শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

তৃণমূলের টুঁটি চেপে ধরলেন রশীদ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০২১  

উপজেলা নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে এসে যখন বন্দর উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ তাদের অসহায়ত্বের কথা বলতে শুরু করে, প্রতিটি ইউনিয়ন এর নেতৃবৃন্দসহ তৃণমূলের কর্মীরা যখন তাদের বুকের ভিতর একটু একটু করে জমিয়ে রাখা কষ্ট, উপজেলা আওয়ামী লীগের বিমাতাসূলভ আচরণের প্রতিকার চেয়ে বন্দর আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব রক্ষার দাবি জানানো শুরু করে, ঠিক তখনই তাদের মুখ বন্ধ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে শুরু করে স্থানীয় রাজাকারদের দোসরসহ কিছু নীতিভ্রষ্ট সুবিধাবাদী আওয়ামী লীগ নেতা।

 

যারা নিজেদের স্বার্থে জাতীয় পার্টির মাঝে নিজেদের অস্তিত্ব বিলিয়ে দিতে শুরু করেছে। বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এমএ রশীদ বন্দর আওয়ামী লীগের কর্তা সেজে তাদের নির্বাচনের মনোনয়নসহ স্থানীয় কমিটিতে অন্তভর্‚ক্তির বিষয়ে তার প্রভাব বিস্তার করে স্থানীয় সুবিধাবাদীদের নামিয়ে দেন তাদেরকে দমন করতে। এ বিষয়ে বন্দরের তৃণমূলের একাধিক নেতা কর্মী তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইতিমধ্যে যারা মুখ খুলেছেন তাদের বিরুদ্ধে মাঠে কাজ করছে এমএ রশীদের একটি বিশাল সুবিধাবাদী বাহিনী।

 

সুবিধাবাদীদের দাবি, এমএ রশীদ সদ্য শ্রেষ্ঠ জনপ্রতিনিধি হওয়ার খ্যাতি অর্জন করেছেন। এমন নেতার বিরুদ্ধে তারা কোন অবস্থাতেই কোন প্রকার অভিযোগ তারা বরদাস্ত করবেন না, কিন্তু যখন দল যখন হুমকির মুখে পড়ে তখন রশীদ সাহেবের কিছু আসে যায় না। তৃণমূলের কোন কর্মী বা স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী যখন কোন বিপদে পড়ে তখন তাদের মুখে কোন প্রকার রাও (কথা) বের হয় না। সূত্র আরো জানায়, স্থানীয় পর্যায়ের নেতা কর্মীদের দাবি এমএ রশীদ শ্রেষ্ঠ জনপ্রতিনিধি না হয়ে জনগণের প্রতিনিধি হয়ে জনগণের জন্য স্বউদ্যোগে কিছু করতে পারলে এবং উপজেলা কমিটির নেতা না হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা হতে পারলে তার জনপ্রিয়তা আরো অনেক বৃদ্ধি পেত।


 
একাধিক সূত্র জানায়, নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাসহ তৃণমূলের কর্মীগণ দলকে রক্ষার দাবিতে, এবং দীর্ঘ বছর যাবত বন্দরে আওয়ামী লীগের সাংসদ না থাকায় দলের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে উপজেলা পর্যায়ের নেতৃত্বকে সুসংগঠিত করার জন্য এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিকে প্রকৃত আওয়ামী লীগের করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার আহবায়ন জানায় জেলা কমিটিসহ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে। দাবি জানায় ইউনিয়ন পর্যায়ের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিতে তখন তারা গণমাধ্যমের মাধ্যমেও তারা তাদের এই দাবি জেলা পর্যায়সহ নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌছে দিতে চান, তখন তাদের উপরে শুরু হয় দমন-পীড়ন।

 

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল (ভিপি বাদল) এর নিকট তার তাদের মতামতের উপর ভিত্তি করে অনাস্থা প্রস্তাবও দেয়া হয়। তারাও এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ভূমিকা রাখতে পারছেন না। ইতিমধ্যে খোদ জেলা কমিটি থেকেই বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের এই কমিটিকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাদেরকে না জানিয়ে পাশ কাটিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নির্বাচিত করা হয়েছে বলে তারা বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও কোন প্রকার সদুত্তর দিতে পারেননি।

 

বন্দর আওয়ামী লীগের একাধিক কর্মী জানান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমান জাতীয় পার্টির সমর্থিত হলেও তার সহোদর একই পরিবারের সদস্য নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের সমর্থিত। বন্দর আওয়ামী লীগের বিরাট একটি অংশ শামীম ওসমানের অনুসারীও বটে। যারা বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে শামীম ওসমান নামের পিছনেও ছুটে আসেন। তাই এখনো স্থানীয় আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য একেএম শামীম ওসমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ জেলা পর্যায়ের সকল শ্রেণির নেতাদের এগিয়ে আসা উচিৎ বলে মনে করেন।
 

এই বিভাগের আরো খবর