বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ডিএনডি নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের মাঝে ক্ষোভ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২১  

মোটা অংকের বাজেট নিয়ে ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ চলছে গত কয়েক বছর ধরে। কিন্তু দিনে দিনে জলাবদ্ধতা কমার পরিবর্তে আরো বাড়ছে। বিশেষ করে ফতুল্লা থানার ফতুল্লা ও কুতুবপুর ইউনিয়নে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। এবার বর্ষা শুরু না হতেই চরম দুর্ভোগের কবলে পতিত হয়েছে সর্ব স্থরের সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে ফতুল্লা থানার ইসদাইর থেকে লালপুর এলাকা পর্যন্ত ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কুতুবপুর ইউনিয়নেরও বিভিন্ন এলাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। তাই ডিএনডির ভেতরের জনপ্রতিনিধিদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

 

কারণ, কোন এলাকায় কি ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে সেটা জানেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। অথচ মেঘা প্রকল্পের কাজে এই জনপ্রতিনিধিদেরই সম্পৃক্ত করা হয়নি। নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের কার্যালয় ডিএনডির ভেতরে। অথচ কি ভাবে কি কাজ হচ্ছে এটা জানেন না জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন। কয়েক দিন আগে এ বিষয়ে তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ডিএনডি প্রজেক্টের কাজ কিভাবে হচ্ছে আমরা জানি না। কখনো আমাদের মতামত নেয়া হয়নি। এটা জানেন শামীম ওসমান। কারণ তিনিই ক্রেডিট নিচ্ছেন।

 

তবে আমি মনে করি ডিএনডি প্রকল্পের কাজ যদি পরিকল্পিতভাবে না হয় তাহলে এটা বুমেরাং হবে। সরকারের দেয়া শত শত কোটি টাকার কাজের কোনো সুফল জনগন পাবে না। অপরদিকে এ বিষয়ে জানতে গতকাল কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুর সাথে আলাপ হলে তিনি বলেন, একদিন এই সংক্রান্ত একটি মিটিংএ আমি অংশগ্রহন করেছিলাম। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসনে যে কাজ চলছে সেই কাজে আমার ইউনিয়ন পরিষদকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। আমার ইউনিয়নের কোথায় কি সমস্যা আছে এটাও আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়নি। তারা নিজেরাই কাজ করছেন। আর কাজ হচ্ছে গতানুগতিক।

 

এদিকে এ বিষয়ে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপনের কাছে জানতে চাইলে তিনিও একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন। তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নের বিশাল এলাকা ডুবে আছে। কিন্তু আমরা যে মেঘা প্রকল্পের কথা শুনছি এই প্রকল্পের কোনো সুফলই আমরা পাচ্ছি না। বরং আমি বলবো আমার ইউনিয়নের বিরাট অংশ বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। আমার নিজের বাড়িও বৃষ্টির জলে ডুবে গেছে। তিনি বলেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করার জন্য এরই মাঝে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। তাই আমরা এখন ইউএনও মহোদ্বয়ের সাথে যোগাযোগ করছি। এখন উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্ঠা চলছে।

 

প্রসঙ্গত একদিকে ডিএনডি এলাকায় গত চার বছর ধরে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলছে, অপরদিকে দিনে দিনে ডিএনডির বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা আরো বাড়ছে। শুধু বাড়ছেই না, অনেক এলাকায় পরিস্থিতি এতোটাই জটিল আকার ধারন করেছে যে বহু মানুষ ওই সব এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। যেমন ফতুল্লার ইসদাইর ও লালপুর এলাকা। ওইসব এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট, দোকানপাট, বাড়িঘর সব ডুবে যায়। এছাড়া কুতুবপুরের বিভিন্ন গ্রাম সহ আরো বহু এলাকা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। তাই প্রশ্ন উঠেছে কি কাজ হচ্ছে ডিএনডিতে। মানুষের এই দূর্ভোগের শেষ কোথায়? স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারছেন না।

 

এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বরাবরই দাবি করে আসছেন তিনি এই প্রকল্পের কাজের জন্য মোটা অংকের বাজেট এনে দিয়েছেন। তিনি এই কথা বলেছিলেন ডিএনডি এলাকা হবে রাজধানীয় ঢাকার চেয়েও অনেক বেশি বসবাসের উপযোগী এলাকা। কিন্তু আসলে কোথায় কি কাজ হচ্ছে সেই খবর রাখেননি শামীম ওসমান। তাই এখন যা হবার তাই হচ্ছে। দিনে দিনে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর