বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

না:গঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরো ৪ জনের মৃত্যু

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট ২০২১  

নারায়ণগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে মরণঘাতী ভাইরাসে জেলায় মোট ২৯১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃতদের মধ্যে দুইজন পুরুষ ও দুইজন নারী। মৃত দুই পুরুষ ও এক নারী (৬১) সোনারগাঁয়ের ও অপর নারী (৫০) রূপগঞ্জের বাসিন্দা। এদিকে নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২২৩ জন। এই নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত হলেন ২২ হাজার ৬৬৫ জন।

 

শুক্রবার (১৩ আগস্ট) সকালে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এই তথ্য জানা যায়। নতুন করে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৬০ জন, সদরে ৪৭ জন, বন্দরে ৫৩ জন, আড়াইহাজারে ২৩ জন, সোনারগাঁয়ে ১০ জন ও রূপগঞ্জে ৩০ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

 

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মারা গেছেন ১৩৬ জন ও আক্রান্ত ৮ হাজার ৩৯ জন। অন্যদিকে সদর উপজেলায় মারা গেছেন ৫১ জন ও আক্রান্ত ৪ হাজার ৬৯৩ জন। বন্দর উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ১৭২ ও মারা গেছেন ২৪ জন। এছাড়া আড়াইহাজারে আক্রান্ত ১ হাজর ৫৫১ ও মারা গেছেন ৪ জন, সোনারগাঁয়ে আক্রান্ত ২ হাজার ৩৬৫ জন ও মারা গেছেন ৬০ জন এবং রূপগঞ্জে মারা গেছেন ১৬ জন ও আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮৪৫ জন।

 

 

জেলায় এই পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৯৩৫ জনের। করোনা আক্রান্ত থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন মোট ১৮ হাজার ৮৪২ জন। তার মধ্যে সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৬ হাজার ৮১৪ জন, সদর উপজেলার ৩ হাজার ৯০৪ জন, রূপগঞ্জের ৩ হাজার ২৯৩ জন, আড়াইহাজারের ১ হাজার ২৩৯ জন, বন্দরের ১ হাজার ৭১৫ ও সোনারগাঁয়ের ১ হাজার ৮৭৭ জন।

 

এদিকে চলতি মাসের ১৩ দিনে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮৮০ জন। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক বলে মনে করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এদিকে গত ১১ আগস্ট থেকে গণপরিবহন ও দোকানপাট চালুসহ লকডাউনের সকল বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়েছে।

 

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রকাশিত তথ্যসূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৮ মার্চ সারাদেশের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরে। এরপর ৩০ মার্চ বন্দর উপজেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত এক নারীর মৃত্যু হয়। মৃতের সংখ্যা গত দেড় বছরে ২৯১ জনে দাঁড়িয়েছে। চলতি আগস্ট মাসের ১৩ দিনে ৩০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। দৈনিক গড়ে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। দৈনিক গড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ২২১ জন।

 

তথ্যসূত্রে জানা যায়, গত ১ আগস্ট করোনভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৭৮৫ জন। ১৩ দিনের ব্যবধানে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৬৬৫ জনে। গত চব্বিশ ঘন্টায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি চারজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫০ বছর বয়সী এক পুরুষ সোনারগাঁ উপজেলার বাসিন্দা। তিনি ভর্তি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার একমাত্র কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে। সোনারগাঁ উপজেলার আরও এক নারী ও এক পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৯ বছর বয়সী পুরুষ ভর্তি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কোভিড হাসপাতালে এবং ৬১ বছর বয়সী নারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। একইদিনে রূপগঞ্জ উপজেলার ৫০ বছর বয়সী এক নারী মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

 

সংক্রমণের এই উর্ধ্বগতির মধ্যে গত ১১ আগস্ট থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলাসহ সারাদেশে চলছে গণপরিবহন, খুলেছে দোকানপাট। গত ১ জুলাই করোনাভাইরাসের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকার বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি করে লকডাউন ঘোষণা করে। ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে সেই বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। ঈদের পরে দ্বিতীয় দফায় বিধিনিষেধ জারি করা হয়। গত ১১ আগস্ট সকল বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে দোকানপাট কিংবা গণপরিবহন চালু রাখার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা রয়েছে। সাধারণ মানুষের প্রতিও স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের। তবে তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে রয়েছে উপেক্ষিত।

 

এদিকে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে টিকার আওতায় আনা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। গত ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়। তা চলে তিনদিন পর্যন্ত। এরপর গত ১২ আগস্ট পর্যন্ত সরকারি হাসপাতাল কেন্দ্রগুলোতেও ম্যাসেজ ছাড়াই গণটিকা প্রদান কার্যক্রম চলেছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শেখ মোস্তফা আলী জানিয়েছেন, ১৩ আগস্ট শুক্রবার থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে টিকা প্রদান কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ১৬ আগস্ট থেকে নিয়ম অনুযায়ী পুনরায় টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে। এদিকে গত কয়েকদিন গণটিকা কার্যক্রম চলায় সরকারি হাসপাতাল কেন্দ্রসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে টিকাগ্রহীতার উপচে পড়া ভিড় ছিল। দীর্ঘ লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে করোনার প্রতিষেধক (টিকা) গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এই বিভাগের আরো খবর