বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

তাদের পরিদর্শনে ইসদাইরবাসীর প্রাপ্তি শূন্য

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০২১  

গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। বিশেষ করে ডিএনডির ফতুল্লা এলাকার মানুষ চরম দূর্ভোগের মাঝে জীবনযাপন করছেন। কোনো কোনো এলাকায়তো রাস্তার উপর দিয়ে নৌকা চলাচল করছে। ফলে এরই মাঝে জলাবদ্ধতার এই ভয়ানক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ফলাও করে রিপোর্ট প্রচার করা হয়েছে। আর ফতুল্লার এই সকল জলাবদ্ধতা কবলিত এলাকাগুলির মাঝে বৃহত্তর ইসদাইর এলাকা উল্লেখযোগ্য।

 

জানা গেছে ইসদাইর এলাকাবাসী আরো অন্তত এক মাস আগে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের দূর্দশার কথা জানান। এরপর শামীম ওসমানের নির্দেশে ইসদাইর এলাকা পরিদর্শনে যান নারায়ণগঞ্জ সদরের ইউএনও আরিফা জহুরা এবং শামীম ওসমানের অনুসারী দুই নেতা শাহাদাৎ হোসেন সাজনু এবং এহসানুল হাসান নিপু। তারা ওই এলাকায় গিয়ে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে আসেন। কিন্তু এলাকাবাসী জানিয়েছেন তারা ওই এলাকা পরিদর্শন শেষে প্রায় এক মাস চলে গেলেও কোনো কাজ হয়নি। তাদের কাছ থেকে এলাকাবসীর প্রাপ্তি শুন্য। ইসদাইর তথা ফতুল্লার বিশাল এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে তারা কোনো কাজ করেননি।

 

তাই ইসদাইর এলাকাবাসীর প্রশ্ন, কিছু যদি নাই করবেন তাহলে তারা কেনো এলাকা পরিদর্শন করলেন? ইসদাইর এলাকাবাসী জানিয়েছেন বৃষ্টির পানি না সরার কারনে তাদের এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে থাকছে। তাই পানি সরানোর ব্যাবস্থা করাটাই ছিলো জরুরী। আর তার জন্য প্রয়োজন হলো নগদ টাকার, যে টাকা দিয়ে পানি চলাচলের রাস্তা উম্মুক্ত করে দেয়া হবে। তারা আরো বলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকায় যেভাবে বছরে দুইবার ড্রেনগুলি পরিস্কার করা হয় সেভাবে পরিস্কার করা জরুরী ছিলো। কিন্তু সেটা করা হয়নি।

 

এ ব্যাপারে সরকারী ভাবে বা এমপির লোকেরা গতকাল পর্যন্ত এক টাকার সাহায্যও করেননি। এমপি শামীম ওসমান চলে গেছেন আমেরিকায়। তিনি কি নির্দেশ দিয়ে গেছেন সেটাও পরিষ্কার নয়। ইউনিয়ন পরিষদও কোনো সহায়তা করছে না। এক কথায় গতকাল পর্যন্ত ওই এলাকার খাল ও ড্রেন পরিস্কার করার জন্য কেউ এক টাকার বরাদ্ধও দেয়নি। তাই এলাকাবাসী নিজেরাই টাকা তুলে বৃষ্টির পানি নামার জন্য খাল ও ক্যানালগুলি পরিস্কার করছে। গতকাল পর্যন্ত এলাকাবাসী এক লাখ টাকা খরচ করেছে খাল ও ক্যানাল পরিস্কার করার জন্য।

 


এদিকে এলাকাবাসী আরো জানিয়েছে, ইউএনও আরিফা জহুরা ওই এলাকা পরিদর্শন করার পর ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান স্বপন এবং এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তাদেরকে বলেছিলেন পানি নিস্কাশন ব্যাবস্থা সচল করার লক্ষ্যে খাল ও ড্রেন পরিস্কার করার জন্য দশ লাখ টাকা দেবে উপজেলা পরিষদ। কিন্তু আষাঢ় মাস শুরু হওয়ার পরেও কোনো টাকা বরাদ্ধ দেয়নি উপজেলা পরিষদ বা ইউনিয়ন পরিষদ।

 

তাই এলাকাবাসীর প্রশ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে যদি কোনো কাজই না করবেন তাহলে তারা কেনো ওই এলাকা পরিদর্শন করলেন? তাদের পরিদর্শনে এলাকাবাসীর কি লাভ হলো? তাই তারা মনে করেন কেবলই লোক দেখানো পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় ইউএনও এবং স্থানীয় এমপির প্রতিনিধিরা।
প্রসঙ্গত এবার বর্ষার শুরুতেই ডিএনডির বিশাল এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ডুবে গেছে ফতুল্লা, এনায়েতনগর এবং কুতুবপুর ইউনিয়নের বিশাল এলাকা। যার ফলে ওই এলাকার এমপি একেএম শামীম ওসমান ব্যাপক সমালোচনার শিকার হচ্ছেন। কিন্তু এসব সমালোচনা মোটেও গায়ে মাখছেন না শামীম ওসমান। এলাকাবাসীর সমস্যার কোনো রকম সমাধান না করেই শামীম ওসমান এমপি চলে গেছেন আমেরিকা ভ্রমন করতে। তাই চরম দূর্ভোগের মাঝে জীবনযাপন করছেন ওইসব এলাকার সাধারন মানুষ।
 

এই বিভাগের আরো খবর