শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

আবু সুফিয়ান

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২২  


বর্তমান সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতি। চাল, ডাল, তেল সহ নিত্যপ্রয়োজনীও দ্রব্যমূল্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতিদিন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতির কারনে বিপাকে পরতে হচ্ছে ক্রেতাদের। ক্রয়ের উদ্দেশ্যে বাজারে গিয়ে দিশেহারা হতে হয় নিম্ন আয়ের মানুষদের।

 

 

আজ ২৭ নভেম্বর (রোববার) নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতির চিত্র লক্ষ করা গেছে। বেশির ভাগ ক্রেতাই বলেন একই কথা। ক্রেতারা বলেন, ব্যবসা এখন সিন্ডিকেটধারীদের কাছে। সব ব্যবসায়ীরাই ধান্দাবাজ। তাদের ধান্দা একটাই, কখন কোন সুযোগে জিনিস পত্রের দাম বাড়ানো যায়।

 

 

ক্রেতারা আরো বলেন, ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট পণ্য গোপনে গুদামজাত করে বাজারে কৃত্তিম সংকট তৈরী করে। এতে আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষরা ভোগান্তিতে পরি। ক্রেতারা নিয়মিত বাজার মনিটরিং-এর অভাবের কথাও বলেন। দ্বিগুবাবু বাজারের ক্রেতা মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনই কোন না কোন জিনিসের দাম বাড়ছেই। প্রতিদিন যেন বাজারে চলে মূল্য বৃদ্ধির লড়াই। কোন কিছুর দাম যেন কমছে না।

 

 

তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে সয়াবিন তেলের লিটার প্রতি মূল্য ছিল ৮৮ টাকা। ২০২১ সালে লিটার প্রতি বেড়ে দাড়িয়েছে ১১৫ টাকা। আর ২০২২ সালে সর্বশেষ বেড়ে দাড়িয়েছে লিটার প্রতি ১৯০ টাকা। ২০২০ সালে পাম ওয়েল ছিল ৬৪.৫ টাকা, ২০২১ সালে ৯০ টাকা এবং ২০২২ সালে সর্বশেষ ১২৩ টাকা করা হয়েছে।

 

 

মোটা দানার মসুর ডালের দাম ২০২১ সালে ৬৮ টাকা ছিল আর ২০২২ সালে ১২০ টাকা হয়েছে। ২০২১ সালে দেশি মসুর ডালের দাম ছিল ৯২ টাকা, এখন ২০২২ সালে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত।

 

 

সূত্রে জানা গেছে, এলসি খোলার ব্যয় বাড়ায় বিভিন্ন প্রকারের ডালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালে আমদানিকৃত চিনির কেজি প্রতি দাম ছিল ৫৬ টাকা আর বর্তমান ২০২২ সালে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা।

 

 

এদিকে আটার দাম কেজি প্রতি ২০২১ সালে ছিল ২২ থেকে ৩২ টাকা আর এখন ২০২২ সালে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছরের থেকে প্রায় দ্বিগুন। যদিও সরকারি ভাবে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা আটার নির্ধারিত মূল্য ৬০ টাকা থেকে ৬২ টাকা। আবার প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।

 

 

এদিকে শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গোল আলু, লাল আলু, সাদা আলু, গোল বেগুন, লম্বা বেগুন, মূলা, করলা, পটল, লাউ, বরবটি, সিম,  ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, পেয়াজ, মরিচ, টমেটো, গাজর, বাঁধা কপি, ফুলকপি, গাজর, কচুর লতি, শসা, কচুশাক সহ সব ধরনের সবজির বাজার আগের মতই চড়া।

 

 

৫০ থেকে ৬০ টাকার নিচে কোন সবজিই পাওয়া যাচ্ছে না। সবজি বিক্রেতা মোঃ কাইয়ুম মোল্লা জানান, জিনিস পত্রের দাম একটু বেশি। আমরা বেশি দাম দিয়ে কিনছি তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাছাড়া বেশি দামে কিনে তো আর কম দামে বিক্রি করতে পারিনা।

 

 

এদিকে খুচরা বাজারে মোটা চালের নির্ধারিত মূল্য ৪৮ থেকে ৫০ টাকা হলেও দোকান ভেদে পাওয়া যায় ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। মাঝারি মানের চাল ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। আর ভালো মানের সরু চাল প্রায় ৯০ টাকা।

 

 

নারায়ণগঞ্জ শহরের দ্বিগুবাবুর বাজারের মাছ বাজারে গিয়ে মাছের বাড়তি দাম লক্ষ করা যায়। এখানে প্রতি কেজি দরে রুই মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাতলা ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, বাটা ২০০ টাকা, কাচকি ৩০০ টাকা, কাতল ৩০০ টাকা, সিলভার কার্প ২২০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা, টাকি মাছ ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, শোল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, রূপচাঁদা ৭০০ টাকা, শিং ৪০০ টাকা, বড় সাইজের ইলিশ ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত।

 

 

এদিকে কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর গরুর মাংস নারায়ণগঞ্জ শহরে ৭০০ টাকায় এবং শহরের বাইরে বিশেষ করে বিসিক এলাকায় ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বকরি এবং ভেড়ার মাংস ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর