বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ডিপিডিসির বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ভোগান্তি চরমে

আবু সুফিয়ান

প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০২৩  


# ডিপিডিসির দাবি খুঁটিগুলো তাদের নয়

# ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস সেতু কর্তৃপক্ষের
 

ঢাকা মুন্সীগঞ্জ সড়ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ত একটি সড়ক। এই সড়কটি যথেষ্ট সরু হয় যানজট এখানকার নিত্যদিনের ঘটনা। দিনের বেশিরভাগ সময়ই এই সড়কে যানজট লেগেই থাকে। এই ব্যস্ত সড়কে যানজট বাড়াতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ডিপিডিসির বৈদ্যুতিক খুঁটির কারণ।

 

 

অত্যন্ত ব্যস্ত এই সড়কের ফুটপাত দখল করেও রাস্তার কিছু অংশ দখলের কারণে সরু এই সড়কটি আরো সরু হয়ে গেছে। ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জ এর বিদ্যুৎ বিতরণের চরম ব্যবস্থাপনার কারণে এই সড়কের যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বৈদ্যুতিক এই খুঁটিগুলো ফুটপাত এবং সড়ক দখল করে রাখায় পথচারীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারছেন না।

 

 

আর এই সড়কে যানজট দিনের বেশিরভাগ সময় লেগে থাকার কারণে পথচারীদের ফুটপাত ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এই বৈদ্যুতিক ক্ষতিগুলোর কারণে ফুটপাত বন্ধ থাকায় জরুরি প্রয়োজনে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়কে পারাপার হচ্ছেন। এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন নারায়ণগঞ্জের শাসনগাও এলাকার বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন।

 

 

তিনি যুগের চিন্তা কে বলেন, আমি এসব দিনে নিয়মিত যাতায়াত করি। এছাড়া অত্যন্ত ব্যস্ত একটি সড়ক যার কারণে সবসময় যানজট লেগে থাকে। আর অতিরিক্ত যানজটের কারণে আমি যখন নারায়ণগঞ্জ থেকে ফিরি তখন পঞ্চবটি থেকে আমার বিসিকের বাসায় হেঁটেই যাওয়ার চেষ্টা করি। কারণ যানজটের মধ্যে গাড়িতে বসে না থেকে পায়ে হেঁটে গেলেই আমি স্বাচ্ছন্দ বোধ করি।

 

 

বৈদ্যুতিক খুঁটির ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি প্রায় দুই মাস যাবত এডভেঞ্চার ল্যান্ড পার্কের সামনের ফুটপাত এবং রাস্তা দখল করে ডিপিডিসির বৈদ্যুতিক খুঁটি দেখছি। এই খুটিগুলোর কারণে যারা পায়ে হেঁটে চলাচল করেন অথবা যারা ফুটপাত ব্যবহার করেন তাদের জন্য ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে।

 

 

কারণ এই বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো ফুটপাত সহ খানিকটা রাস্তা দখল করে আছে যার কারণে লোকজন ভালোভাবে চলাচল করতে পারছে না। যখন যানজট লাগে তখন কেউই ফুটপাত দিয়ে যেতে পারে না অনেকেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কারণ জীবনের ঝুঁকে নিয়ে তো আর যাওয়া উচিত না। 

 

 

যুগের চিন্তার সঙ্গে কথা হয় স্কুল ছাত্র মো. রায়হানের সাথে। তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন বাসা থেকে হেঁটে পঞ্চবটিতে আসি। কিন্তু গত দুই মাস থেকে এখানে ডিপিডিসির পোল (বৈদ্যুতিক খুঁটি) রাখার কারণে নিরাপদে চলাচল করতে পারছি না।

 

 

এই বিষয়টি নিয়ে বিগত প্রায় দুই মাস আগে দৈনিক যুগের চিন্তায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয় ব্যস্ত এই সড়কে ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জের বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বৈদ্যুতিক খুঁটি রাস্তা এবং সড়ক দখল করে রাখার কারণে মানুষের কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

 

 

কিন্তু ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জ এর কর্মকর্তাবৃন্দরা মানুষের দুর্ভোগ দেখেও যেন না দেখার ভান করে থাকেন। যার কারণে আরো বেশি দুর্ভোগ হতে হয় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষদের। সবথেকে বেশি দুর্ভোগ হতে হয় পোশাক কর্মীদের। কেননা এই সড়কের পাশেই শিল্প এলাকা বিসিকের অবস্থান যেখানে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কাজ করে থাকেন। যাদের বেশিরভাগই এই সড়কে নিয়মিত যাতায়াত করেন এবং এই বৈদ্যুতিক খুঁটির কারণে ভোগান্তির শিকার হন। 

 

 

বিষয়টির জন্য নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটিতে অবস্থিত ডিপিডিসির ফতুল্লা ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশনে যোগাযোগ করা হয়। জানা যায় ফুটপাতএবং সড়ক দখল করে বৈদ্যুতিক খুঁটি রাখার ওই এলাকাটি এন ও সি এস শীতলক্ষ্যা অফিসের অধীনে। পরে যোগাযোগ করা হয় ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জ এর শীতলক্ষা অফিসের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম মোরশেদের সাথে।

 

 

কথা হলে তিনি যুগের চিন্তা কে জানান, নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি এলাকার অ্যাডভেঞ্চার ল্যান্ড পার্কের বিপরীত পাশে রাস্তা এবং উৎপাদ দখল করে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো রাখার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। এই বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো তার ডিভিশনের নয় এরকমটা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এই বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো কোন প্রজেক্টের হতে পারে।

 

 

রাস্তার পাশে এই বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো রাখার কারণে চলাচলকারীদের অসুবিধা হচ্ছে এরকম ছবি তিনি চাইলে তার সুবিধার জন্য অনলাইন মাধ্যমে কিছু ছবি তার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় তিনি বলেন, এই বৈদ্যুতিক খুটি গুলো কোথায় আছে আমি লোক পাঠিয়ে খোঁজখবর নেব। কিন্তু ছবি পাঠানোর পর তার সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি।

 

 

বিষয়টির জন্য সওজ নারায়ণগঞ্জে যোগাযোগ করা হয়। সেখানকার কর্মকর্তারা জানান ওই এলাকাটি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অধীনে। পরে যোগাযোগ করা হয় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) মো. রূপম আনোয়ার এর সাথে। তিনি যুগের চিন্তা কে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

 

 

তারই পরামর্শে যোগাযোগ করা হয় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মনিরুজ্জামান মনির এর সাথে। তিনি যুগের চিন্তাকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ডিপিডিসি যদি ফুটপাত এবং রাস্তা দখল করে বৈদ্যুতিক খুঁটি রাখে তাহলে আমি অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।  এন.হুসেইন/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর