এখানে ফ্রিতে চিকিৎসা নেয়া যায়। পরিক্ষা-নিরিক্ষা ও কম খরচে করা যায়। কিন্তু দালাল উৎপাতের কারনে এই হাসপাতালের দুর্রনাম হচ্ছে। তিনি জানান, জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নেয়ার পর দালাল চক্র গিরে ধরে। তাকে বাহির থেকে পরীক্ষা করার কথা বলা হলে অস্বিকৃতি জানান তিনি।



মুক্তারপুর থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসছেন মো. জুয়েল হাসান। তিনি জানান, কয়েক দিন থেকে পেটের ব্যাথায় ভুগছিলেন। চিকিৎসা নিয়ে বেড় হওয়ার পর দালালরা গিরে ধরে। তিনি কিছু বুজে উঠার আগে তাকে টানাটানি করতে থাকে তারা। তিনি ক্ষোভ করে বলেন, এই জন্য সরকারি হাসপাতালে সবাই আসতে চান না। প্রাইভেট চিকিৎসকের নির্দেষে অনেক পরিক্ষা-নিরিক্ষা করানো হয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তাই স্বজদের অনুরোধে সরকারি হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে। চিকিৎসাও নিয়েছি। টিকেট কাটা ছাড়া আর কোন খরচ হয়নি। টিকেটে লেখা তিনটি ওষুধই হাসপাতাল থেকে বিনে পয়সায় দেওয়া হয়েছে।



দালাল উৎপাতের ব্যাপারে জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. আসাদুজ্জামান জানান, দালালদের উৎপাত রয়েছে। কিন্তু আমি যতক্ষুন হাসপাতালে থাকি দালালদের দেখি না। বর্তমানে এই হাসপাতালে করোনা টিকা দেওয়া হচ্ছে অনেক ভিড়। দুই এক দিনের মধ্যে ভিড় কমে আসবে। তখন দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর