বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নিরাপত্তা চেয়ে এসপি বরাবর আনোয়ার জসিম পরিষদের আবেদন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২২  

# হুমকি-ধমকি ও পেশীশক্তি দেখানোর চেষ্টা করলে শক্তহাতে দমন করার হুঁশিয়ারি
# আইনজীবীদের নির্বাচনে কোনো বহিরাগতদের দেখতে চাই না : আনোয়ার
# আইনজীবীরা কারো রক্তচক্ষুকে ভয় পাবেন না : জসিম

 
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির মনোনীত প্যানেল (এড.আনোয়ার হোসেন-এড. জসিম উদ্দিন) পরিষদের সকল প্রার্থীর নিরাপত্তা চেয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছেও প্রার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা ও ব্যালট পেপার মুড়িয়ে ভোটারদের স্বাক্ষরসহ নির্বাচন কালীন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও আবেদন করেছেন আনোয়ার- জসিম পরিষদের ৬ প্রার্থী।
 রোববার (১৬ জানুয়ারি ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে এই আবেদন করেন আনোয়ার- জসিম পরিষদের ৬ প্রার্থী সভাপতি এড. আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এড. জসিম উদ্দিন, সহ-সভাপতি এড. এমদাদ হোসেন সোহেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. মামুন সিরাজুল মজিদ, কোষাধ্যক্ষ এড. রোমেল মোল্লা, সমাজ সেবা সম্পাদক ইখতিয়ার হাবীব সাগর।  পরে  প্রধান নিবার্চনের কাছেও এই আবেদন করেন।
এদিকে নির্বাচনের প্রচারণার শেষদিনেও আদালত পাড়ায় প্রচারণা ও গণসংযোগ করে সাধারণ আইনজীবী ভোটারদের কাছে আনোয়ার- জসিম পূর্ণ প্যানেলের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন। পরে আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে এক পরিচিতি সভা করেন। তারা বলেন, আমরা পূণ্য প্যানেল না দিলে গুরুত্বপূর্ণ ৬টি পদে প্রার্থী দিয়েছি। আপনারা আইনজীবীব সমাজ অত্যন্ত বিচেক্ষণ সমাজ। আপনাদরে সুচিন্তিত মতামত অবশ্যই যোগ্য ও প্রাথীকেই ভোট দিবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। আপনারা কারো রক্তচক্ষুকে ভয় পানে না। আমরা নির্বাচনের মাঠে আছি এবং শেষ পর্যন্ত থাকবো ইনশাল্লাহ। আর যদি নির্বাচনের দিন বহিরাগতরা এসে কোনো প্রকার ভয়ভীতি, হুমকি- ধমকি ও পেশীশক্তি দেখানোর চেষ্টা করে তাহলে সকল আইনজীবীদের নিয়ে শক্তহাতে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।  
লিখিত আবেদন উল্লেখ করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে (২০২২- ২০২৩) এর এড. আনোয়ার হোসেন-এড. জসিম উদ্দিন প্যানেলের বিভিন্ন পদের প্রার্থী। নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর হইতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্যানেলের প্রার্থীর সন্ত্রাসী লোকজন আমাদের প্যানেলের প্রার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি- ধামকি দিচ্ছে। নির্র্বাচনী প্রচার- প্রচারণা থেকে বিরত রাখার জন্য বিভিন্ন রকম হুমকি দিচ্ছে। উল্লেখ যে, বিগত ২০২১-২০২২ সালের নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এড. মো. জসিম উদ্দিনকে নির্বাচনের দিন সকাল আনুমানিক নয়টার সময়ে আদালত প্রাঙ্গন হইতে প্রকাশ্যে দিবালোকে তুলিয়া নিয়া যায়। তাছাড়া সন্ধ্যার দিকে অনেক আইনজীবীকে শারীরিক ভাবে প্রহার করা হয়েছে।  নির্বাচনে ব্যালট বাক্স বদলিয়ে ফেলা হয়েছিলো। এই রূপ কারনে আমরা আমরা আশংকা করিতেছি যে, আমাদের প্যানেলের যে কোনো প্রার্থীকে প্রতিপক্ষের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করাসহ খুন, জখম, অপহরণ বা গুম করার সম্ভাবনা রহিয়াছে। তাছাড়া নির্বাচনের দিন নির্বাচনী কেন্দ্রে অর্থাৎ আইনজীবী সমিতিতে বে- আইনী প্রবেশ করিয়া ব্যালট বাক্স ছিনতাই করিতে পারে। এসকল কিছু বিবেচনা করিয়া আমাদের প্যানেলের সকল প্রার্থীকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
পরিচিতি সভায় সভাপতি পদপ্রার্থী এড. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরাই বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত সৈনিক। আমরা ছাত্র অবস্থায় ছাত্রলীগ করেছি। পরে যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃত্ত রয়েছি। কিন্তু আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আমাদেরকে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের দূর সময়ে আমরাই ছিলাম। সেই সময়ে এমপি শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিলো সেই মামলা প্রত্যাহারের জন্য বারে আন্দোলন সংগ্রামও করেছি এবং গণস্বাক্ষরও করেছি। কিন্তু দলের সুসময়ে আমরা ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতারা বঞ্চিত। দলের কিছু হাইব্রিড নেতারা আইনজীবী সমিতিকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন।
তিনি বলেন, ওই প্যানেলের যিনি সভাপতি প্রার্থী তিনি কোনোদিন আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেনি। তিনি কোন দলের রাজনীতি করেছে তা সবাই জানে। তার ছোট ভাই রাশেদ ফেরদৌস সোহেল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে মেয়র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছে। এতেই কিন্তু প্রমান হয় তারা কোন দলের রাজনীতি করেন। তারা হলেন সুবিধাবাদী ও হাইব্রিড।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিটি আইনজীবীদের কাছে গিয়েছি এবং ভোট প্রার্থনা করেছি। আনোয়ার - জসিম পরিষদে আমরা ছয় জন সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পাশ করবো বলে আমরা দৃঢ় আশাবাদী। আমরা আশাকরি এখন যেমন পরিবেশ সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ রয়েছে ভোটের দিনও তা বজায় থাকবে। আমরা ইতিমধ্যে চীফ নির্বাচন কমিশনারের সাথে দেখা করেছি এবং তিনি আমাদের বলেছে ইতিপূর্বে কি হয়েছে না হয়েছে তবে ভোটের দিন সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। আমাদের বিশ্বাস ভোটাররা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। অতীতে নির্বাচনে বহিরাগতদের আদালত পাড়ায় দেখা গেলেও বারের নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি। আর আমরা আইনজীবীদের নির্বাচনে কোনো বহিরাগতদের দেখতে চাই না। আমরা আশা নির্বাচনের দিনও কোনো বহিরাগতরা আসবে না। আর আইনজীবীদের ভোট আইনজীবীরাই দিবে। আর যদি নির্বাচনের দিন কোনো বহিরাগতরা এসে কোনো সমস্যার সৃষ্টি করতে চায় তাহলে সকল আইনজীবীদের নিয়ে শক্তহাতে দমন করা হবে।
এসময়ে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এড. জসিম উদ্দিন বলেন, অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আমরা নির্বাচনী প্রচারণা করেছি। বিগত বছরও আমি সাধারন সম্পাদক প্রার্থী ছিলাম। কিন্তু নির্বাচনের দিন প্রতিপক্ষ প্যানেলের কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আমাকে আদালত প্রাঙ্গন থেকে সকাল নয়টা অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাছাড়াও ভোট গ্রহণের শেষ মুহূর্তে কিছু আইনজীবী বন্ধুদেরকে শারীরিকভাবে মারধরও করা হয়। যা ছিল অনাকাঙ্খিত এবং অপ্রত্যাশিত। এবারের নির্বাচরে এরকম ধরনের কোন ঘটনা ঘটুক তা আমরা চাই না।
তিনি বলেন, আমরা আইনজীবীরা বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর নাগরিক আমাদের মর্যাদা সর্বোচ্চ। আমরা সর্বদা মক্কেলদের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় লিপ্ত থাকে। কিন্তু আমরা যখন ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হোই এবং নিজেদের মর্যাদা অধিকারের কথা ভুলে যায়। সত্যি  দুঃখজনক এবং বেদনাময়। আসুন আমাদের আইনজীবিদের পেশাগত উদ্দেশ্য সাধন এবং নিজেদের মর্যাদা রক্ষায় বিগত তিন বছরের চুরির প্রতিবাদ স্বরূপ আনোয়ার- জসিম পরিষদকে সকল প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করি। আপনার আইনজীবীরা কারো রক্তচক্ষুকে ভয় পাবেন না। আমরা ভোট যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত আছি এবং থাকব। আপনার কোন ভয় পাবেন না আপনারা নির্ভয় ভোটের দিন আপনাদের অভিমত ব্যাখ্যা করবেন। আমরা নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত আছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুধুমাত্র আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে নিজেদের প্রচারণাই করেনি। আমরা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষেও প্রতিদিন প্রচারণা করেছি। কারণ আমরা আওয়ামীলীগ করি। আমাদের রক্তের সাথে মিশে আছে নৌকা। আর আমাদের বিপক্ষের প্যানেল তারা নাকি আওয়ামীলীগ করে একদিনও আইভীর নৌকার পক্ষে প্রচারনায় দেখা যায়নি। কারণ তারা একটি মহলের আওয়ামীলীগের হয়ে বারের রাজনীতি করে। মূলত রাজনীতি না দালালি করে থাকেন।

এই বিভাগের আরো খবর