
আগামী নির্বাচন ঘিরে রাজনীতির মাঠ যেন কোন ভাবেই উত্তেজনা কমছে না। যতই দিন যাচ্ছে ততোই রাজনীতির মাঠে উত্তেজনা বাড়ছে। বিশেষ করে এই সরকারকে গত দুই মাস যাবত পদত্যাগের দাবী জানিয়ে এক দফা আন্দোলন করে যাচ্ছে বিএনপি।
এক দফা দাবী জানিয়ে এখনো মাঠে সক্রিয় ভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে বিএনপি। কিন্তু তাদের এই আন্দোলন আওয়ামী লীগ তেমন ভাবে না নেওয়ায় ক্ষমতাসীন দল কোন চাপ মনে করছে না। তবে কয়েকদিন যাবত বাংলাদেশের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারও আমেরিকা শ্যাংসন দিয়েছে।
কিন্তু কাদের দিয়েছে তাদের নাম ঘোষনা করা হয় নাই। তাদের এই ভিসা নীতি নিয়ে প্রশাসনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তার মাঝে আবার তৃনমূল বিএনপি এখন নতুন করে আলোচনায়।
এদিকে তৃনমূল বিএনপিতে মহাসচিব হিসেবে এড. তৈমুর আলম খন্দকার যোগ দেয়ার পর নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি দের বছর নতুন ভাবে আলোচনায় আসেন। নির্বাচন ঘিরে রাজনীতিতে বলাবলি হচ্ছে তৈমুর আলম নারায়ণগঞ্জ-৫ কিংবা নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারে।
কেননা তার বাড়ি রূপগঞ্জ হলেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে তিনি একাধিকবার নির্বাচনে অংশ গ্রহন করায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের তার ব্যপক পরিচিতি রয়েছে। কেননা সিটি করপোরেশনের বেশির এলাকার লোকজন সদর বন্দরের নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের ভোটার।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি আসনের মাঝে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটি অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ হওয়া এই আসনটি নিয়ে ব্যপক ভাবে আলোচনা হচ্ছে। বর্তমানে এই আসনটিতে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম ওসমান।
তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে বলে ইতোমধ্যে ঘোষনা দিয়েছেন। এতে যদি তার মান সম্মান চলেও যায় তাতে তার কোন আসে যায় না। কিন্তু মানসম্মান চলে যাওয়া নিয়ে তিনি কি ইঙ্গিত দিয়েছে তা পরিষ্কার করেন নাই। তবে আগামী নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে।
তাই এখানে আগের মত সহজ জয় পাচ্ছে না এমপি সেলিম ওসমান। এছাড়া এর আগের নির্বাচন গুলোতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের মহাজোটের সাথে জাতীয় পার্টি শরীক দল হওয়ায় তখন ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও তার পক্ষে কাজ করেছে। কিন্তু আগামী নির্বাচনে সেই পরিস্থিতি নেই।
দলীয় সুত্রমতে আগামী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির সেলিম ওসমানকে ঠেকাতে আওয়ামী লীগ বিএনপি থেকে একাধিক প্রার্থী প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার বাইরে নাগরিক ঐক্যফ্রন্টের নেতা এস এম আকরামও এই আসন থেকে নির্বাচন করবেন বলে জানান তার সমর্থকরা।
এছাড়া সদ্য ঘোষিত তৃনমূল বিএনপির মহা সচিব তৈমুর আলম খন্দারও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারে। আর এতে করে জাতীয় পার্টির এমপি সেলিম ওসমানের মাথায় চিন্তার ভাজ পরেছে বলে গুঞ্জন উঠেছে রাজনীতি মহলে। এছাড়া এই আসনটি নিয়ে এখন আওয়ামী লীগ-বিএনপি জাতীয় পার্টির এমপির সাথে ত্রিমুখি উত্তাপ তৈরী হচ্ছে।
জানাযায়, নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে নৌকার প্রার্থী দেয়ার জন্য দীর্ঘ দিন যাবত দাবী জানিয়ে আসছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দ। বিশেষ করে ২০১৮ সনের নির্বাচনের পর থেকে তাদের এই দাবী জোরালো হয়। ২০২২ সনের জানুয়ারীর নাসিক সিটি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে তাদের এই দাবী তুলে ধরা হয়।
এছাড়া সম্প্রতি আওয়ামী লীগের তিন বারের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন চাইবে বলে ঘোষনা করেছে। এমনকি তিনি বলেছেন মেয়র গিরি বাদ দিয়ে এখন এমপি গিরি করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এছাড়া এই আসনের আওয়ামী লীগ থেকে হেভিওয়েট নেতারাও মনোনয়ন চেয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তার মাঝে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নাম সবার উপরে রয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এড. আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এড. খোকন সাহাও ভিতরে ভিতরে মনোনয়ন চেয়ে যাচ্ছেন।
একই সাথে তারা প্রত্যেকেই নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে নৌকার প্রার্থী দেয়ার দাবী জানিয়েছেন। ২০১৮ সনের নির্বাচনেও তারা আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছেন। অপর দিকে বিএনপি এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না বললেও ভিতরে ভিতরে তাদের প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়া আন্দোলনের মাধ্যমে নেতা কর্মীদের চাঙ্গা রেখেছে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
জানাযায়, বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান মনোনয়ন চাইতে পারে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি এড. আবুল কালামও রয়েছে।
তাছাড়া নাসিক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খোরশেদের নামও শুনা যাচ্ছে। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের সহধর্মিনী পারভীন ওসমানের নামও প্রার্থীতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনটি রাজনীতির দল গুলোতে ত্রিমুখি উত্তেজনা চলছে। তাদের মতে এখানে আওয়ামী লীগ বিএনপির আন্দোলনের মাঝে জাতীয় পার্টি সুযোগ সন্ধানীতে রয়েছেন। কিন্তু সচেতন মহলের মতে এবার নিবাচন আগের মত পাড়ি দেয়া যাবে না। এবারের নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হতে তা আগে থেকেই আলোচনা হচ্ছে। এজন্য এখন থেকে রাজনীতির মাঠে উত্তাপ চলছে। এন.হুসেইন রনী /জেসি