শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দেশের সার্বিক উন্নয়নে কারিগরী শিক্ষার কোন বিকল্প নেই (ভিডিও)

লতিফ রানা

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২০  

দেশের সার্বিক উন্নয়নে কারিগরী শিক্ষার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন গণবিদ্য নিকেতনের প্রধান শিক্ষক এমএ কাইয়ুম ও নারায়ণগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ইনচার্জ প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল সাইফ (রেজান)।

 

বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত যুগের চিন্তার সাপ্তাহিক আয়োজন ‘শিক্ষাঙ্গন”এ সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এধরণের মন্তব্য করেন এই শিক্ষকদ্বয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা ওম্মে সালমা স্বর্ণা।

 

কারিগরী শিক্ষার গুরুত্বের বিষয়ে আলাপ করতে গিয়ে গণবিদ্যা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক এমএ কাইয়ুম বলেন, তাত্ত্বিক জ্ঞান এবং ব্যবহারিক জ্ঞান যদিও ভিন্ন বিষয় তবুও এই দুইটার সমন্বয় যে কোন কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। কোন কাজের পরিপূর্ণতা বৃদ্ধিতে এই দুইটার সমন্বয় করা খুবই জরুরী।

 

তিনি বলেন, যদি ভালভাবে জোরালোভাবে পদক্ষেপ নেয়া যায়, শিক্ষার্থীরা যদি দক্ষ হয়ে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে ভূমিকা রাখতে পারে, তাহলে অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরাও এ বিষয়ে আকৃষ্ট হবে। এর জন্য এই শিক্ষার বিষয়ে ব্যপকভাবে প্রচার করতে হবে।

 

তিনি বলেন, সরকারী নীতিমালাগুলো যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয় তাদের প্রত্যক্ষ কর্মকান্ড পজিটিভ হয় তাহলে দক্ষ জনশক্তি আরো বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষার্থীরাও এই শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হবে।

 

 

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করতে শুধু ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই নয়, পারলে আরো আগে থেকেই কারিগরী শিক্ষার বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।

 

শারীরিক প্রযুক্তির যে বিষয়গুলো সংযোগ করা হয়েছে তা পরীক্ষা না হলেও শিক্ষার্থীদের অনেক কাজে লাগে বলে তিনি মনে করেন।

 

তিনি বলেন, যারা দক্ষ তারা কিছু উৎপাদন করতে পারে। অদক্ষরা উৎপাদন করতে পারেনা বরং যারা দক্ষ তাদের উৎপাদনেও বাধার সৃষ্টি করে। দক্ষ লোকের কাজকর্ম সুচারু রূপে হবে এটাই স্বাভাবিক বলে তিনি মনে করেন।

 

তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার সাথে সাথে যেন কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব দেয়া হয়। প্রত্যেকটা স্কুলে যদি কারিগরী শিক্ষার ব্যবস্থা থাকে তাহলে শিক্ষার্থীরা কিছু অবশ্যই শিখবে। সাধারণ শিক্ষার সাথে অন্তত ত্রিশ ভাগ কারিগরী শিক্ষা রাখতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

 

তার মতে উন্নয়নে অবদান রাখলে জনগণ সম্পদ এবং অবদান রাখতে না পারলে তা বোঝা। শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে উৎসাহিত করতে হলে তাদেরকে এ বিষয়গুলোর প্রয়োজনীয়তা বুঝাতে হবে।

 

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি যেন তারা কিছু কাজ করে। তারা যেন পরিবারের আয়ে একটা ভূমিকা রাখে। তারা প্ররিশ্রম করলে তাদের অভিভাকদের প্ররিশ্রমটা অনুভব করতে পারবে। দেশের উন্নতির জন্য ভূমিকা রাখতে পারবে।

 

 

 

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ইনচার্জ প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল সাইফ (রেজান) বলেন, তাত্ত্বিক জ্ঞান হলো পুথিগত বিদ্যা আর ব্যবহারিক জ্ঞান হলো তার প্রয়োগ। এই দুই বিষয়ের সমন্বয় রেখে কাজ করা প্রয়োজন।

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশে জনগণ এই বিষয়টার গুরুত্ব বুঝতে পারছে না। আমাদের সমাজে যারা বিত্তবান আছেন, এরা অনেকেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী করছে কিন্তু তারা কারিগরী শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দেয় না। তারা মনে করেন এই খাত থেকে ভাল ফিডব্যাক পাবে না।

 

ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানগুলো কম্পিউটারের বিভিন্ন কোর্স চালু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রাফিক্স ডিজাইন এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য। এগুলোর মাধ্যমে ফ্রি ল্যান্সিংয়েও খুব কাজে লাগবে।

 

তিনি বলেন, এখান থেকে শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে শিক্ষা নিচ্ছে। এখানে সরকারসহ যারা বিত্তবান আছেন তাদেরও এগিয়ে আসা উচিৎ।

 

তিনি বলেন, থাইল্যান্ডে তিন মাসের ইংরেজী শিক্ষা দিয়ে ট্যুরিজমে পাঠিয়ে দেয়। তারা গ্রামারের বিষয়ে গুরুত্ব না দিয়ে সহজ ভাষায় শিক্ষা দিচ্ছে।

 

তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার কিছু নাম্বার কমিয়ে ব্যবহারিক এই বিষয়গুলো যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

 

তার মতে আমরা যদি কম্পিউটার শিক্ষার সাথে সাথে এর পার্টসগুলো চিনতে পারি তাহলে তা মেরামতের বিষয়ে অনেক কাজে লাগবে। রান্ন-বান্নাসহ বিভিন্ন শিক্ষায় যদি ব্যবহারিক ক্লাসগুলো আরো বাড়ানো যায় তা হলে আরো ভাল মতো ব্যবহার করা যাবে।

 

এ সময় তিনি বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আরো বাড়ানো হয় সেদিকে যেন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান নজর দেয় সে জন্য অনুরোধ জানান। বাংলাদেশ সরকার যেন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে এই কর্মমূখী শিক্ষাকেও অন্তর্ভূক্ত করে।

 

তিনি বলেন, আমি যদি চাই আমার দেশের উন্নতি হোক। কারিগরী শিক্ষাবোর্ডের শিক্ষা একশতভাগ নিশ্চিত করা হোক। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মিনার কার্টুনে যেভাবে কারিগরী শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে সেখান থেকে উৎসাহিত হয়ে কারিগরী শিক্ষার দায়িত্ব এবং গুরুত্ব যেন তারা বুঝতে পারে।

এই বিভাগের আরো খবর